DMCA.com Protection Status
title="৭

লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র হয়ে ইতিহাস গড়লেন সাদিক খান।

skhan1 copy

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  প্রথম মুসলমান হিসেবে লন্ডনের নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়লেন যুক্তরাজ্যের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা সাদিক খান।

পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এই নেতা শুধু লন্ডনেরই নয়, ইউরোপের কোনো রাজধানী শহরের প্রথম মুসলিম মেয়র হলেন।

সাদিক খান তার প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির জ্যাক গোল্ড স্মিথের চেয়ে প্রায় ১৩ শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছেন।

সাদিক খান ১৩ লাখ ১০ হাজার ১৪৩ ভোট পেয়েছেন, যা মোট ভোটের ৫৬ দশমিক ৮ শতাংশ। আর জ্যাক গোল্ড স্মিথ পেয়েছেন ৯ লাখ ৯৪ হাজার ৬১৪ ভোট, যা মোট ভোটের ৪৩ দশমিক ২ শতাংশ। সবশের্ষ ফলাফলে দেখা গেছে লন্ডন মেয়র নির্বাচনে ১৪টি এসেম্বলীর মধ্যে লেবার পার্টি ৯টি এসেম্বলীতে জয়ী হয়েছে বাকী ৫টিতে জয়ী হয়েছে কনজারবেটিভ প্রার্থী।

উল্লেখ্য লন্ডনে পাকিস্তানী বংশদ্ভুত ভোটার মাত্র ২ % এবং মুসলিম ভোটার মাত্র ১২ % । এমতাবস্থায় একজন অতি সাধারন অভিবাসী পরিবার থেকে আগত সাদিক খান ,অত্যন্ত প্রভাবশালী ইহুদী পরিবারের জ্যাক গোল্ডস্মিথকে হারিয়ে লন্ডনের মেয়র হওয়াটা রীতিমতো চমক বলা যায়।

ভোট গ্রহণের পর শুক্রবার সকাল ৮টা থেকেই শুরু হয় গণনা। কিছুক্ষণ পর থেকেই সাদিক খানের দিকে ফল আসতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত হার স্বীকার করে নেয় জ্যাক শিবির।

সাদিক জন্মানোর আগেই তার মা-বাবা পাকিস্তান থেকে ব্রিটেনে চলে যান। সেখানে জীবন চালাতে সাদিকের বাবা বেছে নেন বাসচালকের কাজ। আর তার মা ছিলেন খন্ড কালীন দর্জি।

তিন কামরার ছোটখাটো সরকারি আবাসনে অর্থকষ্ট ছিল সাদিকের শৈশবের নিত্য সঙ্গী।কিন্তু ছোটবেলা থেকেই মানুষকে সেবা করার তাগিদ ছিল তার মধ্যে। লেবার পার্টির রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার আগে তিনি একজন মানবাধিকার আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন।

অন্যদিকে সাবেক পাক ক্রিকেটার এবং হালের রাজনীতিবীদ ইমরান খানের প্রাক্তন স্ত্রী জেমাইমার ভাই বৃটেনের অন্যতম ধনী ইহুদী পরিবারের সন্তান জ্যাক গোল্ড স্মিথ। ধনী ব্যবসায়ী পরিবারে তার জন্ম। তাই ছোট বেলা থেকেই বিলাসবহুল জীবনযাপনেই অভ্যস্ত তিনি। নির্বাচনী প্রচারণার সময় কনজারভেটিভ পার্টির তরফ থেকে সাদিক খানের মুসলিম পরিচয়কে সামনে এনে ব্যপক নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হয়েছিল। এমনকি সাদিক খানের সঙ্গে উগ্রপন্থীদের যোগাযোগ আছে বলে প্রচারণা চালায় কনজারভেটিভ পার্টি। কিন্তু নির্বাচনে এর কোনো প্রভাব তৈরি হয়নি। 

এদিকে লেবার পার্টি এ বিজয়ের মাধ্যমে ৮ বছর পর আবারো সিটি হলের দখল নিয়েছে। এর আগে ২০০৮ সালে কনজাবেটিভ পার্টির বরিস জনসন পরপর দুইবার ক্যান লিভিংস্টোনকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। এবার তিনি মেয়র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করেননি।

এই বিজয়কে লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনের জন্যও একটি বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। করবিন গতবছর লেবার পার্টির দায়িত্ব নিয়েছেন। লন্ডনবাসীদের উদ্দেশে সাদিক খানের বার্তা ছিল, মেয়র হলে আগামী চার বছর টিউব ভাড়ার কোনো রকম পরিবর্তন করতে দেবেন না তিনি। আর লন্ডনে তৈরি হবে নতুন বাড়ি।

আর বিজয়ের পর জনতার উদ্দেশে সাদিক খান বলেন, 'আমাকে মানুষ পছন্দ করতে পারেন। কিন্তু লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত করবেন, তা অভাবনীয়।'

লন্ডনবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞা জানিয়ে তিনি বলেন, 'লন্ডন সব ভয়কে তাড়িয়ে আমাকে বেছে নিয়েছে, এজন্য আমি গর্বিত। এখন থেকে এই শহরে ভয় নয়, সব সময় রাজনীতি স্বাগত।' ভোটের ফল প্রকাশের পরে সাদিককে অভিনন্দন জানিয়েছেন জ্যাকের বোন জেমাইমা।

টুইটারে তিনি লিখেছেন, 'জ্যাকের প্রচারে ওর আসল স্বভাব প্রতিফলিত হল না। সেটাই দুঃখের।'

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!