ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ২০০৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারীর পিলখানা গনহত্যার মূল হোতারা এখনও ধরাছোয়ার বাইরে বলে মত প্রকাশ করেছে বিএনপি। লে. জেনারেল জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সেনাবাহিনীর যে তদন্ত রির্পোট সরকারের কাছে জমা দেয়া হয়েছে তা অবিলম্বে জনগণের সামনে প্রকাশ করার জন্য আহ্বানও জানিয়েছে দলটি।
শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘পিলখানা বিডিআর হত্যাকাণ্ড-২০০৯’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এ আহ্বান জানান।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পিলখানা বিডিআর সদর দপ্তরে যে হত্যাকাণ্ড হয়েছিল তার সুষ্ঠু তদন্ত এখন পর্যন্ত হয়নি। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত গডফাদাররা এখনো আড়ালে রয়েছে। তাই সরকারের কাছে দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করুন এবং জেনারেল জাহাঙ্গীর নেতৃত্বে করা তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করুন।’
কেন পিলখানা বিডিআর হত্যাকাণ্ড- এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে ধ্বংস, সেনাবাহিনীর মনোবল দূর্বল, সেনাবাহিনীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা যাতে দূর্বল হয়ে বাহিনী ছেড়ে চলে যায় তার জন্যই দেশীয় চরের মাধ্যমে বিদেশিদের ষড়যন্ত্রে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়।’
সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বিএনপির এ নেতা বলেন, কোনো বাহিনীতে বিদ্রোহ সংগঠিত হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে দমন করাই সেনাবাহিনীর নিয়ম। কিন্তু বিদ্রোহ দমন না করে সে দিন মঈন উ আহমেদ চরম কাপুরুষের পরিচয় দিয়ে সরকারের আদেশ ও নির্দেশ আনতে গিয়েছিলেন। এখানে আমার প্রশ্ন?
মঈন উ আহমেদ কি আদেশ ও নির্দেশ আনতে, না কি নিজে আত্মসমর্পণ করতে গিয়েছিলেন?
২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ প্রসঙ্গে বর্তমান সরকার এবং মঈন উ আহমেদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড সম্পর্কে হাফিজ উদ্দিন বলেন, মাত্র একটি ধমক ও আলটিমেটাম দিলেই বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার সমাধান করা যেত। কিন্তু সরকার সেটা না করে বিদ্রোহীদের গণভবনে ডেকে জামাই আদর করে আর জামাই আদর করতে করতেই দু’দিনব্যাপী এই হত্যাকাণ্ড চলতে থাকে।
তিনি বলেন, সরকার সুপরিকল্পনা করে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা আমাদের ভুলিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। কারণ বিডিআর বিদ্রোহ সংগঠিত হয়েছিল এই ব্যর্থ সরকারের কারণে। আর দেশে এ ধরনের গনতন্ত্রহীন দূর্বল শাসন থাকলে বিডিআর বিদ্রোহের মত আরো ঘটনা ঘটবে।
বাংলাদেশে শিশু হত্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে প্রতিদিন শিশু হত্যা হচ্ছে। আর এই হত্যার সাথে ক্ষমতাসীনদের একজন করে শীর্ষ নেতা জড়িত।
এর আগে শহীদ সামরিক কর্মকর্তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন ওলামা দলের সভাপতি এম এ মালেক।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুব দলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা পরিচালনা করেন বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন।