ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার ক্ষেত্র তৈরির জন্য জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দল, জাসদকে সরাসরি দায়ী করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
একই সাথে এই দল থেকে একজনকে মন্ত্রী করার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে চরম প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ছাত্রলীগ আয়োজিত ‘দুই দিনব্যাপী বর্ধিত সভার সমাপনী’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সভায় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের এই ‘হঠকারী দল’ জাসদ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে সৈয়দ আশরাফ আরো বলেন, ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নামে ছাত্রলীগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জাসদ ছাত্রলীগ গঠন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জাসদ নামক বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদীরা সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে পরিচালিত করে। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ইতিহাসের একটি অংশ। কিন্তু জাসদের নেতা-কর্মীরা এই সফল মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছিল। বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার আগেই দেশকে তারা ছিন্নভিন্ন করার চেষ্টা করেছিল। তারা যদি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার সমস্ত পরিবেশ সৃষ্টি না করত, তবে বাংলাদেশ আজ একটি ভিন্ন বাংলাদেশ হতো।’
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে মন্ত্রী করার দিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জাসদ একটি হঠকারি সংগঠন। এদের একজনকে আবার মন্ত্রিত্বও দেয়া হযেছে। যার প্রায়শ্চিত্ত আওয়ামী লীগকে আজীবন করতে হবে।’
সৈয়দ আশরাফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আস্তে আস্তে দলকে সংগঠিত করেছেন। নির্বাচনে জয়লাভ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকলে দেশ আগেই অর্থনৈতিক অগ্রসরতা অর্জন করতো। শুধু হঠকারীদের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘পূর্বের ইতিহাস জেনে এই সব হঠকারীদের এড়িয়ে চলবেন। বিপ্লব বিপ্লব করলে বিপ্লব হয় না। কাজ করতে হবে। আপনাদের শিক্ষিত হতে হবে। আপনার মেধা জাতির জন্য কাজে লাগাতে হবে। তখন সোনার বাংলা এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বাস্তবায়ন হবে।’
ছাত্রলীগ সভাপতি মো: সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না, সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার প্রমুখ।
উল্লেখ্য,স্বাধীনতা পরবর্তী জাসদের ভূমিকা নিয়ে প্রায় বছর খানেক আগে দলটিকে নিয়ে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা সরব হয়েছিলেন। তখন রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনা হলেও তা স্তিমিত হয়ে পড়েছিল। এখন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক আবার বিষয়টি তুললেন।