DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

শেখ হাসিনা ও ভারত এখন সমার্থক শব্দঃ কূলদীপ নায়ার

Kuldip_Nayar_s_5019

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  ঢাকায় পৌঁছার পর আপনার বুঝতে খুব বেশি সময় লাগবে না যে এখানে একটি দেশ তার নীতি হারিয়েছে। পশ্চিম পাকিস্তানের অদৃশ্য ও শোষকদের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ যে বিপ্লবিক চেতনা নিয়ে লড়াই করেছিল তাও আর নেই। রাওয়ালপিন্ডির স্থান দখল করেছে দেশীয় স্বার্থান্বেষী মহল।

আরো শোচনীয় হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কতটা কর্তৃত্ববাদী হয়ে পড়েছেন।

প্রথমত, জনগণের মতে, খালেদা জিয়ার অবনমন আর দ্বিতীয়ত, সামরিক বাহিনীর সাথে হাসিনার শান্তিচুক্তি। এক সময় এই বাহিনী তার বাবা জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান সরকারকে উৎখাত করেছিল। হাসিনা সশস্ত্র বাহিনীর বেতন বাড়িয়েছেন। অধিকন্তু তিনি তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে পেশাদারি বজায় রেখে রাজনীতি থেকে দূরে থাকলে তারা সম্মান ও কর্তৃত্ব পান।

বস্তুত সেনাবাহিনী এখন পেশাদার এবং একটি স্বীকৃত বাহিনী হিসেবে বিবেচিত হয়। হাসিনার প্রকৃত বিরোধিতা আসছে জামায়াতে ইসলামীর কাছ থেকে। দলটি ধর্মীয় কার্ড খেলছে। জামায়াত কোনো অগ্রগতি করতে পারছে না। কারণ দলটিকে পাকিস্তানের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে দেখা হয়।

এমনকি বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যে বর্বরতা দেখিয়েছে তার বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবেও জামায়াত নিন্দা জানায়নি। এক সময় বামদের শক্তি থাকলেও এখন আর দৃশ্যপটে নেই। তারা যেমন আবেদন হারিয়েছে তেমনি হারিয়েছে তাদের ক্যাডারদেরও। তরুণদের আকৃষ্ট করছে ক্যারিয়ার আর ব্যবসায়ীরা রাজনীতিকে প্রভাবিত করছে। কারণ তারা সরকারের প্রতিটি পর্যায়ে ঘুষ দেয়।

এই অবস্থা পুরো বাংলাদেশেই বিরাজমান। আশার কথা হলো জনগণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ভালোবাসে এবং প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মাধ্যমে এটার প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের কথা জানিয়েছে।

বেশিদিন আগের কথা নয়, সমাবেশের মাধ্যমে জনগণ তাদের অসন্তোষের কথা জানাতে রাজপথে নেমে আসত। এতে দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হতো। দোকানপাট আর কারখানা বন্ধ থাকত। এতে তাদেরই ক্ষতি হতো। কিন্তু এতে পোশাক খাতের পরিবেশের ক্ষতি হয় যা দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস। সম্পদ কিছু লোকের হাতে জিম্মি। তারা শুধু দৈনন্দিন জীবনকেই নিয়ন্ত্রণ করছে না, করছে রাজনীতিকেও।

অনেক শিল্পপতি সরকারকে নীতি ও কর্মসূচিকে প্রভাবিত করার জন্য রাজনৈতিক দল ও সংসদ সদস্যদের চাঁদা দেন। তৃতীয় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতই বাংলাদেশের গণমাধ্যম নামেই স্বাধীন। মালিকরা যতটুকু অনুমোদন করেন সম্পাদকরা শুধু ততটুকু স্বাধীন।

সশস্ত্র বাহিনীর সমালোচনার ব্যাপারে গণমাধ্যম অত্যন্ত সতর্ক। সামরিক বাহিনীর সমালোচনাকে দেশের স্বার্থে ক্ষতিকর হিসেবে দেখা হয়। আদর্শিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে এবং সামাজিকভাবে বাংলাদেশ কোনদিকে যাচ্ছে-এই প্রশ্ন আমি অনেককেই করেছিলাম।

রাজনৈতিক দলের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখেন এমন একজন শিক্ষাবিদ আমাকে বলেন যে বাংলাদেশ তার পথ হারিয়েছে এবং সে জানে না যে কোনপথে সে এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার প্রধান শক্তি নয়াদিল্লি-যারা সব ডিম তার একার ঝুড়িতে রেখেছে।

বিএনপি বলছে, শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের কারণে তিনি এমনকি ভারতেরও ইমেজ ক্ষুণ্ন করছেন।

হাসিনা কোনো সমালোচনা সহ্য করেন না। তিনি মনে করেন হাসিনা আর ভারত সমার্থক শব্দ। বৃহস্পতিবার ভারতের দা স্টেটসম্যান পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধ (সংক্ষেপিত)।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!