ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নিজের লেখা ‘শ্লোক’ দিয়ে করা বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ফেস্টুনে জাতির জনকের ছবি বিকৃতির দায় এবার নিজেদের নিয়োজিত ডিজাইনারকে দিলেন বন্দর পতেঙ্গা আসনের সরকার দলীয় সাংসদ এম এ লতিফ। সেইসঙ্গে ২৪ ঘণ্টা আগে নগর আওয়ামী লীগের একটি অংশের বিরুদ্ধে করা ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্বও’ প্রত্যাহার করে নিয়ে বলেছেন, এ ঘটনার দায় নিজের কাঁধে নিয়ে দল ও প্রধানমন্ত্রী যে শাস্তি দেবেন তা মাথা পেতে নেবেন বির্তকিত এ সাংসদ।
রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু হলে জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান এম এ লতিফ। এসময় বির্তকিত ফেস্টুনের ডিজাইনার কবির হোসেন ও চেম্বার কর্মকর্তা রাজীব দাশকেও পাশে রাখেন সাংসদ লতিফ।
সংবাদ সম্মেলনে লতিফের ‘অগোচরে’ ডিজাইনার ও চেম্বারের এক কর্মকর্তাই এই বির্তকিত ফেস্টুনটি ডিজাইন করেছেন বলে স্বীকার করে নেন তারা।
এরআগে গত শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি)ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকটি দৈনিকে সংবাদটি গুরুত্বসহ প্রকাশিত হয়।
এরপরপরই রোববার দুপুরে জরুরী সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেন সাংসদ এম এ লতিফ।এসময় তিনি বলেন, ‘জাতির জনকের ছবি বিকৃতি নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তির জন্য গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে আমি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের একটি অংশকে দায়ী করেছিলাম। গণমাধ্যমে আসল বিষয়টি আসার পর সংশ্লিষ্টদের সাথে আমি কথা বলে সত্য উদঘাটন করতে পেরেছি। এজন্য নগর আওয়ামী লীগের একাংশের বিরুদ্ধে করা আমার অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর আগনমনকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত থাকায় অনাখাঙ্খিতভাবে ডিজাইনারদের কারণে ভুলটি হয়েছে। সেজন্য দল এবং প্রধানমন্ত্রী আমাকে যেরকম শাস্তি দেবেন আমি সেটি মাতা পেতে নেব।
এছাড়া এনিয়ে যে মামলা হয়েছে, সেটি আমি আইনগতভাবে মোকাবেলা করব।’ তিনি আরো বলেন, ‘এঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধেও আমি নিজ উদ্যোগে ব্যবস্থা নেব। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের কারণে জাতির কাছে আমি নিলাম হয়ে গেলাম। সারা দেশে আমার মান সম্মান সব ধুলোয় মিশিয়ে গেল। সব সফলতার মধ্যে ব্যর্থতাও থাকে। আমি ফেরেস্তা না, শয়তানও না। আমারও ভুল থাকতে পারে। এই ধরণের ঘৃৃণ্য কাজের সাথে আমি জড়িত না হলেও চেম্বারের শতবর্ষ উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে এর দায় দায়িত্ব আমি নিচ্ছি।’
সেই ডিজাইনার কবির হোসেনকে নিয়ে সাংসদ লতিফের সংবাদ সম্মেলন এসময় সাংসদ লতিফের পাশে থাকা বির্তকিত ফেস্টুনের ডিজাইনার কবির হোসেন বলেন, ‘ফেস্টুনে ব্যবহৃত বঙ্গবন্ধুর ছবির রেজুলেশন কম হওয়ায় আমি আর রাজিব দাশ মিলে এমপি স্যারের (এম এ লতিফ) ছবি থেকে মাথা কেটে বঙ্গবন্ধুর ছবি দিয়ে ফেস্টুন ডিজাইন করেছি। এখানে এমপি স্যারের কোনো হাত নেই। বিষয়টি উনি কোনোভাবেই জানতেন না। সব দায় আমার আর রাজিবের।’
একই সময়ে পাশে থাকা চেম্বার কর্মকর্তা রাজীব দাশও বিষয়টি স্বীকারে নিজের কাঁধে দায় নেন।
উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি ’ এ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে চট্টগ্রামসহ দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় উঠে। এরপর রাতের দিকে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদটি গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হয়।
এরপর ৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের আদালতে সাংসদ লতিফের বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করা হয়।
এরই মধ্যে চারদিন পর ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এসে সংবাদ সেম্মলন করে ছবি বিকৃতির ঘটনাকে নিজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে দাবি করেছিলেন সাংসদ এম এ লতিফ। এমনকি এঘটনার জন্য নগর আওয়ামী লীগের একটি অংশকে দায়ী করে ছিলেন।