DMCA.com Protection Status
title=""

আওয়ামী সরকারের এজেন্টরাই শহীদ বেদীতে হামলা চালিয়েছে: রিজভী আহমেদ

rizvi

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শ্রদ্ধা নিবেদন কে কেন্দ্র করে শহীদ বেদীতে বিশৃঙ্খলার বিষয়ে বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, সরকারি এজেন্টরা শহীদ বেদীতে হামলা চালিয়েছে। বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেইএ হামলা চালানো হয়েছে।

রোববার বিকেলে পল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, শহীদ বেদীতে বিএনপির নেতাকর্মীরা কেউ জুতা পায়ে ওঠেনি বরং সবাই খালি পায়ে উঠেছিল কিন্তু ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরাই ক্ষমতার দাপটে জুতা নিয়ে শহীদ বেদীতে উঠেছে।

নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলায় একুশে’র রাতে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বিএনপি নেতা আলমগীর হোসেন আগুনকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা অতর্কিত আক্রমন চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। ঘটনার সময় আলমগীর হোসেন আগুন মটরসাইকেলের পেছনে বসা ছিলো, এমতাবস্থায় আওয়ামী দুস্কৃতকারীরা তাকে পিছন দিক থেকে আঘাত করলে সে মাটিতে পড়ে যায়। এরপর সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে পৈশাচিকভাবে হত্যা করে। এই কাপুরোষোচিত, মর্মান্তিক, নৃশংস ও নির্দয় হত্যাকান্ডের ঘটনায় আমি দলের পক্ষ থেকে তীব্র ধিক্কার ও নিন্দা জানাচ্ছি। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র পক্ষ থেকে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা। আমি দলের পক্ষ থেকে আলমগীর হোসেন আগুনকে হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

সাতক্ষীরা জেলা কলারোয়া উপজেলার প্রায় সবকটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের নোমিনেশন পেপার কেনা ও জমা দেয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রবলভাবে বাধা প্রদান করছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সন্ত্রাসীদের একটি গ্রুপ সেখানে অবস্থান করে এই অপকর্ম সাধন করছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা :

১। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সাইফুল্লাহকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র কেড়ে নিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা।

২। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে একুশে’র প্রথম প্রহরে ৫২’র ভাষা শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে স্থানীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করতে গেলে বিএনপি’র নেতাকর্মীদেরকে সেখানে যেতে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে বাধা দেয়।

বাগেরহাট জেলা : ১। বাগেরহাট জেলাধীন চিতলমারী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান, থানা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদ শেখ সহ ৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের সবকটি’তে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের নোমিনেশন পেপার কিনতে দিচ্ছে না পুলিশ ও আওয়ামী ক্যাডার’রা।

২। মৌল্লারহাট উপজেলা’র উদয়পুর ও কাউলা ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে গ্রেফতারের জন্য হানা দিচ্ছে পুুলিশ। প্রার্থীরা এখন এলাকাছাড়া।

৩। ফকিরহাট উপজেলার লকপুর, বেতাগী, মুলগড়, নলকা ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের হুমকি দেয়া হচ্ছে যাতে বিএনপি’র প্রার্থীরা নোমিনেশন পেপার কিনতে কিংবা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে।

৪। রামপাল উপজেলার মল্লিকের বেড় ইউনিয়ন বিএনপি’’র নেতাকর্মীদের বাড়ীঘর ভাংচুর করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। প্রার্থীরা এখন প্রাণভয়ে এলাকাছাড়া।

৫। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীকে তফশীল ঘোষনার পর শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। তিনি এখন এলাকাছাড়া। বিএনপি এই এলাকায় চারজনকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করলেও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কর্তৃক মৃত্যুর হুমকিতে কেউই প্রার্থী হতে রাজী নয়। এছাড়া উপজেলার বিষ্নুপুর, কোটাপাড়া ও বেমরোতা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের মৃত্যু হুমকি দিয়ে এলাকাছাড়া করা হয়েছে।

৬। মংলা উপজেলার সোনাইরতলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশন থেকে নোমিনেশন পেপার সংগ্রহ করতে দিচ্ছে না উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহের হাওলাদার।

৭। কচুয়া উপজেলার রারীপাড়া, গজারিয়া ও বাদাল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের হুমকি দেয়া হচ্ছে যাতে তারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়। সংগ্রামী বন্ধুরা, হিংসাকে আওয়ামী লীগ পরম ধর্ম বলে মনে করে। এরা হত্যা আর রক্তের উৎসরণের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ও মানুষের স্বাধীনতাকে সমাধিস্থ করে ফেলেছে। এখন কোথাও কোন নিরাপত্তা নেই। হয় ধরা পড়বে নয়তো মরে যাবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়-শাসকদলের অনুগ্রহের ছায়াতলেই এদেশের মানুষকে বাঁচতে হবে। বর্তমান শাসনকালকে মনে হয়-চারিদিকে শকুন আর হায়েনার জয়জয়কার।

সাংবাদিক বন্ধুরা, ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে বর্তমান ভোটারবিহীন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন-নৌকা হচ্ছে দশ টাকা কেজি চালের প্রতীক। আসলে প্রধানমন্ত্রী একটু ঘুরিয়ে ঠিকই বলেচেন-নৌকা প্রকৃতপক্ষে অন্যের চাল-ডাল-জমি-জিরাত, গণতান্ত্রিক অধিকার, মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার প্রতীক। যে শাসকগোষ্ঠী গণতন্ত্রের পাযে লোহার শিকল পরিয়ে সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, ধর্ষক, লুটপাটকারী, দখলদাব, গুপ্তহত্যাকারী, শেয়ারবাজার লুটপাটকারীদের সঙ্গে নিয়েছে তারা মানুষের ভোটাধিকার যে দিবেনা তা বলাই্ বাহুল্য।

দেশকে স্বৈরতান্ত্রিক একনায়কতান্ত্রিকবাদী শাসনের শক্ত শিকলে বেঁধে যারা উন্নয়নের কথা বলছেন তারা মূলত: নিজেদের লুটপাটে অর্জিত অবৈধ টাকার উন্নয়ন ছাড়া দেশ ও দেশের মানুষের জন্য আর কিছুই করতে পারেনি।

গতকাল একুশে’র প্রথম প্রহরে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৫২’র ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিএনপি চেয়ারপার্সনের শ্রদ্ধা নিবেদনের বিষয়ে তাঁর সার্বিক নিরাপত্তা বিধান করতে পুলিশ ও র‌্যাব প্রধানদের কাছে দলের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিএনপি চেয়ারপার্সন তাঁর গুলশানস্থ বাসভবন থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসা পর্যন্ত পুলিশ বারবার বাধা প্রদান করে। গুলশানে তাঁর বাসভবনের সামনেই পুলিশ ব্যারিকেড সৃষ্টি করে।

সব বাধা অতিক্রম করে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গাড়ীবহর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাছাকাছি আসলে পুলিশ দুই জায়গায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করে অপেক্ষমান বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত আক্রমন চালায়। এই ঘটনায় প্রায় ৫০ জনের অধিক বিএনপি নেতাকর্মী মারাত্মকভাবে আহত হয়। বিএনপি

চেয়ারপার্সনের গাড়ীবহরকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসতে পুলিশের বারবার বাধা প্রদান ও বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশী বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র পক্ষ থেকে আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!