ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ এই সরকারের আমলে মায়ের পেটে শিশুও আজ নিরাপদ নয় বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি বলেন, “দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ-বেপরোয়া যে মায়ের পেটে শিশুও আজ নিরাপদ নয়। মায়ের গর্ভ বিদীর্ণকারী শাসকদলীয় অস্ত্রবাজরা মাগুরাসহ সারাদেশ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এ অবস্থার আশু অবসান প্রয়োজন।”
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, “শুক্রবার রাত ১২টার পর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ঐতিহাসিক ল্যান্ড বাউন্ডারি এগ্রিমেন্ট ভারতের জাতীয় পার্লামেন্টে র্যাটিফাই হওয়ায় ১৬২টি ছিটমহল বিলুপ্ত হয়ে দুদেশের পতাকা উড্ডীন হয়েছে সেখানে। ৫২ হাজার মানুষের ৬৮ বছরের কান্নাভেজা মুক্তির আনন্দে-আমরাও আনন্দিত।”
রিপন বলেন, “বাংলাদেশের নতুন এসব নাগরিকরা আমাদের মূল ধারায় মিশে যাবেন, এটি ঐতিহাসিক ঘটনা। ১৯৭৪ সালে এসব ছিটমহল নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিল-ভারত বহু বছর পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে তা অনুমোদন করায়-আমরা তাকে, তার সরকারকে ও ভারতের অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে আগেই অভিনন্দিত করেছিলাম।”
তিনি বলেন, “সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আগামী জাতীয় নির্বাচন শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই হবে বলে জানিয়ে জাতিকে হতাশ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি এই শঙ্কা জাগিয়ে তুলেছেন যে, দেশে আবারো একটি ৫ জানুয়ারির মতো ভোটারবিহীন পাঁচ শতাংশের সরকার গঠিত হবে।”
রিপন বলেন, “আইনী বাধ্যবাধকতার নির্বাচন বলে দ্রুতই পরবর্তীতে সকল দলের অংশগ্রহণে আবার একটি নির্বাচন হবে বলে তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন-তারা সে অবস্থান থেকে সরে আসায় দেশে শাসকদলীয় বিনা-ভোটের এমপিদের, শাসকদলীয় ক্যাডারদের দাপুটে বেপরোয়া আচরণে আজ দেশবাসী অতিষ্ঠ। তাদের হাতে শিক্ষক, সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তারা প্রতি পদে পর্যন্ত পদে পদে নিগৃহিত-লাঞ্ছিত হচ্ছেন-যা অতি সম্প্রতি জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনেও উঠে এসেছে।”
তিনি বলেন, “সরকার এ সংকট থেকে বাঁচতে পারে দেশের বিরোধী দলগুলোকে তাদের সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে বাধা না দিয়ে দ্রুত একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মূলত সংবিধান থেকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা রহিত করে শাসকদল সর্বস্তরের জনগণের আকাঙ্খাকে গলাটিপে হত্যা করে যে বিষবৃক্ষ রোপন করেছে -সেটার বিষে আজ সরকার জরজর। যার ফলশ্রুতিতে দেশে এখন কোনো আইনের শাসন নেই, সুশাসন নেই-ফলশ্রুতিতে কর্ত্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থার যাঁতাকলে জাতি আজ নিষ্পিষ্ট। এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণের মতো একটি জাতীয় নির্বাচনের কথা বলেছেন-যাতে করে দেশের জনগণ তাদের পছন্দ অনুযায়ী একটি সরকার পেতে পারেন।”
ড. আসাদুজ্জামান বলেন, “বিএনপি ভবিষ্যতে সরকার গঠন করলে-অবশ্যই কোনোভাবেই প্রতিহিংসার রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেবে না। পরাজিতদেরও সুপরামর্শ নিয়ে-সবাইকে নিয়ে দেশ পরিচালনা করবে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ক্ষমতাসীনদের অধীনে দেশে কোনো সুষ্ঠু-অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের আর কোনো পথ খোলা নেই।”
তিনি বলেন, “সেজন্য আমরা আবারো সরকারের প্রতি আহবান জানাই-দ্রুত একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এখনই করণীয় নির্ধারণে সবার সঙ্গে আলোচনার একটি প্রক্রিয়া শুরু করা হোক।
গত পরশু ড. কামাল হোসেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও কতিপয় বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ গণতন্ত্রের প্রশ্নে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন-তার সঙ্গে আমাদের দল সহমত পোষণ করে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যেকোনো উদ্যোগের প্রতি বিএনপির সমর্থন রয়েছে ও ভবিষ্যতেও থাকবে।”
রিপন বলেন, “আমরা লক্ষ্য করেছি, শাসকদলের ক্ষমতা হারানো কিছু ব্যক্তি বিএনপি ও তার নেতৃত্ব নিয়ে কটূক্তি করে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিজেদের পত্রিকার পাতায় বাঁচিয়ে রাখার নির্লজ্জ প্রয়াস চালাচ্ছেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও তার সহযোগীদের কাছে আমাদের প্রশ্নে-তাদের আজ দুর্গতির জন্য নিজেদের দুর্নীতি-কালো বেড়ালে রুপান্তরিত হওয়াও দায়ী।”
তিনি বলেন, “শুক্রবার রাত ১২টার পর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ঐতিহাসিক ল্যান্ড বাউন্ডারি এগ্রিমেন্ট জাতীয় পার্লামেন্টে র্যাটিফাই হওয়ায় ১৬২টি ছিটমহল বিলুপ্ত হয়ে দুদেশের পতাকা উড্ডীন হয়েছে সেখানে। ৫২ হাজার মানুষের ৬৮ বছরের কান্নাভেজা মুক্তির আনন্দে-আমরাও আনন্দিত। বাংলাদেশের নতুন এসব নাগরিকবৃন্দ আমাদের মূল ধারায় মিশে যাবেন, এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। ১৯৭৪ সালে এসব ছিটমহল নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিল-ভারত বহু বছর পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে তা অনুমোদন করায়-আমরা তাকে, তার সরকারকে ও ভারতের অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে আগেই অভিনন্দিত করেছিলাম।”
রিপন বলেন, “বাংলাদেশের নতুন ৫২ হাজার নাগরিকবৃন্দ যাতে সংবিধান অনুযায়ী সমতার দৃষ্টিতে সকল সুযোগ সুবিধা পান-তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আমরা আহবান জানাই। বাংলাদেশের ভূখণ্ডে মিশে যাওয়া বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর ওইসব অঞ্চলের মানুষদের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সকল উদ্যোগ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আমরা আহবান জানাই।”