DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

বাংলাদেশ এখন চালাচ্ছে লেডি হিটলারঃ বেগম খালেদা জিয়া

1nov1কাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘লেডি হিটলার’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, “এক রাজতন্ত্র বাংলাদেশে কায়েম হয়েছে এখন। রাজতন্ত্রের জন্য আছেন একজন লেডি হিটলার। কারণ তিনি যা হুকুম দিচ্ছেন, নির্দেশ দিচ্ছেন; তার সৈন্য-সামন্তরা যারা আছে, অর্থাৎ প্রশাসন, তারা সেভাবে কাজ করছেন। সবকিছু তার কথামতো চলে।”

1novরোববার লন্ডনের রিভারব্যাংক পার্ক হোটেল প্লাজায় যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক নাগরিক সভায় এসব কথা বলেন বাংলাদেশের সাবেক ৩ বারের এই প্রধানমন্ত্রী।

চিকিৎসার জন্য গত ১৬ সেপ্টেম্বর লন্ডনে আসার পর এটাই ছিল তাঁর প্রথম প্রকাশ্য সভা। এসময় তার বড় ছেলে তারেক রহমান ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

দর্শক সারিতে পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে পরাজিত বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালকে দেখা গেছে।

বাংলাদেশে এখন আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ আজকে মোটেও ভালো নেই, মোটেও শান্তিতে নেই। প্রতিনিয়ত জুলুম-অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।”

দেশে এখন গণতন্ত্র নেই দাবি করে তিনি বলেন, “সেজন্য একের পর এসব ঘটনা ঘটছে। আর সবকিছুতে বিএনপিকে দোষারোপ করা হচ্ছে।” বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থার জন্য আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর বিবিসিকে দেওয়া শেখ হাসিনার এক সাক্ষাৎকার তুলে ধরে খালেদা বলেন, “তিনি বলেছিলেন, ‘আমি বাংলাদেশে যাবো রাজনীতি করার জন্য নয়, প্রতিশোধ নিতে’। তিনি দেশ গড়তে আসেননি। তিনি এসেছেন দেশ ধ্বংস করতে।

” আওয়ামী লীগ ‘প্রতিশোধ প্রতিহিংসার রাজনীতি’ করে দাবি করে তিনি বলেন, এই প্রতিশোধ প্রতিহিংসার রাজনীতি বাদ দিতে হবে। জঙ্গিবাদের উত্থানের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকেই দায়ী করে খালেদা জিয়া বলেন, “জঙ্গি জঙ্গি হাসিনাই বলেছে, কিসের জন্য? বিদেশিদের ভয় দেখানোর জন্য। বোঝাতে চাইছে আমরা যদি চলে যাই, বিএনপি এলে জঙ্গিদের উত্থান হবে। …কিন্তু দেখেন, জঙ্গিদের উত্থান কিন্তু আওয়ামী লীগের সময় হয়েছে। তারা একটা জঙ্গিকে ধরেনি। আমরা এসে সব জঙ্গিকে ধরেছি।”

1nov2শেখ হাসিনা আজীবন ক্ষমতায় থাকতে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে অভিযোগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গত সাত বছরে বিএনপির তিন হাজার নেতাকর্মীকে খুন, এক হাজার ২০০ জনকে গুম, এক হাজার ১২ জনকে ক্রসফায়ার দেয়া হয়েছে। কতো মানুষকে বেনজীর (র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ) মেরেছে তার হিসাব নেই।”

বিএনপি ভাঙার জন্যও সরকার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া। বলেন, “বহু চেষ্টা করেছে, কিন্তু পারেনি। বিএনপিকে ভাঙা যাবে না। সত্যি কথাই বলি, এরশাদও তেমন করেনি। ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দীনও কম করেনি।”

আওয়ামী লীগকে হটাতে সব দল-মতের মানুষকে নিয়ে কাজ করার উপর জোর দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “জাতীয় ঐক্য গড়তে হবে।”

খালেদা জিয়া বলেন, ক্ষমতায় গেলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, বিচারের বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় করবেন। বর্তমানে বাংলাদেশে বেসামরিক প্রশাসনকে পুরোপুরি দলীয়করণ করে অনেক যোগ্য, মেধাবী কর্মকর্তাকে দায়িত্বের বাইরে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেত্রী।

চিকিৎসার জন্য রোজার ঈদের আগে লন্ডনে গিয়ে ছেলে তারেক ও তার স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে আছেন তিনি। তবে এখন দেশে ফিরতে চান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, “বহুদিন পর পরিবারের সঙ্গে দেখা এবং তারা ছাড়তে চায় না। আরও থাকতে বলে। কিন্তু আপনারা প্রত্যেকে জানেন দেশের কী অবস্থা! আমার দেশে যাওয়া প্রয়োজন। সেজন্য আমাকে দেশে যেতে হবে।”

1nov3ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করে বিএনপিকে চাইছে – এমন মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, দশম সংসদ নির্বাচনের আগের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেটি প্রমাণ হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ঢাকায় সেভাবে আন্দোলন গড়ে তোলা না গেলেও সারাদেশে যে আন্দোলন হয়েছে তা স্বাধীনতার সময়ও হয়নি। তবে, ঢাকায় আন্দোলন গড়ে তোলা যায়নি সরকারের ‘নির্যাতনের’ কারণে। এ সময় তিনি বর্তমান সরকারকে হটাতে সব দল-মতের মানুষকে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বানও জানান।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!