ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ রাজধানীর আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার জায়গায় অবৈধভাবে নির্মিত আবাসন কোম্পানি কনকর্ডের ১৮তলা ভবন এতিমখানার পক্ষে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের যুগ্ম-বেঞ্চ চার দফা নির্দেশনা দিয়ে বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আল আমিন সরকার। এতিমখানার সুপারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অনিক আর হক।
পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের জানান, আদালত এতিমখানা রক্ষায় চার দফা নির্দেশনা দিয়েছেন।
সেগুলো হলো- আজিমপুর এতিমখানার সম্পত্তি সংরক্ষণ করতে হবে। এতিমখানার সম্পত্তি হস্তান্তর সম্পর্কে ২০১৩ সালের ২২ জুলাইয়ের দলিল এবং ২০১৪ সালের ১৩ এপ্রিলের আম মোক্তারনামা দলিল বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ সেগুলো শুরু থেকেই বাতিল। আর এতিমখানার জায়গায় কনকর্ডের তৈরি ১৮তলা ভবন এতিমখানার পক্ষে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে এবং কনকর্ডকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে স্থাপনা ও সম্পত্তি এতিমখানাকে বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। ব্যর্থতায় সরকারকে সম্পত্তি বুঝিয়ে দেয়া এবং এতিমখানার প্রয়োজনে ডেভেলপ করার নির্দেশ দেয়া হয়।
মনজিল মোরসেদ বলেন, ১৯০৯ সালে ঢাকার নবাব ‘সলিমুল্লাহ এতিমখানা’ স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে সরকারের কাছ থেকে আজিমপুর সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন সময় জমি লিজ নিয়ে পরিচালনা করে আসছে। এরপর ২০০৩ সালের ২২ জুলাই এতিমখানার সভাপতি শামসুন্নাহার ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট জি এ খান আহসান উল্লাহ এতিমখানার দুই বিঘা জমি এক্তিয়ার বহির্ভুত ভাবে ডেভেলপার কোম্পানি কনকর্ডের কাছে হস্তান্তর করেন।
এতিমখানার সম্পত্তি অবৈধ হস্তান্তর সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর তা সংযুক্ত করে চারজন ছাত্রের পক্ষে রিট আবেদন দায়ের করেন মনজিল মোরসেদ।
পরবর্তীতে রিট আবেদনে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যাণ্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) পক্ষভুক্ত হয়। রিট আবেদনে বলা হয়, এতিমখানার সম্পত্তি সরকারে কাছ থেকে লিজ নেয়া।
লিজ চুক্তিতে এতিমখানার সম্প্রসারণের জন্য বিনামূল্যে দেয়া হয় এবং শর্ত ছিল, প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো কাজে জমি ব্যবহার করা যাবে না। তা সত্ত্বেও এতিমখানার সভাপতি ও সেক্রেটারি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে আর্থিক লাভবান হয়ে এতিমখানার সম্পত্তি কনকর্ড গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন।