ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ স্থল সীমান্ত চুক্তির আওতায় বাংলাদেশকে মুহুরীর চর হস্তান্তরের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছে ত্রিপুরা রাজ্যের সরকার।
তারা বলছে, ২০১১ সালের প্রোটোকল চুক্তিতে যতটা জমি বাংলাদেশকে দেওয়ার কথা, তার থেকেও বেশী জমি দেওয়া হচ্ছে – যেটা বিলোনিয়া শহরের অংশ। ত্রিপুরা চাইছে ২০১১-র চুক্তি অনুযায়ী নতুন করে সীমানা নির্ধারণ করা হোক। জমি নিয়ে পাকিস্তান আমল থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত নিয়মিত দুই তরফে গুলি বিনিময় হয়েছে, তাই বিলোনিয়ার মানুষ শান্তিতে থাকার জন্য জমি হস্তান্তর মেনে নিতে রাজী।
ত্রিপুরার রাজস্ব মন্ত্রী বাদল চৌধুরী বিবিসি-কে বলেন, “মুহুরি নদীর মাঝবরাবর আন্তর্জাতিক সীমানা নির্ধারণ করার ব্যাপারে ২০১১ সালের প্রোটোকল চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল দুই দেশ। এর ফলে ভারতকে প্রায় ৩৬ একর জমি বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। ওই জমি দিয়ে দিতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই কিন্তু চুক্তির বাইরে গিয়ে আরও প্রায় ১২-১৩ একর জমি বাংলাদেশকে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।“ এর ফলে সীমান্ত সংলগ্ন বিলোনিয়া শহরের এলাকা থেকেও জমি চলে যাবে। সীমানা নতুন করে নির্ধারণ করার জন্য তারা ভারত সরকারকে একাধিকবার চিঠি লিখেছে।
সমস্যার সূত্রপাত ২০১১ সালের প্রোটোকল চুক্তি সই হওয়ার পরে ভারত-বাংলাদেশের যে যৌথ জরিপ হয়েছিল, তখন থেকেই। স্থানীয় রাজস্ব আধিকারিক বা রাজ্য সরকারকে না জানিয়েই দুই দেশের জরিপ কর্মীরা ৩৬ একর ছাড়া আরও ১২-১৩ একর বেশী জমি বাংলাদেশের দিকে চিহ্নিত করে দেন।
ত্রিপুরার রাজস্বমন্ত্রীর দাবী, “সার্ভে অফ ইন্ডিয়াও মেনে নিয়েছিল যে ওই বাড়তি জমি দেওয়া জরিপ দলের ভুল। কিন্তু সেটা সংশোধন না করেই দুই দেশ স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের চুক্তি করে ফেলল।“ ত্রিপুরা আরও দাবী জানিয়েছে যে বাংলাদেশের কাছে যে জমি চলে যাবে, তার জন্য জমি-মালিকদের ক্ষতিপূরণ আর চুক্তি অনুযায়ী মুহুরি নদীর পাড় বাঁধানোর কাজে ৪০ কোটি টাকা তাড়াতাড়ি পাঠাক ভারত সরকার।
এছাড়াও বিলোনিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহর ঘেঁষে যেহেতু সীমান্ত হবে, তাই ওই অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য বাড়তি বি এস এফ মোতায়েন করা দরকার বলেও ত্রিপুরা সরকার দাবী করেছে।