ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ হাসিনা সরকারের অন্যতম অংশীদার এবং সাজানো সংসদের অনুগত বিরোধী দল সাবেক স্বৈরশাসক হোসেন মোঃ এরশাদের জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে জমজমাট নাটকিয়তার আপাতঃ অবসান হয়েছে বলে মনে হচ্ছে ।
জানা যায় ,দলের চেয়ারম্যান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব, নতুন মহাসচিব ইত্যাদি নিয়ে জটিলতা উদ্ভূত হওয়ার পর বৈঠকে বসে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টির সংসদীয় কমিটি, তা মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে পুরোপুরি দুরকম বলেছেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম।
সংসদের সরকার অনুগত বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে প্রথমে তাজুল সাংবাদিকদের বলেন, সংসদীয় দল রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব করার এরশাদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে। আপাতত জিয়াউদ্দীন বাবলুই মহাসচিব থাকছেন।
কিন্তু এর মাত্র ঘণ্টাখানেক পরই এরশাদকে পাশে রেখে এই তাজুল ইসলামই বলেন, স্যারের (এরশাদের) সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সব এমপিরা এরশাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। অথচ সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে এমন কথাই বলেছিলেন বিরোধী দলের হুইপ শওকত চৌধুরী। তখন তিনি বলেছিলেন, সংসদীয় কমিটির সভায় সব এমপিরা এরশাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
৫টার পর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে আবার সংসদের ভেতরের দিকে চলে যান তাজুল ইসলাম। ঘণ্টাখানেক পর তিনি বেরিয়ে আসেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও এ বি এম রুহুল আমিনের সঙ্গে।
এসময় সাংবাদিকরা এরশাদের কাছ জানতে চান সংসদীয় কমিটির বৈঠকের বিষয়ে। এরশাদ বলেন, এ বিষয়ে তাজুল কথা বলবে। এরপর তাজুল বলেন তার আগের বক্তব্যের সম্পূর্ন উল্টো কথা।
এসময় তিনি বলেন, স্যারের (এরশাদের) সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। সব এমপিরা এরশাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। এরশাদের সিদ্ধান্ত বলতে তিনি, পার্টির কো-চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের নাম ঘোষণা ও বাবলুকে হটিয়ে রুহুল আমিন হাওলাদারের নাম ঘোষণার কথা বুঝিয়েছেন।
জাতীয় পার্টির সব এমপিদের এরশাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার কথা জানানোন পর তাজুল এরশাদের কাছে জানতে চান, ‘স্যার, আপনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা কি পাল্টাবে?’ জবাবে এরশাদ তাজুলকে বলেন, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্তে অটল আছি।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টায় বৈঠকে বসে জাতীয় পার্টির সংসদীয় কমিটি। বিকেল ৫টা পর্যন্ত বৈঠক চলে।
গত পরশু হঠাৎ করেই প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নিজের ছোটভাই জিএম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যান এবং উত্তরসূরী ঘোষণা করেন এরশাদ।
এরপরই জাতীয় পার্টিতে জটিলতা সৃষ্টি হয়। রওশন এরশাদকে পাল্টা পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন ঘোষণা করা হয়। এরপর আজ বাবলুকে হটিয়ে রুহুল আমিন হাওলাদারে মহাসচিব ঘোষণা করেন এরশাদ।