ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, হিজাব পরে ক্লাসে আসায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছেন কোর্স শিক্ষক অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান।
গতকাল মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) বিভাগের শ্রেণিকক্ষে এ ঘটনা ঘটে। অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের প্রভাবশালী সদস্য। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্যও তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মনোবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী অনেক দিন থেকেই বোরকা পরে নিয়মিত ক্লাসে আসছিলেন। কিন্তু ওই শিক্ষক তাকে বোরকা পরে আসতে নিষেধ করেন। একই সঙ্গে যতদিন হিজাব পরে আসবে ততদিন ক্লাসের উপস্থিতিও দেয়া হবে না বলেও জানিয়ে দেয়া হয়।
এ হুমকির পর বেশ কয়েক দিন ক্লাসে ছাত্রীটির উপস্থিতি দেয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে ক্লাস উপস্থিতি ৬০ শতাংশের নিচে হলে কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে না।
তার সহপাঠীরা জানায়, ছাত্রীটি প্রতিদিন ক্লাসে উপস্থিত থাকলেও অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান তার নাম ডাকতেন না এবং উপস্থিতিও দিতেন না।
সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার ক্লাসেও একই ঘটনা ঘটায় ছাত্রীটি দাঁড়িয়ে তার হাজিরা দিতে বলেন। কিন্তু শিক্ষক আজিজুর রহমান তাকে হিজাব খুলে ক্লাসে এলেই হাজিরা দেয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন।
আজিজুর রহমান বলেন, ‘তুমি ছাত্র না ছাত্রী সেটা কীভাবে বুঝবো? বিশ্ববিদ্যালয়ে তোমার আইডেনটিটি কী?’ এর পরপরই তাকে ক্লাস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
এ ঘটনায় কয়েকজন ছাত্রী প্রতিবাদ করলে তাদেরও ক্লাস থেকে বের করে দেন এ শিক্ষক।
তবে ঘটনাটি অস্বীকার করে অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান বলেন, ‘হিজাব পরার কারণে তাকে বের করে দেয়া হয়নি। ওই ছাত্রীটি শিক্ষক ও বয়স্ক ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা করতে রাজি নয়। ওই দিনের ক্লাসেও সে আমার সঙ্গে অশ্রদ্ধাপূর্ণ আচরণ করেছে। যার কারণে তাকে ক্লাস থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনিনি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো পোশাক নির্দিষ্ট করে দেয়া নেই ,শালীনতাপূর্ন যে কোনো পোশাক পরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসতে পারে ।’
প্রসঙ্গত,এই অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান গত বছরও নাবিলা ইকবাল নামে তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে বোরকা পরে আসার কারণে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছিলেন।