ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে জামায়াত আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর আপিলের শুনানিকালে হানাদার এবং গনহত্যাকারী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর যুদ্ধাপরাধের বিচার নাকচ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা ।
বুধবার আপিল শুনানির নবম দিনে মাওলানা নিজামীর পক্ষে তার আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন।
যুক্তিতর্কের শেষ পর্যায়ে যুদ্ধারাধের জন্য পাকিস্তানীদের বিচারের প্রশ্ন ওঠে । যুদ্ধাপরাধের জন্য মাওলানা নিজামীকে দায়ী করার প্রশ্নে প্রধান বিচারপতি ‘টোকিও ট্রায়াল’ দেখতে বলেন ।
তখন নিজামীর প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, “টোকিও ট্রায়াল দেখাবেন না। আপনারা তাহলে ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনার বিচার করছেন না কেন ? পাকিস্তান তো সরাসরি জড়িত ছিল।”
জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আজ তো পাকিস্তান এটা অস্বীকার করছে।” এর আগে গত ৩০ নভেম্বর পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, “একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে কোনো অপরাধ করেনি বা নৃশংসতা চালায়নি ।”
এর দুদিনের পর প্রধান বিচারপতি পাকিস্তানের অস্বীকৃতির উপর ভিত্তি করেই যুদ্ধাপরাধের জন্য তাদের বিচার এড়িয়ে গেলেন । প্রধান বিচারপতি পাকিস্তানি আর্মির বিচারের বিষয়টি নাকচ করে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি আর্মির সহযোগী বলে অভিযুক্ত নিজামীর বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে এমনভাবে মুক্তিযুদ্ধকালীন পরিস্থিতি উপস্থাপন করেন যাতে স্পষ্টতই মনে হয় মুক্তিযুদ্ধের দায়দায়িত্ব পাকিস্তানি আর্মির চেয়ে এদেশের কথিত সহযোগীদের উপরই বেশি বর্তায় ।
প্রধান বিচারপতি বলেন, “তারা (নিজামীরা) যদি পাকিস্তানিদের সমর্থন না করত, তাহলে সিন্ধু, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান থেকে এসে তারা এ দেশে নয় মাস থাকতে পারত না । তারা তিন মাস থাকত ।” অথচ বাস্তবতা ছিল, ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট থেকে বর্তমান বাংলাদেশ পাকিস্তানের অংশ ছিল । এখানে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন সামরিক বাহিনী, আধা সামরিক বাহিনী ইপিআর, পুলিশ-আনসার ও সিভিল প্রশাসন সবই ছিল । তাদের সঙ্গেই ৭০ এর নির্বাচন পরবর্তী অচলাবস্থার সময় বাড়তি সেনা যোগ হয়েছিল ।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্য রাতে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী অতর্কিতভাবে ঘুমন্ত বাংলাদেশিদের উপর হামলে পড়ে । এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটায় । নির্বিচারে ছাত্র শিক্ষকদের হত্যা করে। এই হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী সমর্থক শিক্ষকও ছিলেন। এর একজন ২৫ মার্চ রাতে শহীদ মিনার এলাকার শিক্ষক কোয়ার্টারে নিহত পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এ এন এম মনিরুজ্জামান। তার সঙ্গে হত্যার শিকার হন তার ভাই এডভোকেট শামসুজ্জামান, ছেলে আক্রামুজ্জামান ও ভাগিনা নাসিরুল ওহাব । জামায়াত সংশ্লিষ্টতার জন্য মনিরুজ্জামান ও তার স্বজনরা শহীদ তালিকায়ও অন্তর্ভুক্ত হননি । ২৫ মার্চের ওই আক্রমণ নির্বিচারে সকল দলমত-ধর্ম-শ্রেণির উপর পরিচালিত হয়। এরপর হতবিহ্বল বাংলাদেশিদের একাংশ ভারতে আশ্রয় নেয়, আরেক অংশ সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়, আরেক অংশ পাকিস্তানী বাহিনীকে সহযোগিতা করে এবং বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ স্বাধীনতার সমর্থন করলেও নীরবতা পালন করে ।
পাকিস্তান আর্মি বাংলাদেশের সব মানুষকে নির্বিচারে পাকিস্তান বিরোধী ও ভারতীয় দালাল আখ্যা দিয়ে তরুণ হিন্দু-মুসলমানদের গণহারে হত্যা করতে শুরু করে। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল পিডিপি প্রধান নূরুল আমীনের নেতৃত্বে ঢাকার ১২ জন বিশিষ্ট রাজনীতিক সামরিক আইন প্রশাসক লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কারো বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ না করার আহ্বান জানান জানান।
এক্ষেত্রে নিরীহদের শনাক্ত করতে ওই দিনই ১৪০ সদস্য বিশিষ্ট ‘ঢাকা নাগরিক কমিটি’ গঠিত হয়। এই কমিটিকে শান্তি কমিটি বলা হয়। যদিও শান্তি কমিটিকে পাকিস্তানী আর্মির অপরাধের সহযোগী বলে পরবর্তীতে আখ্যা দেওয়া হয়। তা সত্য ধরে নিলেও ১০ এপ্রিল এই কমিটি গঠনের আগে ব্যাপক সংখ্যক বাংলাদেশিকে হত্যার ঘটনায় কোনো বাংলাদেশির সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়না।
