DMCA.com Protection Status
title="৭

পৌর নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিএনপি ৮০ ভাগের বেশি ভোট পাবেঃ খালেদা জিয়া

kzbfক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সবাইকে ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ যতই জরিপ করুক লাভ হবে না। মানুষ ধানের শীষে ভোট দেওয়ার জন্য বসে আছে। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ৮০ ভাগের বেশি ভোট পেয়ে ধানের শীষ বিজয়ী হবে। আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হবে।

রোববার দুপুরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজে’র (একাংশ) দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল ও নির্বাচন-২০১৫ অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবি করেন।

kzbf1অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেগম খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়া বলেন, ‘মানুষ ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য বসে আছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে ৮০ ভাগের বেশি ভোট পেয়ে ধানের শীষ মার্কা বিজয়ী হবে। কারণ যখনই নির্বাচন এসেছে বাংলাদেশের মানুষ ধানের শীষকে বারবার জিতিয়েছে। তাইতো আজকে তাদের ভয়। বিএনপি যাতে নির্বাচনে না আসতে পারে তার জন্য যত কৌশল আছে প্রয়োগ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে আসবে এটা তাদের (আওয়ামীলীগ) চিন্তায় ছিলনা। কিন্তু নির্বাচনে এসে প্রমান করেছে বিএনপি নির্বাচন করতে চায় এবং নিরপেক্ষ এবং অবাধ নির্বাচন বিশ্বাস করে, একদলীয় নির্বাচন নয়। আমি সকল ভোটারকে বলবো ভোট কেন্দ্রে যেতে এবং নিজের ভোট প্রয়োগ করতে। ইনশাল্লাহ ধানের শীষের বিজয় হবেই হবেই।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আগের যত নির্বাচন হয়েছে সব নির্বাচনে সাংবাদিকরা ভোট কেন্দ্রের ভেতরে গেছে। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে এবারে সাংবাদিকরা নাকি ভোট কেন্দ্রে থাকতে পারবে না। যদি সেটাই হয় তাহলে চুরি করার জন্য সাংবাদিকদের থাকতে দেয়া হচ্ছেনা। কিন্তু অবশ্যই সাংবাদিকদের ভেতরে থাকতে দিতে হবে।’

kzbf2বিএনপির এই নেতা আরও অভিযোগ করেন, এই সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে গণমাধ্যমকে অবরুদ্ধ করে ফেলেছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর সেটি আরও ভয়াবহ হয়েছে। বিভিন্ন কালাকানুন করে সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে আমার দেশ, ইসলামিক টেলিভিশন, চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একুশে টিভির চেয়ারম্যানকে বন্দী রেখে কৌশলে চ্যানেলটি দখল করে নিয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে। এর প্রতিবাদ করায় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদকে জেলে বন্দী করা হয়েছে।

তিনি আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, ও একুশে টিভির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, সাংবাদিক কনক সরয়ারের মুক্তি চান।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যকরে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী মার্কা নির্বাচনের মুখোশ আপনারা আগেই খুলে দিয়েছেন। আপনারা যারা ভোট কেন্দ্রের ভেতরে যাবেন তাদের কাছে আমার আহ্বান থাকবে সবকিছু তুলে ধরবেন। দ্বিতীয়বারের মত প্রমান হবে, আওয়ামীলীগের আমলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়না, হাসিনা এবং রকিব মার্কা নির্বাচনকে জনগণ সমর্থন করে না। তারা যে নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারে না সেটা প্রমান করে দিবেন আপনারা।’

বর্তমান সরকার গনতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এ সরকারের আমলে সুশাসন নির্বাসনে গেছে। সমাজের কোথাও ন্যায় বিচার নেই। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। হামলা-মামলা দিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।’

এই সরকারকে জঙ্গি সরকার মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, সরকারের অপশাসনের কথা বললেই গণমাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। টক শো’র উপর নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এ সরকারের আমলে ২৪ জন সাংবাদিক নিহত এবং ২ হাজার সাংবাদিক আহত হয়েছে। আইসিটি আইন এবং অনলাইন গনমাধ্যমের নীতিমালা করছে যাতে করে যারা সরকারের বিরোধী তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে।’

প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'আপনাদের সঙ্গে আমাদের বিরোধ নেই। আগামীতে যে-ই ক্ষমতায় আসবে আপনাদের কেউ কোন ক্ষতি করবেনা, আপনাদের চাকরি যাবে না।  বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে আপনাদের চাকরি যাবে-এটা সম্পুর্ন মিথ্যে কথা, আওয়ামীলীগের বানানো কথা। ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা এসব কথা বলে’।

খালেদা জিয়ার ভাষায়, ‘হাসিনা-রকিবের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। এর আগে হাসিনা আর রকিব মার্কা নির্বাচন জনগণ গ্রহণ করেনি।’

তিনি বলেন, বর্তমান এক নিকৃষ্ট স্বৈরশাসক জগদ্দল পাথরের মত বাংলাদেশের মানুষের ঘাড়ে চেপে বসেছে। স্বাধীনতার চেতনা যে স্বাধীন গণমাধ্যমের মধ্যে নিহিত সেই গণমাধ্যমকে এই সরকার গলাটিপে হত্যা করেছে।

খালেদা জিয়া বলেন, ক্ষমতাসীনেরা তাঁদের বলয়ের বাইরে কোনো রাজনৈতিক শক্তি বা ভিন্ন মতের অস্তিত্ব রাখতে চায় না। এ প্রসঙ্গে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ফখরুলকে ছয়বার কারাগারে নেওয়া হয়েছে। ৮৬টি মামলা দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনা হিটলারের ফ্যাসিবাদী শাসনের কথা মনে করিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, সরকার বিরোধী অনলাইন তৎপরতা বন্ধ করে দেয়ার জন্যই অনলাইন পত্রিকার নিবন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে।

খালেদা জিয়া বলেন, সুশাসন, মৌলিক অধিকার, মানুষের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা আজ ভূলুণ্ঠিত। খালেদা জিয়া বলেন, সমাজের কোথাও ন্যায় বিচার নেই। দেশের প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। দেশে গুম, খুন, হামলা, মামলা কায়েম করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেছেন বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম আব্দুল্লাহ। অনান্যেরর মধে উপস্থিত ছিলেন -বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ, জমির উদ্দিন সরকার, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, বিএনপি নেতা ব্যাস্টিার শাহজাহান ওমর, আব্দুল মান্নান, মাহাবুব উদ্দিন খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, নিতাই চন্দ্র রায় প্রমুখ। এছাড়া বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমীন গাজী, ডিইউজে’র সভাপতি কবি আব্দুল হাই সিকদার, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, বিএফইউজে’র মহাসচিব এম এ আজিজ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ডিইউজে’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক কাদের গনি প্রমুখ এতে উপস্থিত ছিলেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!