দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ গত বছরের ডিসেম্বরের ৮ তারিখ কর্মস্থল বেলভ্যু হাসপাতাল ত্যাগের পর থেকেই নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসের বাংলাদেশি বধূ মাহফুজা রহমানের আর কোন সন্ধান নেই।
এতে ওই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নিউইয়র্কের পুলিশ মাহফুজা রহমানের সন্ধান করছে। বেলভিউ হাসপাতালের নার্স মাহফুজা (৩০)’র স্বামী মোহাম্মদ চৌধুরী (৩৮) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সে সময় জানিয়েছিলেন যে, বাংলাদেশে এক দুর্ঘটনায় নিকটাত্মীয়ের আহত হবার সংবাদ পেয়েই মাহফুজা ঢাকায় চলে গেছেন। মাস তিনেক পর ফিরবেন।
কিন্তু সে অনুযায়ী তিনি মার্চের প্রথম দিনেও ফিরেননি। এমনকি এই দীর্ঘ সময়ে মাহফুজা তাদের সাথে ফোন কিংবা ই-মেইলেও যোগাযোগ করেননি।
এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালের সহকর্মীরা তার বাসায় এবং স্বামীকে ফোন করে না পেয়ে পুলিশকে অবহিত করেন। এরপর পুলিশ ব্রঙ্কসের কিংসব্রিজ হেইটস এলাকায় ইস্ট ১৯৮ স্ট্রিটের বাসায় গত ৫ মার্চ গিয়ে দেখেন যে ঘরটি তালাবদ্ধ।
প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানান, ৩ মাস ধরেই বাসাটি তালাবদ্ধ এবং মাহফুজার স্বামী মোহাম্মদ চৌধুরীও ৯ বছর বয়েসী কন্যাকে নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশে চলে গেছেন।
এ পরিস্থিতিতে পুলিশের সন্দেহ আরও বাড়ে। মাহফুজাকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছে আশংকায় তারা গত ৭ মার্চ সোমবার ওই বাড়ির আঙ্গিনা খুঁড়ে এবং কুকুর দিয়ে তল্লাশি চালায়। এর আগে পুরো বাসা তন্নতন্ন করে খোঁজ করা হয়। কিন্তু তেমন কিছুর হদিস পায়নি পুলিশ। বাসার সামনে পুলিশ প্রহরা বসানো হয়েছে। ঘটনাটি সর্বত্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
পুলিশের ধারণা, মাহফুজা মারাত্মক কোন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। এজন্য তারা নিকটস্থ আদালতে আবেদন জানিয়েছে মাহফুজা রহমানের ব্যাংক একাউন্টের হদিস জানার অনুমতির জন্য।
নিউইয়র্কের পুলিশ অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশে তার স্বজনদের অবিলম্বে যোগাযোগ করতে।
জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে মাস্টার্স করে নিউইয়র্কে আসার পর হান্টার কলেজ থেকে নার্সিংয়ে ডিপ্লোমা করেছেন মাহফুজা। লাগোয়ার্ডিয়া কলেজ থেকে ২০১৪ সালে তিনি কলা ও বিজ্ঞানে এসোসিয়েট ডিগ্রিও সংগ্রহ করেছেন। মাহফুজা যে এলাকায় বাস করছিলেন সেখানে বা তার আশপাশে বাংলাদেশিদের বসতি না থাকায় তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।
ব্রঙ্কসের কম্যুনিটি লিডার ও বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ এন মজুমদার ৮ মার্চ বলেন, ঘটনাটি মূলধারার সংবাদপত্র এবং মিডিয়ায় দেখার পর চেষ্টা করছি মাহফুজা ও চৌধুরী দম্পতির হদিস উদঘাটনে। সেটি জানা সম্ভব হলে বাংলাদেশে তাদের স্বজনদের ফোন করে হয়তো প্রকৃত রহস্য জানা সম্ভব হবে।