ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অষ্টম বেতন কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মর্যাদার অবনমন হয়েছে, উল্টো আমলাদের মর্যাদা বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা লাগাদার আন্দোলন করেছে, এখন বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় আছে বলে এবং প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে আন্দোলন স্থগিত রয়েছে।
কিন্তু এবার সচিবদের তুলনায় মর্যাদার প্রশ্ন তুলেছেন খোদ সংসদ সদস্যরা।
চলতি সংসদ অধিবেশনে গত রোববার ও সোমবার উত্থাপিত এমপিদের সম্মানীভাতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত পাঁচটি বিলের বিরোধিতা করছেন তারা। এ এখন অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
এমপিদের মতে, তাদের প্রস্তাবিত সম্মানীভাতা একজন সচিবের চেয়ে কম। সচিবরা ৮২ হাজার টাকা বেতন-ভাতা পেলেও প্রস্তাবিত আইনে এমপিদের জন্য ৫৫ হাজার টাকা রাখা হয়েছে।
তারা বলছেন, এমপিদের যদি সম্মানীভাতাই দেয়া হয় তাহলে ১ টাকা ধার্য করা হোক! সংসদে উত্থাপিত এমপিদের বেতন সংক্রান্ত বিল নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে এসব আপত্তি উঠেছে বলে জানিয়েছেন আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
জাতীয় সংসদ ভবনে বুধবার কমিটির ২৪তম বৈঠক শেষে প্রেস বিফ্রিং এ কথা বলেন তিনি। সংসদের মিডিয়া কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রেস বিফ্রিংয়ে সুরঞ্জিত আরো বলেন, বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত মইন উদ্দিন খান বাদল ও ইমরান আহমেদ এই ভাতা বৈষম্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তাদের অজুহাত হচ্ছে, এমপিরা তো বেতন নেন না, সম্মানীভাতা নেন। সম্মানীভাতা তো মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীও নেন। আমলারা ৮২ হাজারেই থামেনি, সিনিয়র সচিবদের বেতন ৮৬ পর্যন্ত করেছেন। এজন্য প্রশ্ন এসেছে, আমরা যদি সম্মানীভাতাই নিই তাহলে ১ টাকা করে দেন। কিন্তু আমাদের মর্যাদাটা ঠিক রাখতে হবে। আমলাদের নিচে তো আমরা থাকতে পারি না! তাছাড়া বেতনের সঙ্গে দেখা যায়, এমপিদের মেডিকেল বিল, যাতায়াত ভাতা, সংসদ অধিবেশন এলাউন্স, কমিটি মিটিং এ অংশ নিলে যে অ্যালাউন্স পায় সেটাও বাড়ানো হয়নি। এজন্য আমরা বলে দিয়েছি এগুলো তোমরা ঠিক করে আনো। এজন্য একটি সিরিয়াস বৈঠক করতে হবে। অর্থমন্ত্রীকে বৈঠকে ডাকা হবে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত জানান, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকার বিষয়গুলো দেখার পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ১৮ ফেব্রুয়ারি আবার মিটিং করা হবে।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী জনগণই যদি সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হয়, আর জনগণের প্রতিনিধিত্ব যদি এমপিরাই করে তাহলে তাদের প্রতিনিধিত্ব তো সবার ওপরে নিতে হবে।
তিনি বলেন, তবে রাষ্ট্রপতি, স্পিকার, প্রধানমন্ত্রীর, মন্ত্রীদের বেতন-ভাতা বাড়ানো সংক্রান্ত বিলটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এরা তো তাদেরটাও (আমলা) বাড়ায়, নিজেরদেরও বাড়ায়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কমিটির সদস্য শামসুল হক টুকু, অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউল হক মৃধা ও সফুরা বেগমসহ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবেরা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।