ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) আটটি দেশ থেকে ১১টি ক্রয় প্রস্তাবের বিপরীতে ১০ লাখ ৮৫ হাজার টন বিভিন্ন ধরণের জ্বালানি তেল আমদানি করবে। আর এ জন্য সরকারের মোট ব্যয় হবে প্রায় ৪ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা।
কিন্তু বিষ্ময়কর ভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমানে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম ৩০ ডলারের কাছাকাছি হলেও আগের সম্পাদিত চুক্তির কারণ দেখিয়ে বাজারদরের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন বেশি দামে জ্বালানি তেল আমদানি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতি ব্যারেলের দাম পড়বে ৬১ দশমিক ৩১ ডলার।এসব চুক্তিপত্রে ক্রেতার অধিকার সংরক্ষিত হয়নি বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে সরকারের বিরুদ্ধে।
জুলাই থেকে ডিসেম্বর প্রান্তিকের জন্য জ্বালানি তেল আমদানির ১১টি ক্রয় প্রস্তাব বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উঠবে বলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। যেসব দেশ থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে সেগুলো হচ্ছে চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া ও তুরস্ক। তবে বেশির ভাগ জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে চীন, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইন থেকে।
সূত্র জানায়, মোট ১০ লাখ ৮৫ হাজার টনের মধ্যে ১০ লাখ টনই বেশি দামে, অর্থাৎ প্রতি ব্যারেল ৬১ দশমিক ৩১ ডলারে আমদানি করা হবে। এছাড়া এর সঙ্গে অতিরিক্ত পরিবহন ব্যয়, সার্ভিস চার্জ, লাইটারেজ ভাড়া, আমদানি শুল্ক যোগ হবে। এতে বিশ্ববাজারে বিদ্যমান দামের চেয়ে বেশি দাম পরিশোধ করতে হবে।
সূত্র জানায়, গত সোমবারের তথ্য অনুযায়ী মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) দখলকৃত অঞ্চল থেকে অতিরিক্ত জ্বালানি তেল সরবরাহের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম আরেক দফা কমেছে।
এর প্রভাব আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেলের বাজারেও পড়েছে। ক্রয় প্রস্তাব অনুযায়ী তুরস্ক থেকে ৩০ হাজার টন ডিজেল আমদানি করা হবে। এর প্রতি টনের প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ দশমিক ৫০ ডলার। অথচ চুক্তি করা হয়েছিল তখন প্রতি ব্যারেলের দাম ছিল ৬১ ডলার।
তবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ওঠানামা এবং ডলারের সঙ্গে স্থানীয় মুদ্রার বিনিময়ের হারের তারতম্যের কারণে আমদানি ব্যয় কিছুটা কমবেশি হতে পারে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে প্রতি ৬ মাসে জ্বালানি তেলের চাহিদা ২৫ থেকে ২৬ মিলিয়ন টন। এটা আগামী ছয় মাসে বেড়ে ৫০ থেকে ৫২ মিলিয়ন টনে দাঁড়াতে পারে।