ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবশেষে ঘটনার ৫ দিন পর কুমিল্লা সেনানিবাসে সোহাগী জাহান তনু ধর্ষন এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শুক্রবার রাতে একটি বিবৃতি দিয়েছে।
আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২০ মার্চ তারিখ রাত আনুমানিক ১১ টায় কুমিল্লা সেনানিবাসের সীমানা সংলগ্ন এলাকায় (এস্থানে কোন সীমানা প্রাচীর নেই) সোহাগী জাহান তনুর অচেতন দেহ খুঁজে পান তার বাবা ইয়ার আলী এবং তিনি মিলিটারি পুলিশকে খবর দেন ।
বিবৃতিতে বলা হয়, সোহাগীকে তৎক্ষণাৎ সিএমইচে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ ময়নাতদন্ত করে। আইএসপিআর বলছে, সোহাগী হত্যার কারণ উৎঘাটনে এরমধ্যেই কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং একাজে সেনাবাহিনী পুলিশ ও প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনু হত্যার প্রায় পাঁচদিন পরে আইএসপিআর এই বিবৃতি দিল। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং বিচারের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশের ঢাকা, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ চলছে।
তনুর বাবা ইয়ার আলী শুক্রবার বলেছেন, ''আমি কুমিল্লা সেনানিবাসে থাকি। সেই সেনানিবাস এলাকা থেকে আমি নিজে আমার মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করেছি।''
ধর্ষণ এবং হত্যার অভিযোগ ওঠার পাঁচদিন পরও পুলিশ ঘটনা সম্পর্কে পরিষ্কার কিছু বলতে পারছে না।
পুলিশ বলেছে, হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছিল কিনা,সেটা জানার জন্য তারা মৃতদেহের ময়নাতদন্তসহ বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্টের অপেক্ষায় আছে।
তনুর পরিবারকে র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদঃ
হত্যাকাণ্ডের শিকার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহানের (তনু) মা, ভাই ও চাচাতো বোনকে বাসা থেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব-১১) একটি দল।
গতকাল শুক্রবার রাত ১২টার দিকে মুরাদনগর মির্জাপুরের বাসা থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে বিকেলের দিকে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ও তার বড় ভাইকে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের কর্মকর্তারা এসে নিয়ে যান।
শনিবার সকালে গণমাধ্যমকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তনুর চাচা আলাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘‘আমার মেয়ে লাইজু কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে পড়ে। সে তনুদের বাসাতেই থাকে। দুজন একই কক্ষে থাকত। এখন আমার মেয়ের জন্যও ভয় করছে।’’
এ ব্যাপারে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক খোরশেদ আলম বলেন, তনু হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কিছু তথ্য জানতে গতকাল রাত ১১টার দিকে তনুর মা ও আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে তাদের ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের বাসায় রেখে আসা হয়েছে।
মির্জাপুরে তনুদের প্রতিবেশী হুমায়ুন কবির বলেন, গতকাল গভীর রাতে র্যাব আসায় তনুর পরিবারের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পরে প্রতিবেশীদের মধ্য থেকে দুজন তাদের সঙ্গে র্যাব অফিসে যায়।
সারা রাত সেখানে অবস্থানের পর আজ সকালে তারা ফিরে এসেছেন। শনিবার বিকেলে তনু হত্যার বিচারের দাবিতে কুমিল্লার কান্দিরপাড় এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছে ছাত্র-জনতা।