দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের একাংশের সভাপতি,সাবেক গনবাহিনী প্রধান ও অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু আজ বলেছেন,বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজনীতির বাইরে রাখা হবে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে তার (খালেদা জিয়া) অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না।
শনিবার দশম সংসদের দ্বিতীয় বাজেট অধিবেশনে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ সব কথা বলেন। হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘খালেদা জিয়া যে রাজনীতি করছেন এই রাজনীতির দিন শেষ। বাংলাদেশে আর কোনদিন পাকিস্তান মার্কা, মুসলিম লীগ মার্কা, নেজামে ইসলাম মার্কা, সামরিক শাসন মার্কা, জামায়াতে ইসলাম মার্কা রাজনীতি চলবে না। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সম্মুখ যাত্রার যে মহাসড়কে টেনে তুলেছেন, সেই মহাসড়কে বেগম খালেদা জিয়ার কোনো জায়গা নেই। সুতরাং কোনদিন আর বাংলাদেশে রাজাকার সমর্থিত, সামরিক সমর্থিত কোনো সরকার আসবে না। শেখ হাসিনার বিকল্প খালেদা জিয়া কখনই নন।’
তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া আপনি নিজেই নিজেকে গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির রাজনীতি থেকে খরচের খাতায় নিয়ে গেছেন। এটা এখন আপনি না বুঝলেও আপনার দলের নেতাকর্মীরা বুঝতে পেরেছেন, জনগণ বুঝতে পেরেছে। এটাও বুঝে গেছে- আপনি যতই লম্পঝম্প করুন না কেন, আগুনে মানুষ পোড়ানোর অপরাধ থেকে, অন্তর্ঘাত নাশকতা থেকে আইনের আদালতে এবং জনতার আদালতে আপনি খালেদা জিয়া রেহাই পাবেন না। তেমনি যুদ্ধাপরাধীদেরও ফাঁসির দড়ি থেকে বাঁচাতে পারবেন না। আপনার পরিণতির জন্য আপনি প্রস্তুত হন। আপনি যতই কৌশল বদলান, মাথায় গণতন্ত্রের উড়না যতই পরার চেষ্টা করুন। মোদির সাথে যতবারই করমর্দন করেন, ইতিহাস আপনার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দিয়েছে। সেই ভবিষ্যৎটা হচ্ছে রাজনীতির বাইরেই থাকতে হবে। আপনাকে আদালতের বারান্দায় দাঁড়াতে হবে।’
ইনু বলেন, ‘২০১৯ সালে একটি নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে গণতান্ত্রিক শক্তির নির্বাচন হবে। প্রতিযোগিতার নির্বাচন হবে। কিন্তু ওই নির্বাচনে গণতন্ত্রের অচলমাল সচল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আগুনসন্ত্রাসী খালেদা জিয়ার ওই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধানের সমাজতন্ত্রসহ চার মূলনীতির ওপর দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন শেখ হাসিনা। সে জন্য তিনি রাষ্ট্রের সীমিত ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন। তাতেই জনগণ অনেক সুফল পেয়েছে। শুধু বাজার ব্যবস্থাপনাতে নয়, একদিকে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে অপরদিকে বৈষম্য কমাতে, দারিদ্র্য কমাতে, নারীর ক্ষমতায়ন করতে, শিশুর নিরাপত্তা দিতে, দুস্থ এবং গরিবদের বাঁচার চাহিদা পূরণে এবং সামগ্রিক সামাজিক নিরাপত্তার জাল বিস্তারে সংবিধানের মূল নির্দেশনার ভিত্তিতে সীমিত আকারে রাষ্ট্রকে ব্যবহার করেছেন এবং ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন। ফলে আমরা সুফল পেয়েছি। জাতির প্রয়োজনে, সমাজের প্রয়োজনে, জনগণের প্রয়োজনে রাষ্ট্রের এই ক্ষমতা প্রয়োগ আমাদের আরও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়াতে হবে।’
হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘ইদানীং দুয়েকজন মিনমিন করে বলার চেষ্টা করছেন যে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে স্পেস দিতে হবে, জায়গা দিতে হবে। গণতন্ত্রে গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে প্রতিযোগিতা হয়। তাদের জন্য স্পেস থাকে। কিন্তু জেনেটিক্যালি আনডেমক্রেটিক ফোর্সের কোনো জায়গা নেই। গণতন্ত্র মাপবেন কী দিয়ে? বাক-স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়ে? যারা সরকারের সমালোচনা করছেন তারাইতো প্রমাণ করছেন যে, তারা গণতান্ত্রিক এই অধিকারটা ভোগ করছেন। সুতরাং গণতন্ত্রের ঘাটতি এখানে নেই। বাংলাদেশ এই মুহূর্তে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণমাধ্যম এবং স্বাধীন মত প্রকাশের স্বর্ণযুগ আমরা পালন করছি।’
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের ঘাটতি নেই তবে রাজনীতিতে বিষফোঁড়া আছে। এই বিষফোঁড়া অশান্তি তৈরি করছে। ফোঁড়াগুলোকে ছোটখাট অস্ত্রপচারের মাধ্যমে আমাদের কেটে বাদ দিতে হবে। সেই কাজটা আমাদের সম্পন্ন করতে হবে। তার জন্য একটু কষ্ট হবে। এই কষ্ট আমাদের সহ্য করতে হবে। এখানে কোনো ছাড় আমরা দিতে পারি না। গণতন্ত্র বাঁচাতে গণতন্ত্রের এই বিষফোঁড়াগুলোকে ধ্বংস করে দিতে হবে।’
বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় আরও অংশ নেন পানিসম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস, বিএম মোজাম্মেল হক, এম এ আউয়াল, ইলিয়াস মোল্লা, হাবিবুর রহমান মোল্লা, শাহবুদ্দিন, বজলুল হক হারুন, আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাঈন, মকবুল হোসেন প্রমুখ।