এদিকে আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপিত তথ্য থেকে জানা গেছে পাকিস্তানী আর্মির সহযোগী বাহিনী আল বদর মে মাসে গঠিত হয়। ১৯৭১ সালের ১ জুন জেনারেল টিক্কা খান পূর্ব পাকিস্তান রাজাকার অর্ডিন্যান্স-১৯৭১ জারি করে সরকারি আনসার বাহিনীকে রাজাকার বাহিনীতে রূপান্তরিত করেন। পরে এই বাহিনীতে বাংলাদেশি আরো তরুণদের নিয়োগ করা শুরু হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধের বর্ণনা, বীরাঙ্গনাদের ভাষ্য ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনযুায়ী ১৯৭১ সালে প্রধানতঃ হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো সরাসরি পাকিস্তানি আর্মিরাই সংঘটিত করেছে।
এসকল অপরাধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি সহযোগীদের বিরুদ্ধে পথ দেখানো, ক্ষতিগ্রস্তদের চিনিয়ে দেওয়ার তথ্য জানানোর অভিযোগই প্রধান। তাদের মধ্যে খুব কম সংখ্যকই হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত ছিল। কিন্তু চার দশক পরে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে পাকিস্তানি আর্মির একজন সদস্যকেও বিচারের মুখোমুখি বা অভিযুক্ত না করে আইনগতভাবে এমন একটি ভাষ্য তৈরি করা হয়েছে যাতে স্পষ্ট হয় যে যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির জন্য পাকিস্তান নয় এদেশের মানুষই দায়ী।
পাকিস্তানি আর্মিদের রেহাই দিতে শুধু পশ্চিম পাকিস্তানের বাসিন্দাদের কথাই বিবেচনা করা হয়নি। একাত্তরে পাকিস্তানের হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন এমন শতাধিক বাংলাদেশিকেও বিচারের বাইরে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মেজর জেনারেল আমজাদ খান চৌধুরীও (অব:) ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুর ক্যান্টনমেন্টের বিএম-২৩ ব্রিগেডের মেজর আমজাদ খান চৌধুরীর নেতৃত্বে বাঙালি সেনা-মুক্তিযোদ্ধা-সাধারণ মানুষকে হত্যার ঘটনা ঘটে। তিনি হত্যা-ধর্ষণসহ হিন্দুদের ঘরবাড়ি লুট করার কাজেও জড়িত ছিলেন।
কিন্তু মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর প্রায় পাঁচ বছর তিনি বেঁচে ছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল বিচারের কোনো উদ্যোগই নেয়নি। গত ৮ জুলাই তিনি মারা গেলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিবৃতি দিয়ে শোক প্রকাশ করেন।
আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সদস্য হলেও তাকে সামরিক মর্যাদায় বনানীর সামরিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। আমজাদ খানের শেষকৃত্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক সেনা প্রধান মাহবুবুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
সিনহা-মাহবুব যুক্তিতর্কঃ
শুনানিতে মাওলানা নিজামীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির যুক্তিতর্কের বিবরণ তুলে ধরা হলো- মাওলা নিজামীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে খন্দকার মাহবুব আদালতে বলেন, “আমি (নিজামী) ১৯৭১ সালে ছাত্র ছিলাম।
১৯৭১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের পর ছাত্রসংঘের আর কোনো দায়িত্বে ছিলাম না। তাই আমি কাউকে হত্যা, গণহত্যার জন্য বক্তব্য দিইনি।” প্রধান বিচারপতি বলেন, “আপনারা মুজাহিদের পূর্ণাঙ্গ রায় দেখেননি? ওখানে বলা আছে কার দায়দায়িত্ব কতটুকু।” এ সময় এস কে সিনহা আরো বলেন, “তারা (নিজামীরা) যদি পাকিস্তানিদের সমর্থন না করত, তাহলে সিন্ধু, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান থেকে এসে তারা এ দেশে নয় মাস থাকতে পারত না। তারা তিন মাস থাকত। ১৯৭১ সালে দেশে আইনশৃঙ্খলা ছিল না। তারা ব্যক্তিগতভাবে ইয়ে করেছে..। মানে সহযোগিতা করেছে মিলিটারিদের। এরা জড়িত ছিল।”
প্রধান বিচারপতির ওই বক্তব্যের পর খন্দকার মাহবুব বলেন, “মতিউর রহমান নিজামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিখিল পাকিস্তানের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনা ছিল এর পর।” এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, “বিভিন্ন সংবাদে রয়েছে উনি নেতা ছিলেন। ওনার বক্তব্য প্রচার হয়েছে। যুদ্ধের শেষ দিকে অনেক নর-নারী হত্যা করা হয়েছে। এটা থেকে প্রমাণ হচ্ছে না উনি (নিজামী) লিডার ছিলেন?”
