ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব বলেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র সুরক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রয়াসের প্রতি ভারতের সর্বাত্মক সমর্থন আছে। এ ছাড়া গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো সুরক্ষার প্রক্রিয়ায়ও ভারত পাশে আছে।
রাজধানীর একটি হোটেলে শুক্রবার দুই দিনব্যাপী সপ্তম বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সংলাপের উদ্বোধনী অধিবেশনে রাম মাধব এ মন্তব্য করেন।
উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে পানি অত্যন্ত সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এ ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ের এখনো সমাধান হয়নি। আমরা আশা করি, সুপ্রতিবেশীর মানসিকতা দেখিয়ে শিগগিরই এসব সমস্যার সমাধান হবে। এ ছাড়া গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণপ্রক্রিয়ায় আমরা ভারতকে পাশে চাই।’
বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সংলাপ যৌথভাবে আয়োজন করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন, দিল্লি। আয়োজনে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)।
এতে অংশ নেবেন দুই দেশের রাজনীতিবিদ, কর্মকর্তা ও গবেষকেরা।
উদ্বোধনী অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের সমন্বয়কারী এ এস এম শামসুল আরেফিন।
রাম মাধব বলেন, ‘বিপুল জনগোষ্ঠী নিয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য ভালোভাবে এগিয়ে নিচ্ছে। শেখ হাসিনা যেভাবে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে রক্ষার জন্য কঠোর প্রয়াস চালাচ্ছেন, তা যথেষ্ট প্রশংসনীয়। এ দেশে গণতন্ত্র রক্ষায় তাঁর প্রয়াসের প্রতি আমাদের সর্বাত্মক সমর্থন দিচ্ছি। গণতন্ত্রের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান আছে। আমাদের দুই দেশের সংবিধানই বেশ চমৎকার। এই সংবিধানকে আমাদের সমুন্নত রাখতে হবে। আর সংবিধানের প্রতি আমাদের পূর্ণ অঙ্গীকার আছে।’
রাম মাধব বলেন, ‘গণতন্ত্র স্বাধীনতা নিশ্চিত করে এবং আমাদের এই স্বাধীনতা লালন করতে হবে। আর এই স্বাধীনতা সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেই নিহিত। এই স্বাধীনতা কাউকে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ও গণতন্ত্র ধ্বংসের লাইসেন্স দেয়নি। এই স্বাধীনতা আমাদের বাস পোড়ানো, জনগণের সম্পত্তি পোড়ানো ও সংঘাতে লিপ্ত হওয়ার অনুমতি দেয়নি। গণতন্ত্র সুরক্ষার জন্য শান্তি অপরিহার্য। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো সুরক্ষার প্রক্রিয়ায় আমরা পুরোপুরি আপনাদের পাশে আছি।’
বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মনে করেন, সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের মতো সংবেদনশীল বিষয় সমাধানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রতিফলন ঘটেছে। নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন একপর্যায়ে উন্নীত হওয়ার ব্যাপারে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বলেন, ‘নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ আমরা সমন্বিতভাবে দূর করেছি। তা ছাড়া বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদের বিরুদ্ধে ন্যূনতম ছাড় না দেওয়ার নীতি অনুসরণ করছে।’
এই মৈত্রী সংলাপে মূল প্রবন্ধে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘২০১১ সালে দুই দেশের সম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্রুত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে আমরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিকে তাকিয়ে আছি। আমরা আশা করি প্রস্তাবিত গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণে ভারত যুক্ত হবে।
এ ছাড়া সবগুলো অভিন্ন নদীর পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা সমন্বিতভাবে মোকাবিলার জন্য অববাহিকাভিত্তিক অভিন্ন ব্যবস্থাপনা চাই। এ ক্ষেত্রে আমরা ভারতের সহযোগিতা চাই।’