ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নিজ বাসার শিশ গৃহকর্মীকে অমানবিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগে জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার শাহাদাত হোসেন ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে মিরপুর থানা পুলিশ। এর আগে তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা হয়েছে। মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ভূঁইয়া মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
গৃহকর্মী মাহফুজা আক্তার হ্যাপিকে (১১) পুলিশ চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
ওসি জানান, রোববার দুপুরের দিকে বাসার গৃহকর্মী কাউকে ‘না বলে’ বাসা থেকে চলে গেছে- মর্মে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন। জিডি নম্বর ৩৬৮। জিডিতে গৃহকর্মীকে নিখোঁজ দেখান শাহাদাত।
সন্ধ্যার দিকে পল্লবী থানাধীন কালশী এলাকা থেকে ওই গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি আরো জানান, উদ্ধারের পর হ্যাপি পুলিশকে জানায়, শাহাদাত ও তার স্ত্রী মিলে তাকে মারধর করেছে। আরো মারবে-এমন আশঙ্কায় সে কাউকে না বলে পালিয়েছে। পরে হ্যাপিকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যায়। মিরপুর থানার এসআই আবদুস সালাম জানান, ক্রিকেটার শাহাদাত ও তার স্ত্রী গৃহকর্মীকে মারধর করেছেন এবং উল্টো একটি জিডি করেছেন।
এখন যেহেতু তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তাই তাদের ধরতে পুলিশ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তিনি আরো জানান, মারধর করায় ওই গৃহকর্মীর দুই চোখ ফুলে গেছে।শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পেসার শাহাদাত এবং তার স্ত্রী পলাতক রয়েছেন।
পেসার শাহাদাত হোসেন কেলেঙ্কারির নতুন মোড়ঃ
গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হওয়ার আগে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে বাদী সাংবাদিক খন্দকার মোজাম্মেল হকের কাছে সমঝোতা প্রস্তাব দিয়েছিলেন শাহাদাত। জানিয়েছেন স্বয়ং বাদী। এসব জানিয়েছেন মামলাকারী পার্লামেন্ট ওয়াচের নির্বাহী সম্পাদক ও সাংবাদিক খন্দকার মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন,‘মেয়েটিকে থানায় নিয়ে যাওয়ার আগে শাহাদাতের পরিবারের পক্ষ থেকে দু’জন মহিলা ও একজন পুরুষ আমার সঙ্গে দেখা করেনে। তারা পারিবারিকভাবে মীমাংসার প্রস্তাব দেন। কিন্তু মেয়েটির অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, আমি সমঝোতার প্রস্তাব গ্রহণ করিনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘মোটামুটি তখন সন্ধ্যা ৭টা। মিরপুরে-১১ এ সাংবাদিকদের আবাসিক এলাকায় আমার বাসা। এমন সময় স্থানীয় কয়েকজন যুবক ফোন দিয়ে মেয়েটিকে নির্যাতনের বিষয়ে আমাকে জানায়। ঘটনা জানাজানি হলে ওই রাতেই আমার ফোন নম্বর সংগ্রহ করে শাহাদাতের পক্ষে একজন দেখা করতে চান। পরে রাতে অপরিচিত দু’জন মহিলা ও একজন পুরুষ সাংবাদিকদের আবাসিক এলাকায় আসেন। তারা আমাকে থানা পুলিশে না গিয়ে পারিবারিকভাবে সমঝোতার প্রস্তাব দেন। আমি তাদের প্রস্তাবটি গ্রহণ করিনি।’
বাদী জানান, পরে থানা পুলিশ এসে মেয়েটিকে উদ্ধার করে প্রথমে পল্লবী থানা এবং পরবর্তীতে মিরপুর মডেল থানায় নিয়ে যায়। চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে মেয়েটি ঢামেকের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন রয়েছে।