জাহিদ এফ সরদার সাদীঃ প্রতিবারেই যখন এই স্বৈরাচারী অবৈধ হাসিনা সরকারের অবস্থা টালমাটাল হয়ে যায়, তখনই নতুন নতুন ইস্যু তৈরী করা হয় সহজ সরল জনগনকে বোকা বানানোর জন্য। বিডিআর গনহত্যা, সাগর রুনি হত্যাকান্ড , রানা প্লাজা দূর্ঘটনা , বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ড,রমনায় পহেলা বৈশাখে নারী নির্যাতন,অভিজিৎ হত্যাকান্ড সহ আরো অনেক ইস্যু সরকার তৈরী করেছে নিজেকে বাঁচানোর জন্য। প্রতিবারেই সুদক্ষ নাটকের মাধ্যমে বার বার আমাদের মত সাধারন দেশবাসীর মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে খেয়ে চলেছে এই বাকশালী সরকার।
আজকের খবর : কিশোর রাজন হত্যাকান্ডে খালেদা জিয়াই দায়ী- বলেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী হাসান মাহমুদ ।এই ভাবেই নাটকীয় ভাবে নিজেদের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেবার স্বভাব আওয়ামী লীগের চিরদিনের।আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
ছোট্ট শিশু রাজন, বয়স কইতবা হবে বড়জোর ১২/১৩। সামনে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। বাকী সব শিশুদের মতই তারও স্বপ্ন ছিল নতুন জামা গায়ে দিয়ে সেমাই-চিনি খাবে। কিন্তু সামান্য চুরির মিথ্যা অভিযোগে মধ্যযুগীয় কায়দায় তার উপর নির্যাতন চালিয়ে তাকে প্রাকাশ্য দিবালোকে হত্যা করা হলো।জানা গেছে হত্যাকারীদের সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী এবং প্রভাবশালী। ঘটনার পর মুহুর্তের মধ্যে এই পৈশাচিক হত্যাকান্ডের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লো ইন্টারনেটে। এই ঘটনার কথা জানতে পেরে সারা দেশ ফুসে উঠেছে ক্ষোভে ঘৃনায়। আমাদের প্রশ্ন হলো কারা এই ভয়ংকর ভিডিও টি নেটে আপলোড করলো ,কারাই বা তা ব্যপক ভাবে ছড়িয়ে দিলো???তবে কি এই ঘটনাটি সুপরিকল্পিত এবং কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে তা ঘটানো হয়েছে???
স্যোসাল মিডিয়ায় যখন সরকারের মন্ত্রীদের মুখোশ উন্মোচন করা হচ্ছিল ঠিক তখনই আমাদের সামনে চলে আসলো রাজন হত্যাকান্ড। মুহূর্তে আমরা ভুলে গেলাম ব্রাজিল থেকে আমদানি কৃত খায়া অনুপযোগী পঁচা গমের কথা। আমরা ভুলে গেলাম দুর্নীতিবাজ মন্ত্রীদের কথা। আমরা ভূলে গেলাম আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে মতবিরোধ এবং প্রচ্ছন্ন বিদ্রোহের ঈঙ্গিত।নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে সরকার বার বারই নতুন নতুন ইস্যু তৈরী করে পুরাতন ইস্যুগুলোকে মুছে দেয়া চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমি মনে করি রাজন হত্যাকান্ড বর্তমান অবৈধ অগতান্ত্রীক সরকারেরই কাজ, হাসিনা-জয়ের নির্দেশে তাদের গোয়েন্দা গংরা এই নাটকের রচয়িতা এবং নির্দেশক| কেননা শিশু রাজনের নির্যাতনের ভিডিও চিত্রটি স্যোসাল মিডিয়ায় এতো তাড়াতাড়ি এবং নির্বিঘ্নে আসলো কি ভাবে? হত্যাকান্ডের এক দিনের মাথায় নির্যাতন ও হত্যাকারী কামরুল ইসলাম সৌদী ভিসা সংগহ করে সৌদী আরব গেলো কিভাবে ???সরকার, গোয়েন্দা এবং ইমিগ্রেশনের প্রত্যক্ষ সহায়তা ছড়া এটা কোনভাবে সম্ভব না বলে আমরা মনে করি।
একমাত্র পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসাবে সরকারী তত্বাবধানে এই কথিত রাজন হত্যাকারী কামরুল ইসলামের দেশ ছাড়ার সব রকমের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিলো আগে থেকে। কিন্তু বিধি বাম, দেশপ্রমিক সৌদী প্রবাসী ভাইদের কৃতিত্বে এই খুনী এখন সৌদী পুলিশর হেফাজতে রয়েছে। ইতিমধ্যেই সৌদী আরবস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস অতি আগ্রহে এবং সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে খূনী কামরুলকে ছাড়িয়ে নিতে দেন-দরবার শুরু করেছে। এই খূনীকে বিশেষ স্বার্থে বাংলাদেশ সরকারের হেফাজতে নিয়ে আসল তথ্য গোপন করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে আমি মনে করি।সৌদী পুলিশসূত্রে জানা গেছে,যেহেতু কামরুলের বিরুদ্ধে সৌদীতে সংঘটিত কোন অপরাধের অভিযোগ নেই তাই ২ দিনের মধ্যে তাকে বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠানো হবে।সরকারের তত্বাবধানে এই কামরুলকে আনা হলে এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করতে না দিলে আসল সত্য আমরা জানবোনা কোনদিনই।
কিন্তু বাংলাদেশের জনগন এতো বোকা নয়।অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারকে এখন জনগন আর মোটেও বিশ্বাস করে না।
লেখকঃ বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক বৈদেশিক উপদেষ্টা এবং বিএনপির বিশেষ দূত।