ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সংবিধানের পাতায় গণতন্ত্র থাকলেও দেশে এখন কোনো গনতন্ত্র নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত,জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
তিনি বলেন, দখলবাজ ও টেন্ডারবাজদের দখলে চলে গেছে দেশ। সুশাসন নেই, সবার কাছে বন্দুক-পিস্তল।
সোমবার দুপুর ২টায় খুলনা শহরের শহীদ হাদিস পার্কে খুলনা জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানান এরশাদ।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের মূল্যবোধ নষ্ট হয়ে গেছে। শিশুরা ধর্ষিত ও নির্যাতিত হচ্ছে। বিচারকার্য বিলম্ব হওয়ায় অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। এসব অপরাধীরা শাসক দলের সঙ্গে জড়িত। ‘আমি দলীয়করণে বিশ্বাস করি না, আইনের শাসনে বিশ্বাস করি। আমি বিচারকদের কাজে হস্তক্ষেপ করিনি’ বলে দাবি করে সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, বেসিক ব্যাংক ও শেয়ারবাজারের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, সে টাকা উদ্ধার হয়নি। এখনও হলমার্ক কেলেঙ্কারির হোতাদের গ্রেফতার করা হয়নি। রাষ্ট্রীয় অর্থপাচার হলে কেউ তার প্রতিবাদ করলে অর্থমন্ত্রী রসিকতা করেন।
‘জাপাকে প্রতিষ্ঠিত করতে আবার গ্রামাঞ্চলে ছুটছি’ জানিয়ে, মানুষের মুখে আবার হাসি ফুটাতে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচিত করার আহবান জানান তিনি।
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে এরশাদ বলেন, ক্ষমতায় থেকে তারা অন্ধ হয়ে গেছে। তারা অন্যায় দেখতে পায় না।
জেলা শাখার সভাপতি পদে একমাত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধুকে পুনরায় মনোনীত করেন এরশাদ। সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে খুলনা জেলা শাখার আহবায়ক ও এরশাদের প্রেস সচিব সুনীল শুভ রায় সভাপতিত্ব করেন।
উদ্বোধনী পর্বে জাপা মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় পার্টি আত্মপ্রকাশ করে। এরশাদ তার সফল বাস্তবায়ন করেন। জাতীয় পার্টিকে সংগঠিত করার জন্য এ সম্মেলনের আয়োজন। জাতীয় পার্টি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে চায়। এরশাদ ৬৮ হাজার গ্রামে শান্তি ফিরিয়ে এনেছিলেন। তার ৯ বছরের উন্নয়নের রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেনি। বিভিন্ন সময় উন্নয়নের নামে গ্রেনেড সন্ত্রাস ও টেন্ডারবাজি চলেছে। দেশবাসী দু’নেত্রীর হাত থেকে মুক্তি চায়।
সম্মেলনে পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ৮২ সালে ক্ষমতা গ্রহণের দু’বছর পর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নির্বাচন দিতে চেয়েছিলেন। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ৮৬ সালে জাতীয় নির্বাচন হয়। ৯ বছর জাতীয় পার্টি দেশবাসীকে সেবা করেছে।
উদ্বোধনী পর্বে কয়রা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা শফিকুল ইসলাম ঢালী আগামী নির্বাচনে মহাজোটের কাছে খুলনা-৬ আসনে জাপার প্রার্থীকে মনোনয়নের দাবি জানান। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রসিডিয়ামের সদস্য, কৃষক পার্টির সভাপতি সাহিদুর রহমান, প্রেসিডিয়ামের সদস্য তাজ রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য যুব সংহতির সভাপতি রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য শেখ আবুল হোসেন। বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক শফিকুল ইসলাম মধু, শ্রমিক পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন জাহাঙ্গীর, সাবেক সংসদ সদস্য একেএম মোক্তার হোসেন, জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাদিউজ্জামান, মহানগরী শাখার সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মুজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য জহুর আলী মোড়ল, মৎসজীবী পার্টির সভাপতি সোমনাথ দে, ডুমুরিয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ জমাদ্দার, পাইকগাছা উপজেলা শাখার সভাপতি মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর, কয়রা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা শফিকুল ইসলাম ঢালী, দাকোপ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আজগর হোসেন সাব্বির, বটিয়াঘাটা উপজেলা শাখার সভাপতি মো. মোতওয়াল্লি, রূপসা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব খান টিপু, দিঘলিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ।