ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ রাজধানীর রামপুরার বনশ্রীতে ভাই-বোন হত্যার ঘটনায় রহস্য আরও ঘনিভুত হয়েছে । তদন্তকারী র্যাব আজ দাবি করেছে নিহত দুই শিশুর মা এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। দুই শিশুকে তাদের মা-ই শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে র্যাব। সকালে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক সরোয়ার হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঐ কর্মকর্তা আরো জানান, শিশু দুটির মা মাহফুজা মালেক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন তিনি শ্বাসরোধে দুই শিশুকে হত্যা করেছেন। এসময় তার সঙ্গে আরো একজন ছিলেন। সাথে থাকা ঐ ব্যাক্তিই শিশু দুটির হাত-পা চেপে ধরেন। এর আগে মাহফুজা মালেক জেসমিনের আচরণ রহস্যজনক বলে দাবি করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী । তবে এই হত্যাকান্ডের মোটিভ হিসাবে র্যাব যা বলেছে তা মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়।মানসিক বিষাদ,পরকিয়া এবং সম্পত্তির কারনে এই মর্মান্তিক হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে র্যাব যে দাবী করেছে তাও সমর্থন যোগ্য নয়।
নিহত শিশুদের মা ও বাবাকে সন্দেহের তালিকায় রেখে তদন্ত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতকাল নিহতদের মা, বাবা ও খালাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জামালপুর থেকে ঢাকায় নিয়ে এসেছে র্যাব। আটকের পর বিকালে প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাদের।
তদন্ত সংশ্লিষ্টদের ধারণা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সৃষ্ট কোনো বিরোধের শিকার হয়েছে দুই সন্তান। ঘটনার সময় মাহফুজা মালেক জেসমিন ও তার বোন আফরোজা মালেক মিলা বাসায় ছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সন্দেহের তীর এখন দুই সন্তানের মায়ের দিকে। যে কারণে তার ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্বামী আমানুল্লাহ আমানের অবর্তমানে বাসায় কেউ আসা-যাওয়া করতেন কি-না, জেসমিন বাইরে বেড়াতে গেলে কোথায় যেতেন এসব বিষয়ে খোঁজ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে স্বামী, স্ত্রী দুজনের মোবাইলফোন ট্রাকিং করা হয়েছে বলে র্যাব সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় আরও কয়েক জনকে সন্দেহের তালিকায় রেখেছে র্যাব।
এদিকে আজ সন্ধ্যায় নিহত শিশুদুটির বাবা তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন ।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় শিশু দুটির বাবা আমানউল্লাহ বাদী হয়ে রামপুরা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রামপুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমানউল্লাহ শিশুদের মা মাহফুজা মালেক জেসমিনকে একমাত্র আসামি করে এ মামলা করেছেন।
এই শিশুদুটির অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর থেকে তাদের মা-বাবার রহস্যজনক আচরন ,মর্গে তাদের লাশ ফেলে রেখে জামালপূর চলে যাওয়া এবং আজ বাবা স্বয়ং শিশু দুটির মায়ের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা সবকিছুই সন্দেহ জনক বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ।হত্যা কান্ডের সহায়তাকারী অপর খুনীকে না ধরা পর্যন্ত এই হত্যা রহস্য উদঘাটিত হবে না । আসল খুনী এবং প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে বলে আমাদের ধারনা।