ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ প্রথমে অনুমতি দিয়ে পরবর্তিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দাড়ি কাটার নির্দেশ দেয়া সত্ত্বেও দাড়ি কাটতে রাজি না হওয়ায় এক মুসলিম সৈনিককে বরখাস্ত করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল টানাপড়েন। অবশেষে ‘অনাকাঙ্খিত সৈনিক’ আখ্যা দিয়ে মাখতুম হোসেনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হল।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল কোরের সৈনিক ছিলেন মাখতুম। ১০ বছর ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে তিনি কাজ করছিলেন তিনি।
সেনা সূত্রে জানা যায়, যখন মাকতুমহুসেন চাকরিতে যোগ দেন, তখন তার দাড়ি ছিল না। পরে তিনি কমান্ডিং অফিসারের কাছে আবেদন জানিয়ে ধর্মীয় কারণে দাড়ি রাখার অনুমতি চান। কমান্ডিং অফিসার প্রথমে মাখতুমকে দাড়ি রাখার অনুমতি দেন। তবে তিনি বলেন, দাড়ি রাখার পর নতুন করে ছবি তুলে পরিচয়পত্র বানাতে হবে এবং কর্মজীবন শেষ হওয়া পর্যন্ত তাকে দাড়ি রাখতে হবে।
সেই নির্দেশ মেনে নিয়েই দাড়ি রাখতে শুরু করেন মাখতুম। কিন্তু এরপর কমান্ডিং অফিসার জানতে পারেন, সৈনিকদের জন্য দাড়ি রাখা সংক্রান্ত বিধিটি সংশোধিত হয়েছে। নতুন বিধি জেনে নিয়ে কমান্ডিং অফিসার মাখতুমকে জানান, দাড়ি কেটে ফেলতে হবে।
কারণ ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মীদের মধ্যে শুধু শিখরাই ধর্মীয় কারণে দাড়ি রাখার অনুমতি পেতে পারেন। অন্য কোনো ধর্মে যেহেতু দাড়ি রাখা আবশ্যক নয় তাই শিখ ছাড়া অন্য কোনো ধর্মাবলম্বীকে সেনাবাহিনী দাড়ি রাখার অনুমতি দিতে বাধ্য নয়। দাড়ি রাখার অনুমতি বাতিল হওয়া সত্ত্বেও মাখতুম হোসেন দাড়ি কাটেননি।
কমান্ডিং অফিসার বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন বলে অভিযোগ করে তিনি কর্নাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ইতিমধ্যে মাখতুম হোসেনকে পুণের কমান্ড হাসপাতালে বদলি করা হয়। সেখানকার কর্তৃপক্ষও মাখতুমকে দাড়ি কেটে ফেলার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তিনি নির্দেশ মানতে অস্বীকার করেন। এর পরে সেনাবাহিনী ওই সিপাহিকে শোকজ করে। সন্তোষজনক উত্তর না মেলায় তাকে অবাধ্যতার অভিযোগে ১৪ দিনের জন্য ডিটেনশনে পাঠানো হয়।
শুরু হয় বিভাগীয় তদন্ত। সেই তদন্তের রিপোর্ট জমা পড়ে সশস্ত্র বাহিনী ট্রাইবুনালের বেঞ্চে। শেষে ট্রাইব্যুনাল মাখতুমকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয়। এখন চাইলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন তিনি।