ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ তবে কি নিজেদের আসন পাকাপোক্ত করতে পরিকল্পিত ভাবে বাংলাদেশকে জঙ্গী রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা করছে হাসিনা সরকার ? একারনেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃটেনের গার্ডিয়ান পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তার দেশে জঙ্গিবাদ দমনে বৃটিশ সরকারকে আরও বেশি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি ? বাংলাদেশে বৃটিশ জিহাদিদের ইন্ধনে কিভাবে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটছে, সেরকম একটি প্রতিবেদনের অংশ হিসেবে গার্ডিয়ান তার এই সাক্ষাৎকার নেয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূর্ব লন্ডনে জামায়াতে ইলসামীর প্রতি ইঙ্গিত করেছেন শেখ হাসিনা বলেছেন, মৌলবাদীরা বাংলাদেশে তৎপরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে এবং কিছু কিছু লোক তাদের মদত দেয়ার চেষ্টা করছে। তবে শেখ হাসিনা এক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, পূর্ব লন্ডনে এই দলটির প্রভাব রয়েছে সেখানে তারা অর্থ সংগ্রহ করে তারপর সেই অর্থ বাংলাদেশে পাঠায়।
বৃটিশ পত্রিকা গার্ডিয়ান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছে বাংলাদেশে বৃটিশ জিহাদিদের ইন্ধনে কিভাবে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটছে, সেরকম একটি প্রতিবেদনের অংশ হিসেবে।
এই সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বেশ স্পষ্টভাবেই বলেছেন, বৃটেন থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এই জঙ্গিবাদের হুমকি দমনে বৃটিশ সরকারকে আরও বেশি পদক্ষেপ নিতে হবে।
তবে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বৃটিশ জিহাদি বলতে যাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কিছুটা তফাৎ আছে।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে কিভাবে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশিদের মধ্যে জঙ্গি মতাদর্শের বিস্তার ঘটেছে, প্রায় তিরিশ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জিহাদি সিরিয়ায় লড়াই করতে গেছেন, কিভাবে এরা বাংলাদেশেও জঙ্গি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছে, সেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন, পূর্ব লন্ডনে জামায়াতে ইসলামীর তৎপরতার প্রতি।
তিনি বলেছেন, পূর্ব লন্ডনে তাদের অনেক প্রভাব, এটা সত্যি, সেখানে তারা অর্থ সংগ্রহ করে তারপর সেই অর্থ বাংলাদেশে পাঠায়। তিনি আরও বলেছেন, মৌলবাদীরা বাংলাদেশে তৎপরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে এবং কিছু কিছু লোক তাদের মদত দেয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। এই জঙ্গিবাদ দমনে শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে সতর্ক করে দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ গার্ডিয়ান পত্রিকাকে শেখ হাসিনা বলেন, ব্রিটিশ জঙ্গিরা বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের বিস্তারে ইন্ধন জোগাচ্ছে৷ জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে উদ্বিগ্ন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরাও৷
শেখ হাসিনার মন্তব্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়াঃ
সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সম্বলিত প্রতিবেদনটি শেয়ার করছেন৷ কেউ আবার তার সঙ্গে প্রতিক্রিয়াও জুড়ে দিচ্ছেন৷
যেমন সাজ্জাদ রাসেল বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে সতর্ক করে দেয়ার খবরটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘হ্যাঁ, এই হচ্ছে শেখ হাসিনা৷” নুরুল ইসলাম হাসিব খবরটি শেয়ারের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের একটি অংশ আলাদাভাবে উল্লেখ করেন৷ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘পূর্ব লন্ডনে জামাতের শক্ত প্রভাব রয়েছে৷ এটি সত্য৷ তারা অর্থ জোগাড় করছে৷ তারা টাকা পাঠাচ্ছে৷”
ক্রিস মুস গার্ডিয়ানের সংবাদটি টুইট করে লিখেছেন, ‘‘জিহাদি রপ্তানির মাধ্যমে ব্রিটেন শুধুমাত্র সিরিয়া আর ইরাককেই নয়, বাংলাদেশকেও অস্থির করছে৷ এটা বন্ধ হতে হবে৷”
জঙ্গিবাদ দমনে ব্রিটেনের কাছে সহায়তা চাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি একটি প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন মো. জামির ওমান৷ ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘‘…মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার প্রশ্ন, এই সাত বছরে তো আপনারা জঙ্গিবাদকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছেন বলে আপনারা ক্রেডিট নেন৷ কথায় কথায় বলেন দেশকে জঙ্গিবাদমুক্ত করেছেন আপনারা৷ তাহলে কি দাঁড়ায় আপনারা যা বলতেছেন তা মিথ্যা? এখনও কি জঙ্গিবাদ পরিপূর্ণ বাংলাদেশ??? আল্লাহ জানে কখন আবার অ্যামেরিকা আর ব্রিটিশ মিলে চালকবিহীন বিমান দিয়ে বোমা ছোড়ে আমার মাতৃভূমিতে, ক্ষত-বিক্ষত করে আমাদের জীবনকে৷”
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন৷ সেই সময় গার্ডিয়ানে এমন প্রতিবেদন কেনো প্রকাশিত হলো বলে ফেসবুকে প্রশ্ন করেছেন লিটন মাহমুদ
৷ শুধু তাই নয়, প্রায় একই সময়ে ওয়াশিংটন টাইমসে প্রকাশিত এক কলামে সজীব ওয়াজেদ জয় আল-কায়েদার সঙ্গে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্ক থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷
একই বিষয়ে নিয়ে মন্তব্য করেছেন জনৈক নুরুন নবী৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রায় আওয়ামী সরকারে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে৷ ভোটারবিহীন নির্বাচনের কারণে আ: লীগের মধ্যে ক্ষমতা হারানোর একটা ভয় কাজ করে৷
আর যখনই এই ভয়টা বেশি কাজ করে তখনই বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র প্রমাণের চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে উঠে সরকার আর বহির্বিশ্বকে বোঝানোর চেষ্টা করে দেখ আমাদেরকে ক্ষমতায় না রাখলে জঙ্গিতে সয়লাব হয়ে যাবে সারাদেশ৷”
নুরুন নবী মনে করেন, এ সব করে হয়ত সরকার সাময়িক সুবিধা পাচ্ছে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি দেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর সেই হিসাবও করা দরকার।