খন্দকার মাহবুব বলেন, “নিজামীকে যে অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে সে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তিনি ইসলামী ছাত্রসংঘ নিখিল পাকিস্তানের সভাপতি হিসেবে, তার দায়িত্ব গ্রহণের আগে এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনার পর। অর্থাৎ বুদ্ধিজীবী হত্যার সময় নিজামী দায়িত্বে ছিলেন না।”
তখন প্রধান বিচারপতি নিজামীর দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, “একাত্তর সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল না। এরাই (নিজামীরা) তাদের সহযোগিতা করেছেন, মিলিটারিদের।” জবাবে খন্দকার মাহবুব বলেন, “৩০ সেপ্টেম্বরের পর উনি নেতা ছিলেন না।” এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, “বিভিন্ন সংবাদে রয়েছে উনি নেতা ছিলেন। ওনার বক্তব্য প্রচার হয়েছে। যুদ্ধের শেষ দিকে অনেক নর-নারী হত্যা করা হয়েছে। এটা থেকে প্রমাণ হচ্ছে না উনি (নিজামী) লিডার ছিলেন?”
প্রধান বিচারপতির ওই বক্তব্যের পর খন্দকার মাহবুব বলেন, “মতিউর রহমান নিজামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিখিল পাকিস্তানের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনা ছিল এর পর।”
এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, “যুদ্ধের শেষে যদি একথা বলেন, তাহলে কি প্রমাণ হচ্ছে না যে, নিজামী লিডার ছিলেন? আপনি টোকিও ট্রায়াল দেখেন।” তখন খন্দকার মাহবুব বলেন, “টোকিও ট্রায়াল দেখাবেন না। আপনারা তাহলে ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনার বিচার করছেন না কেন? পাকিস্তান তো জড়িত ছিল।” জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আজ তো পাকিস্তান এটা অস্বীকার করছে।” খন্দকার মাহবুব বলেন, “ঘটনা ঘটেছে, এটা সত্য। কিন্তু নিজামী ওই সময় আলবদর বাহিনীর সুপিরিয়র (সর্বোচ্চ) ক্ষমতায় ছিলেন না। দেশের পুলিশ বাহিনী পাক আর্মিদের পথ দেখিয়েছে। কোনো আর্মি মুভ করত না যদি পুলিশ লিড না দিত।”
খন্দকার মাহবুব বলেন, “নিজামীর মতো ইয়াংরা (তরুণ) পথ দেখাল আর আর্মিরা সেখানে গেল—এটা ইমপসিবল (অসম্ভব)।” প্রধান বিচারপতি বলেন, “নিজামী একটা বাহিনীর প্রধান ছিলেন না; ছাত্রসংঘের লিডার ছিলেন।” এ সময় তিনি প্রতিবেদন পড়ে বলেন, ‘‘এ প্রতিবেদনে লেখা আছে, ‘মাদানী বাহিনীর মতো জেহাদে ঝাঁপিয়ে পড়ো।’ এভাবে রক্ত ঝরল, আর বাকি থাকল কী।” ওই সময় খন্দকার মাহবুব বলেন, “এটা এখন ফাঁসির দেশ হয়ে গেছে।” জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, “এটা বলবেন না মাহবুব, সৌদি, চীনে কী হচ্ছে? আমরা একটি দিলে হৈ চৈ পড়ে যায়। সৌদিতে যা হচ্ছে আমাদের দেশে তার এক পার্সেন্টও হচ্ছে না। ওদের টাকা আছে, স্ট্যান্ড আছে।”
পরে খন্দকার মাহবুব বলেন, “আমরা মনে করি, ১৯৭১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বদর বাহিনীতে তিনি (নিজামী) ছিলেন না। সাক্ষীরা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে বক্তব্য দিয়েছেন, আদালতে সাক্ষী দেওয়ার সময় বক্তব্যের সঙ্গে কোনো মিল নেই। প্রসিকিউশন সেফ হোমে দিনের পর দিন সাক্ষীদের মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তৈরি করেছেন। তাই হত্যা, খুন, অপহরণের সঙ্গে নিজামী জড়িত ছিলেন না। প্রসিকিউশন অপরাধ প্রমাণ করতে পারেনি।”
খন্দকার মাহবুব সর্বশেষ বলেন, “শেষ সময়ে বলব আদালত যদি মনে করে উনি (নিজামী) দোষী, তাহলে তার বয়স ও শারীরিক অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করতে পারে।”