ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের দলের তরফ থেকে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বারবার ব্যক্ত করা হয়েছে যে, বিএনপি কখনো সন্ত্রাসের রাজনীতি করেনি এবং সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয়ও দেয়নি এবং ভবিষ্যতেও কখনো তা করবেনা । এটা সবারই জানা যে, বিএনপি দেশের অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে মুক্ত করার লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ পথে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে।’
দলের মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন স্বাক্ষরিত বিবৃতিটি শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমে সরবরাহ করা হয়।
বিবৃতিতে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে একে একে কারাগারে অন্তরীণ করে দলকে নেতৃত্বশূন্য করার সরকারি হীন ষড়যন্ত্রেরও প্রতিবাদ করেন খালেদা জিয়া।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আন্দোলন চলাকালে সরকারি এজেন্টরা, শাসক দলের লোকরাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে তার দায় বিরোধী দলের কাঁধে চাপানোর অপপ্রয়াস নিয়েছিল তা কারোরই অজানা নেই। বিগত আন্দোলনে সন্ত্রাসী ঘটনাগুলোর সঙ্গে শাসক দলীয় ক্যাডারদের জড়িত থাকার ঘটনা তখনকার বহু পত্র-পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়েছিল।’
‘অথচ বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের জড়িয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে শাসক গোষ্ঠী প্রতিনিয়ত বিরোধী দলের চরিত্র হননের হীন ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিরোধী নেতাকর্মীদের হয়রানি করেই চলছে। সরকারের এ ধরনের ফ্যাসিবাদী অগণতান্ত্রিক ভূমিকা ও দুর্বৃত্তায়ন এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দেশের মানুষের এখন দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে’ বলেন বিএনপি প্রধান।
তিনি বলেন, ‘‘সরকারকে আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, তারা কোনোভাবেই জনগণের নির্বাচিত সরকার নন। দুঃখের বিষয় পাঁচ বছর ক্ষমতায় বহাল থাকার আকাঙ্খা ব্যক্ত করে ‘জনগণই যে সকল ক্ষমতার উৎস’ সে সত্য কথাটি সরকার ক্রমাগত অস্বীকার করে চলেছে। কারণ এ সরকার জানে, তাদের সঙ্গে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ নেই। তাই তাদের অনৈতিক ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে যেয়ে আজ তারা মরিয়া হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি দমন-নিপীড়নের পথ বেছে নিয়েছে।” ‘আমি সরকারকে আরও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, দমন-নিপীড়ন ও গ্রেফতার করে পৃথিবীতে কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে পারেনি’, যোগ করেন বেগম খালেদা জিয়া।
বেগম খালেদা জিয়া, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মান্নান, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি মেহেদী আহমেদ রুমী, পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও জয়পুরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি মোজাহার আলী প্রধান, সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও হবিগঞ্জ পৌর মেয়র জি কে গউস, সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হোসেন খান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চান, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, ঝালকাঠি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নুপুর, বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহীন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট আবুল কালাম, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজীব আহসানসহ আটক সকল নেতাকর্মীর অবিলম্বে মুক্তি দাবী করেন।
আর এর মাধ্যমেই বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আর বাধা না দিয়ে, দমন-নিপীড়নের পথ থেকে সরে এসে মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে ‘অবরুদ্ধ গণতন্ত্রের বদ্ধ কপাট’ খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।