DMCA.com Protection Status
title="৭

আদালত অবমাননাঃদন্ডিত দুই মন্ত্রীর ভাগ্য এখনও অনিশ্চিত

Kamrul-Mojammel-Minister copy

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ   আদালত অবমাননার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়া খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের মন্ত্রিত্ব টিকে থাকবে কী?

ঘুরেফিরে এখন এ প্রশ্নই দেখা দিচ্ছে। সর্বোচ্চ আদালতে দণ্ডিত হওয়ার পর মন্ত্রীদের ভাগ্যে কী ঘটতে চলেছে তা এখনো পরিষ্কার নয়।

দণ্ডিত দুই মন্ত্রী কিংবা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিশেষ কোনো সিদ্ধান্ত না এলে পূর্ণাঙ্গ রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর রিভিউ করবেন কি না সেই বিষয়টি ভাবছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী এবং তাদের আইনজীবীরা।

আদালত অবমাননার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা অবশ্য বলেছিলেন, দুই মন্ত্রী শপথ ভঙ্গ করে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। শুনানিতে দুই মন্ত্রীর উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, যতই ক্ষমতাবান হোন না কেন, এই আদালত যেকোনো আদেশ দিতে দ্বিধাবোধ করবেন না।

kamrulতিনি আরো বলেন, ‘এই আদালত সংবিধানের অঙ্গ, সরকারের অঙ্গ না। আমাদের মধ্যে একটা পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকে। আপনারা শুধু দেশের প্রধান বিচারপতি নন, গোটা বিচার বিভাগকে ছোট করেছেন।’

কাজেই দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দেয়া অর্থদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায়ে আদালত কি নির্দেশনা দেন সেদিকে এখন সবার নজর।

এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের আইনজীবী ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান বাসেত মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, দণ্ডিত হবার পর মন্ত্রিত্বের শপথ ভঙ্গ হয়েছে কি না এখনো আদালত তা ক্লিয়ার করেননি। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তা বোঝা যাবে। সংক্ষিপ্ত রায়ে এ রকম কিছু বলা হয়নি।

তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপির জন্য আবেদন করেছি। জরিমানার টাকাও জমা দেয়া হয়েছে।

রিভিউ প্রসঙ্গে এ সিনিয়র আইনজীবী বলেন, রিভিউ করার অধিকার আইনে রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে দণ্ডিত হবার পর পূর্ণাঙ্গ রায়ের সার্টিফাই কপি পাবার এক মাসের মধ্যে রিভিউ করতে হবে। পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে এ বিষয়ে চিন্তা করব।

সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদ বিচারপ্রার্থীকে রায় রিভিউ করার অধিকার দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘সংসদের যেকোনো আইনের বিধানবলী সাপেক্ষে এবং আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রণীত যেকোনো বিধি সাপেক্ষে আপিল বিভাগের কোনো ঘোষিত রায় বা প্রদত্ত আদেশ পুনর্বিবেচনার ক্ষমতা উক্ত (আপিল) বিভাগের থাকিবে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নতুন সভাপতি ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন রিভিউ আবেদনের বিষয়ে বলেন, ‘রিভিউ আবেদন হবে কি না তা নির্ভর করবে পূর্ণাঙ্গ রায়ের ওপর। রায় না দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না।’

একই মন্তব্য করেছেন দুই দণ্ডপ্রাপ্ত মন্ত্রীও। তারা বলেছেন, আদালতের চুড়ান্ত ও পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পরই মন্ত্রী পদে থাকা না থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। এর আগে পদত্যাগ নয় বলেও জানান তারা।

অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগে এই দুই মন্ত্রী কোনো স্বিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না। বিচার বিভাগ নিয়ে আপনাদের মন্তব্যে শপথ ভঙ্গ হয়েছে কিনা- গত সপ্তাহে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, আমি সংবিধানের প্রতি অনুগত। এ সংবিধান মেনেই আমি শপথ নিয়েছি। আদালতের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল।

পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, রায়ের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তখন আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিচার বিভাগ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য ও আদালতের রায়ের ব্যাপারে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামও একই কথা বলেন।

তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর আগে গত ২৭ মার্চ প্রধান বিচারপতি ও বিচারবিভাগ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন আপিল বিভাগ। অনাদায়ে সাত দিনের কারাদণ্ড দেন আদালত।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!