দৈনিক প্রথম বাংলদেশ প্রতিবেদনঃ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদকে গ্রেফতারের পর দফায় দফায় রিমান্ডের নামে অমানুষিক পুলিশী নির্যাতনে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী ফেরদৌসী মাহমুদ।
তিনি অভিযোগ করেছেন, শওকত মাহমুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদালতের আদেশ আমলে নিচ্ছে না কারা কর্তৃপক্ষ। কারাবিধি মোতাবেক দেশের একজন সন্মানিত নাগরিক হিসেবে ডিভিশন পাওয়ার সুযোগ থাকলেও কারা কর্তৃপক্ষ তাকে সাধারণ হাজতি হিসেবে রেখেছে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে। এর ফলে শওকত মাহমুদের শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবনতি ঘটছে। পুলিশ ও কারা কর্তৃপক্ষের নিষ্ঠুর আচরণে হৃদরোগ, কিডনী ও ডায়াবেটিসের রোগী শওকত মাহমুদের জীবন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে। প্রিয় পাঠক,লক্ষ্য করুন উপরের ছবিটি গেফতারের পরপরের আর নীচের ছবিটি গতকালের, আপনারাই বলু মাত্র একমাসের ব্যবধানে জনাব শওকত মাহমুদের স্বাস্থ্যের চরম অবনতি লক্ষ্যনীয়।
গত ১৮ আগস্ট রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির সামনে থেকে শওকত মাহমুদকে গ্রেফতারের পর এ পর্যন্ত তাকে ২১টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন থানার ২০টি ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ১টি রয়েছে। ঢাকার ১২টি মামলায় পুলিশ মোট ১২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত রমনা ও লালবাগ থানার দু’টি মামলায় তিন দিন করে, মতিঝিল, পল্টন, খিলগাঁও, মুগদা থানার অপর নয়টি মামলায় এক দিন করে নয় দিনসহ মোট ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। ইতোমধ্যে ডিবি অফিসসহ বিভিন্ন থানায় তিনি ১৪ দিন রিমান্ডে ছিলেন। রামপুরা থানার এক দিনের মঞ্জুরকৃত রিমান্ড এখনও অপেক্ষমান আছে। পল্টন থানার নতুন একটি মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। ২১ সেপ্টেম্বর রোববার তার শুনানীর দিন ধার্য্য রয়েছে।
শওকত মাহমুদের আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম ফরিদ জানান, আরো ১১টি মামলায় তাকে জড়ানোর প্রক্রিয়ার কথা তারা শুনেছেন। তবে সেগুলোর রেকর্ড তার হাতে এখনও পৌঁছেনি। সেগুলোসহ মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়াবে ৩২টিতে।
শওকত মাহমুদের স্ত্রী ফেরদৌসী মাহমুদ জানান, তারা আশা করেছিলেন ঈদের আগেই তিনি জামিনে মুক্তি পাবেন। কিন্তু একের পর এক নতুন মামলায় জড়িয়ে তার উপর নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গরমের মধ্যে প্রিজন ভ্যানে আনা নেয়া করায় শওকত মাহমুদের বুকে কফ জমে গেছে। তার মত গুরুতর হার্টের রোগীকে পুলিশ কোর্টের ১১তলায় হাঁটিয়ে তুলেছে। লিফটের জন্যও অপেক্ষা করেনি। বাসার খাবার ছাড়া অন্য খাবার খাওয়ায় তার পেটে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শুকিয়ে কঙ্কাল হয়ে যাচ্ছেন দিন দিন।
ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে সাংবাদিক শওকত মাহমুদের পরিবারে বিরাজ করছে চরম হতাশা। বড় ছেলে নাফিজ মাহমুদ শুভ, ছোট ছেলে সুলতান মাহমুদ সিয়াম, পুত্রবধূ তাজরিন আক্তার আখি, বড় মেয়ে মেহতা মামুন রাংতা, ছোট মেয়ে সেফায়েত সারওয়ার চৌধুরী রাশনা, দুই জামাতা আবদুল্লাহ আল মামুন ও ইব্রাহিমসহ পরিবারের সদস্যরা শওকত মাহমুদের জীবন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।