ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ষোড়শ সংশোধনীর বাতিলের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিএনপি প্রমাণ করেছে যে তারা কখনোই জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী নয়। কারণ, বিএনপির জন্ম হয়েছে স্বৈরাচারের গর্ভ থেকে।
সাম্প্রতিক সময়ের হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, এই সরকারকে উৎখাত করার জন্য একাত্তরের পরাজিত শক্তি বহুবার চেষ্টা করেছে। বহু তৎপরতা চালিয়েছে। জ্বালাও-পোড়াও করে ব্যর্থ হওয়ার পর বিদেশি নাগরিক হত্যা করেছে। সেখান থেকেও তারা ব্যর্থ হওয়ার পর এখন গুপ্তহত্যা চালিয়ে সরকারকে অস্থিতিশীল করতে চায়। এই সমস্ত গুপ্তহত্যা চালিয়ে সরকারকে যে উৎখাত করা যাবে না, সেটা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে। কারণ, এই সরকারের ভিত হচ্ছে এ দেশের জনগণ। শতকরা ৮০ ভাগ জনগণ এই সরকারের পক্ষে আছে এবং বিশ্বাস করে বর্তমান সরকারের নেতৃত্বেই বাংলাদেশের সবকিছু এগিয়ে যাচ্ছে।
আজ শনিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হানিফ এসব কথা বলেন। ষষ্ঠ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনীত প্রার্থী ঘোষণা করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারক অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থী বলে ঘোষণা করেন হাইকোর্ট বিভাগ। গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে মন্তব্য করে বিএনপি।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘বিএনপি নেতারা যা বলছে, এটা বলা স্বাভাবিক। এই অবস্থানের মাধ্যমে বিএনপি আবারও প্রমাণ করেছে, তারা কখনোই জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী নয়। তারা বরাবরই জনগণের বিরুদ্ধে। যারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা যেতে চায়, তারা সব সময় জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে, সেটা আবার প্রমাণিত হয়েছে।’
আগামীকাল রোববার এই রায়ের বিরুদ্ধে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন বলেও জানান তিনি।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, বিএনপি প্রথম দুই ধাপ নির্বাচনের অংশ নেওয়ার পরই তারা বুঝতে পেরেছে যে জনগণ থেকে তারা ছিটকে পড়েছে। জনগণের রায় তাদের পক্ষে নেই। তাই এই নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে ওঠা বিভিন্ন অনিয়ম প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রার্থী বাছাই করা একটা দুরূহ কাজ। তৃণমূল পর্যায় থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মীর তালিকা থেকে প্রার্থী বাছাই কঠিন কাজ। এই কঠিন কাজটি করেছি তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সহযোগিতায়। এখানে যদি তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পাঠানো তথ্যের মধ্যে কোনো গরমিল থাকে, সমস্যায় পড়তে হয়। আমরা তারপরও চেষ্টা করেছি, যাচাই-বাছাই করে সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রার্থী মনোনয়ন দিতে। সাড়ে পাঁচ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে দুই–তিনজন এমন প্রার্থী, এটা খুবই নগণ্য সংখ্যা।’
তারপরও কোনো অভিযোগ এলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, যে দেশের জনগণ সরকারের পক্ষে আছে, সেই সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হতে পারে না। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কেন্দ্রীয় সদস্য আমিনুল ইসলাম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।