দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু আমদানিতে ভারত হতাশ করলেও নিরাশ করেনি মিয়ানমার। ইতিমধ্যে দেশটি থেকে পাঁচ হাজারের বেশি পশু আমদানি করা হয়েছে।
ঈদের পূর্বে আরও ১০ হাজারেরও বেশি পশু আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কক্সবাজারের শাহপরীর দ্বীপ করিডোর হয়ে আসা গরু, মহিষ ও ছাগল থেকে সরকারও পাচ্ছে রাজস্ব। সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ হওয়ার পর ব্যবসায়ীরা মিয়ানমারের দিকেই ঝুঁকে পড়েছেন। ফলে মিয়ানমার থেকে গত কয়েকদিন ধরে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ করিডোর হয়ে আসছে গবাদী পশু।
টেকনাফ শুল্ক স্টেশনের রাজস্ক কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করিডোর হয়ে চার হাজার ১৯৪টি গরু, মহিষ ও ছাগল আনা হয়েছে। এসব পশু থেকে রাজস্ব পাওয়া গেছে ২০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এর পূর্বে গত বছর মিয়ানমার থেকে পশু আনা হয় ২৫ হাজারের মতো।
করিডোর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম জানান, সেপ্টেম্বরের চার দিনে আরও এক হাজারের মত পশু আমদানি করা হয়েছে। ঈদের আগে আরও ১০ হাজার পশু আমদানির লক্ষ্য রয়েছে। আর মিয়ানমার থেকে আসা পশুর মাংস গড়ে প্রতি মণ ১৬ হাজার টাকা হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
গরু ব্যবসায়ী আবু সৈয়দ জানান, কোরবানি ঈদ উপলক্ষে মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি ক্রমাগত বাড়ছে। এসব পশুর মূল্য ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে। চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছানো হচ্ছে এসব পশু। মিয়ানমার থেকে আনা গরু আরেক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাশেম জানান, গত ১ সেপ্টেম্বর ৪শ’, ২ সেপ্টেম্বর ২শ’ এবং ৩ সেপ্টেম্বর ১৫০টি গরু মিয়ানমার থেকে আমদানি করা হয়েছে। একইসঙ্গে অর্ধশতাধিক মহিষও আমদানি করা হয়েছে।
করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে প্রতিদিন পশু আসছে। ঈদে চাহিদা থাকায় আমদানি আরও বাড়তে পারে। এদিকে সরকারি হিসাবে এবার কোরবানিতে ৪০ লাখের বেশি গরু লাগার কথা নয়।
যদিও গত ৩১ আগস্ট বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছিলেন, বর্তমানে কোরবানি উপযোগী ৩০ লাখ গরু-মহিষ ও ৬৯ লাখ ছাগলের মজুদ রয়েছে। এটা চাহিদার চেয়েও অনেক বেশি।
হিন্দু মৌলবাদীদের দাবির মুখে ভারতের অনেক রাজ্যে গরু জবাই অঘোষিতভাবে নিষিদ্ধ হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশিদেরও গোমাংস ভক্ষণ থেকে বিরত রাখার প্রয়াসে গরু রপ্তানি বন্ধ করতে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করেছে বিজেপি সরকার। আর এ কারণেই সারাদেশে মাংসের দাম এক লাফে ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।