DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

মনে পড়ে রানা প্লাজার বিষ্ময়কন্যা রেশমার কথা ?

resma

দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ  রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১৭ দিন পর জীবিত উদ্ধার হওয়া বিস্ময়কন্যা রেশমার সংসারে এসেছে নতুন অতিথি। ফুটফুটে কন্যাসন্তান। নাম রাখা হয়েছে রিদওয়ানা ইসলাম রেবা।

গত ১০ই মার্চ ভোরে রাজধানীর মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালে জন্ম নেয় এ শিশুকন্যা।

মাস ছয়েক আগে ২য় স্বামী রাব্বিকে নিয়ে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট বেড়িয়ে এসেছেন রেশমা। বরিশালের ছেলে রাব্বিকে নিয়ে গত বছরের জানুয়ারিতে সংসার গড়েছিলেন রেশমা। কাজ করছেন ওয়েস্টিন হোটেলে। চার মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন তিনি।

গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালের বিপরীতে বাসায় স্বামী-সন্তানকে নিয়ে দিন কাটছে তার। কিছু দিন ধরে তার স্বামী রাব্বীর চাকরি নেই। আতাউর রহমান রাব্বী মানবজমিনকে জানিয়েছেন, তিনি কাজ করতেন একটি পত্রিকায়। পরে রিয়েল এস্টেট কোম্পানীতে। অনেকদিন ধরে গুলশান এলাকায় থাকছেন। রেশমাও থাকেন গুলশানে। যাওয়া-আসার পথেই তার সঙ্গে পরিচয়। এরপর বিয়ে। এক বছর ৩ মাসের বৈবাহিক জীবনে আমরা সুখেই আছি। এখন আমাদের সুখের সংসারে নতুন অতিথি এসেছে। তাকে নিয়ে খুশিতেই দিন কাটছে।

হোটেল ওয়েস্টিনের পাবলিক রিলেশন ও যোগাযোগ বিভাগের পরিচালক সেলিনা মোমেন  জানিয়েছেন, শুরু থেকেই রেশমা হাউজ কিপিং ও লন্ড্রির কাজ করছে। আর এখানে নারীর কাজের পরিবেশ খুব ভালো। তার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। রেশমার স্বামী রাব্বীর বাড়ি বরিশাল সদরে। তারা দুই ভাই এক বোন। তার পিতা ব্যবসা করতেন। রেশমাকে বিয়ের পর এখন রেশমার সঙ্গে গুলশানে থাকেন তিনি।

কন্যার জন্মের পর রেশমার মা জোবেদা খাতুন গুলশানে তার নাতনিকে দেখে যান। রেশমার কর্মস্থল হোটেল ওয়েস্টিনে চাকরির পর বেশ কয়েকবার তিনি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের বাড়িতে মাকে দেখতে যান।

ওয়েস্টিনে যোগদানের পর রেশমা প্রতিমাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা পাঠাতেন মায়ের জন্য। তবে বিয়ের পর থেকে তার টাকা পাঠানো অনিয়মিত হয়ে গেছে।

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ৩নং সিংড়া ইউনিয়নের কোশিগাড়ী গ্রামের কৃষক মৃত আনসার আলী ও গৃহিণী জোবেদা খাতুনের ২ ছেলে ও ৩ মেয়ের মধ্যে সবার ছোট রেশমা। তার ছোট ভাই সাদেক ঢাকায় একটি স্যুয়েটার ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেন।

বড় ভাই জাহিদুল ঘোড়াঘাটে ভাঙারির ব্যবসা করেন। বড় বোন আসমা ঢাকায় থাকেন। কাজ করেন একটি পোশাক কারখানায়। তার স্বামী রিকশা চালান ঢাকায়। বোন ফাতেমাও থাকেন ঘোড়াঘাটে। তার স্বামী কৃষি শ্রমিক।

রেশমা প্রথম  স্বামীর সঙ্গে পৃথক হওয়ার পর ট্র্যাজেডির মাত্র চার মাস আগে রানা প্লাজায় একটি গার্মেন্টসে কাজ নিয়েছিলেন।

২০১৩ সালের ২৪শে এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে নিহত হন ১ হাজার ১২৭ জন শ্রমিক। আহত হন এর দ্বিগুণের বেশি। উদ্ধারে নামে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সসহ একাধিক বাহিনী ও স্থানীয়রা।

কিন্তু ঘটনার ১০৮ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপে শাহীনা নামে এক জীবিত নারী শ্রমিকের সন্ধান পাওয়া যায়। তাকে জীবিত উদ্ধারের ২৯ ঘণ্টার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর তা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। ধসের ১৭ দিন বা ৪০৮ ঘণ্টা পর ১০ই মে বিকালে বেজমেন্ট থেকে অলৌকিকভাবে জীবিত উদ্ধার হন রেশমা।

এ ঘটনা মুহূর্তে দেশ ছাড়িয়ে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে ওই খবর। উদ্ধারের পর থেকে মূলত অগোচরেই চলে যান তারকাখ্যাতি পাওয়া রেশমা। সে সময় আমেরিকায় প্রবাসী হওয়ার প্রস্তাব পেলেও পরে রাজধানীর পাঁচতারকা ওয়েস্টিনে কাজ জুটে তার। 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!