দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে রাজনৈতিক বিভক্ততার সুযোগে জঙ্গি গোষ্ঠি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।
এতে ক্রমেই জঙ্গিরা আরো সাহস পাচ্ছে। এছাড়া এর ফলে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংতার আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
আজ ‘দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ পত্রিকার এক বিশ্লেষণে এমন বক্তব্য ওঠে এসেছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশে উগ্রপন্থীদের হামলা তীব্র আকার ধারণ করেছে। চরমপন্থীরা বাংলাদেশে বিদ্বেষ ও সহিংসতা ছড়াচ্ছে। জঙ্গী গোষ্ঠি তালিবান, আল কায়দা এবং আইএস ইসলামকে ব্যবহার করে বাংলাদেশে হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। যা সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে উৎসাহিত করছে। ৪৪ বছর আগে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করা এই দেশটির সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাধ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে এটি সবচাইতে বড় বাধা।
গত তিন বছর ধরে উগ্রপন্থিরা বাংলাদেশে অনেক সক্রিয়। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে তারা ধর্মনিরপেক্ষ ও মুক্তমনা লেখকদের আক্রমণ করেছে। ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনকে হামলার মধ্য দিয়ে তারা হত্যাকাণ্ড শুরু করে। এরপর যুক্তিবাদী, মুক্তমনাসহ ২০ জনকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। সম্প্রতি তারা সমকামী অধিকার কর্মী, হিন্দু ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের হত্যা করেছে।
এছাড়া বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করলে সহিংসতা আরো তীব্র আকার ধারণ করে। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সালে মুক্তমনা এক ব্লগারকে হত্যা করা হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামির নেতা কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়ার ঠিক ১০ দিন পরই ওই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে।
জামায়াতে ইসলামির শীর্ষ নেতাদের শাস্তি দেওয়ার পরে মুক্তমনা লেখক ও ব্লগারদের উপর আক্রমণ আরো বৃদ্ধি পায়। যার উদারহণ আজকের বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ আর কখোনোই চলমান রাজনৈতিক বিভাজন, উগ্রপন্থা ও সহিংসতার শিকার হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়ে সতর্ক হলেও খালেদা জিয়াকেও এই বিষয়টি হুমকি হিসেবে নেওয়া উচিত। সবকিছুকে রাজনীতিকরণ করা হলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেয়া যাবে না।
এই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখতে হবে। বাংলাদেশকে পাকিস্তানের দিকে ধাবিত হওয়ার পথ থেকে রক্ষা করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সূত্র: দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।