ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা নিয়ে রাতে দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
স্ত্রী রাহাত আরা সহ মির্জা ফখরুল গতরাত ১০টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ার লাইন্সের ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর থেকে হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নেমে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ আপনারা জানেন যে আমি অসুস্থ। সিঙ্গাপুরের পরে আমি কর্ণেল ইউনিভারসিটি হসপিটালে চিকিৎসা নিয়েছি। আমার চিকিৎসা এখন চলছে। আবার ৬ মাস পরে যেতে বলা হয়েছে। এখন কিছুটা ভালো বোধ করছি।’’
‘‘ আমি আশা করি সুস্থ হয়ে আবার দেশের জন্য কাজ করতে পারবো।’’ বিএনপির রাজনীতি সম্পর্কে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন,‘‘ দেশে গণতন্ত্রের সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে। এখন দেশে একটা রাজনৈতিক সংকট বিরাজ করছে। এ্ থেকে উত্তরণে একমাত্র পথ হচ্ছে গণতান্ত্রিক উপায়ে লক্ষে্ পৌঁছানো। গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য বিএনপি জনগনকে সঙ্গে নিয়ে সংগ্রাম করছে এবং করবে।’’
দল পূর্ণগঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ আমি আশা করি পূর্ণ গঠন প্রক্রিয়া সফল হবে। আমাদের নেতৃবৃন্দ এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন, তারা সাফল্যের সঙ্গে সফল করতে সক্ষম হবেন।’’
রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে কবে সস্পৃক্ত হবেন প্রশ্ন করা হলে ফখরুল বলেন, ‘‘ আমি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব জানান, মঙ্গলবার বিকালে তিনি ঈদ করতে ঠাকুরগাঁওয়ে যাবেন। হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের টার্মিনালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, আবদুল কাইয়ুম, কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আসাদুজ্জামান রিপন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করীম শাহিন প্রমূখ নেতৃবৃন্দ ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে অভ্যর্থনা জানান।
মস্তিস্কের ক্যারোটিড আর্টারিতে দুইটি ব্লকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে কারাবন্দি মির্জা ফখরুলকে গত ১৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট জামিন দেয়। মুক্তি লাভের পর ২৭ জুলাই চিকিৎসার জন্য প্রথমে সিঙ্গাপুর এবং গত ১১ আগস্ট নিউইয়র্ক যান ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। ৬ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখান তিনি। ফখরুলের মস্তিস্কের ক্যারোটিভ আর্টারিতে দুটি প্রায় শতভাগ ব্লক হয়েছে। তবে রক্ত সঞ্চালন মোটামুটি অব্যাহত থাকায় এবং ধকল সামলানোর মতো শারীরিক অবস্থা না থাকায় ফখরুলের অস্ত্রোপচার না করার পক্ষে মত দেন চিকিৎসকরা।
এই পরামর্শ নিয়ে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিউইয়র্ক থেকে গত শনিবার সিঙ্গাপুরে আসেন। জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া সরকার বিরোধী তিন মাসের আন্দোলনের প্রথমেই গত ৬ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গন থেকে পুলিশ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে গ্রেপ্তার করে। তাকে নাশকতার কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ছয় মাস কারাভোগ শেষে গত ১৪ জুলাই তিনি জামিনে মুক্তি পান।জানা যায় আটক অবস্থায় পুলিশী নির্যাতন এবং সু-চিকিৎসার অভাবে তার শারিরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটলে উচ্চ আদালতের নির্দেশে তাঁকে বিদেশে নিয়ে যান তার পরিবার।