ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের বর্তমান ভয়াবহ মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন।
বিশেষ করে অতি সম্প্রতি প্রবীন সাংবাদিক এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শফিক রেহমানের গ্রেফতার এবং রিমান্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন কংগ্রেসের জুডিশিয়ারী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য কংগ্রেসম্যান হাকিম জেফরি।
মার্কিন কংগ্রেসে নিউইয়র্ক এর বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকা থেকে নির্বাচিত ডেমোক্র্যাট দলীয় এই কংগ্রেসম্যান কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের একজন গুরুত্বপূর্ন সদস্যও বটে ।
গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসনের বৈদেশিক উপদেস্টা এবং বিএনপির বিশেষ দূত জনাব জাহিদ এফ সরদার সাদী ওয়াশিংটন ডিসির কংগ্রেস লংওয়ার্থ বিল্ডিং এ কংগ্রেসম্যান জেফরির সাথে এক বিশেষ জরুরী বৈঠকে মিলিত হলে তিনি এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১০০ মিলিয়ন ডলার (৮০০ কোটি টাকা) চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভের উপর দোষারোপের ব্যাপারে জনাব হাকিম জেফরী ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এই চুরির ঘটনা কোনভাবেই বাংলাদেশ ব্যাংকের কতিপয় কর্মকর্তার সহায়তা ছাড়া সম্ভব নয় বলে বিশেষজ্ঞদের মতামতের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করেন ।
উল্লেখ্য সাম্প্রতিক কালে ,বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ লোপাট ,বাংলাদেশের ভয়াবহ মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং সাংবাদিক শফিক রেহমানের মতো একজন দেশ বরেন্য সাংবাদিককে ভিত্তিহীন অভিযোগে গেফতার এবং রিমান্ডের বিষয়ে অবহিত করতে জনাব সাদী তার সাথে দেখা করেন।
জনাব সাদী তাকে জানান ,বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ মুজিবের প্রথম শাসনামলে (১৯৭২-৭৫) চালু হওয়া কমরেড সিরাজ শিকদারের বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড থেকে শুরু হয়ে বর্তমানে হাসিনার সময়ে গুম , খুন এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বহু গুনে বৃদ্ধি পেয়েছে । শুধু তাই নয় মানুষের বাক স্বাধীনতা এবং গনমাধ্যমের স্বাধীন মত প্রকাশের স্বাধীনতা আজ চরম ভাবে লংঘিত।
বৈঠকে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের জনগনের অকৃত্রিম বন্ধু জনাব হাকিম জেফরি গভীর মনোযোগের সাথে প্রতিটি বিষয়ে অবহিত হন এবং তিনি গভীর উদ্বেগের সাথে এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছেন বলে জানান । তিনি অবিলম্বে বিষয়গুলো নিয়ে কংগ্রেসের ফরেন এ্যাফেয়ার্স কমিটি , জুডিশিয়ারী কমিটি , ফাইন্যান্স কমিটি এবং বাংলাদেশ ককাসের সদস্য সহ সকল সদস্যের সাথে বিষদ ভাবে আলোচনা করবেন বলেও আশ্বাস দেন ।
তিনি আরও উল্লেখ করেন , গেলো বছরের প্রথমদিকে বাংলাদেশের চরম রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়েও তিনি এবং মার্কিন কংগ্রেসের অন্যান্য প্রভাবশালী সদস্যগন এই বিষয়ে গভীর উদ্বিগ্ন হয়ে বিবৃতি দিয়ে কংগ্রেসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি নিয়ে মার্কিন কংগ্রেস জুডিশিয়ারী কমিটির শুনানীর জন্য উপস্থাপন করতে সর্বান্তকর প্রচেষ্টা চালাবেন বলে জনাব জেফরি নিশ্চয়তা দেন।
ঐ সময় জনাব সাদী কংগ্রেসম্যান হাকিম জেফরির কাছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং সিনিয়ার ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শুভেচ্ছা বার্তা পৌছে দেন এবং বাংলাদেশের জনগনের অকৃত্রিম বন্ধু হিসাবে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও শহীদ কমরেড সিরাজ শিকদারের একমাত্র পূত্র শুভ্র শিকদার , বিশিষ্ট মার্কিন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব জ্যাকব মিল্টন এবং বিশিষ্ট সমাজসেবক ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেত্রী নীরা রাব্বানী প্রমুখ।
নির্ধারিত বৈঠকের পর কংগ্রেসম্যান হাকিম জেফরী এবং জনাব সাদী উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।