ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ রাজধানীর উত্তরার বৌদ্ধমন্দির সংলগ্ন খাল থেকে ৯৭টি পিস্তল, ৪৬২টি ম্যাগজিন, ১০টি বেয়োনেট ও সহস্রাধিক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে ৯৫টি সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোরের চাইনিজ পিস্তল ও স্থানীয়ভাবে তৈরি ২টি পিস্তল রয়েছে।
শনিবার বিকালে গোপন খবরের ভিত্তিতে তুরাগ থানার পঞ্চবটি এলাকায় বৌদ্ধমন্দিরের পেছনে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদের সহায়তায় পুলিশ এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে।
রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আরও অস্ত্র উদ্ধারের আশায় উদ্ধার অভিযান চলছিল। সার্চ লাইট জালিয়ে ডুবুরিরা তল্লাশি চালাচ্ছিল।
পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে র্যাব, পুলিশ, ও আর্মড পুলিশ ব্যাটলিয়নসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন।
উত্তরা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ম্যানেজার আরিফুজ্জামান শেখ বলেন, বিকাল পৌনে ৫টার দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে খালে তল্লাশি চালানোর জন্য তাদের কাছে ডুবুরি চাওয়া হয়।
পুলিশের চাহিদামতো সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সদর দফতর থেকে তিনজন ও টঙ্গী ষ্টেশন থেকে দু'জনসহ মোট পাঁচজন ডুবুরির একটি দল স্থানীয়ভাবে দিয়াবাড়ি খাল নামে পরিচিত ওই খালে তল্লাশি শুরু করে। এর আগেই পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ওই স্থানটি ঘিরে রেখেছিল বলে তিনি জানান।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক অপারেশন মেজর শাকিল আহমেদ ঘটনাস্থলে বলেন, 'তুরাগ নদীর একটি শাখা দিয়াবাড়ি খাল। খালটির অবস্থান উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টরের শেষ প্রান্তে। এর পাশেই মিরপুর-আশুলিয়া বেড়িবাঁধের প্রধান সড়ক।'
তিনি বলেন, 'খালে ৭ থেকে ৮ ফুট পানি রয়েছে ডুবুরিরা খালে তল্লাশি চালিয়ে একটি ব্যাগের ভেতর থেকে স্কচ টেপ দিয়ে মোড়ানো কার্টন উদ্ধার করে। ওই কার্টনের ভেতরেই পাওয়া যায় চীনের তৈরি ৯৫টি সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোরের পিস্তল এবং স্থানীয়ভাবে তৈরী দু'টি পিস্তল।'
পাশাপাশি ১০৪টি সিলভার বক্সের ভেতর সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোরের ১৮৯টি ম্যাগজিন, ১০টি গ্লোক পিস্তলের ম্যাগজিন এবং ২৬৩টি এসএমজির ম্যাগজিনসহ ৪৬২টি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া ওই কার্টনের ভেতর থেকে ৮৪০ রাউন্ড নাইন এমএম পিস্তলের গুলি, চায়নিজ পিস্তলের ২২০ রাউন্ড গুলিসহ মোট ১ হাজার ৬০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। গুলিগুলো টিফিন বক্সের মধ্যে ব্যাগের ভেতরেই পাওয়া যায় বলে তিনি জানান।
পুলিশ বলেছে, এলএমজির গুলি পাওয়া যাওয়ায় ওই খালে আরও অস্ত্র রয়েছে বলে তারা ধারণা করছে।
রাত সাড়ে ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই খালে আরও অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার হতে পারে এমন আশায় ডুবুরিরা তল্লাশি চালাচ্ছিল।
পুরো এলাকা র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছেন। সাধারণ মানুষতো দূরের কথা গণমাধ্যম কর্মীদেরকেও সেখানে যেতে দেয়া হচ্ছিল না।
ঘটনাস্থলে গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও উপস্থিত রয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের ডিসি বিধান ত্রিপুরাসহ পুলিশ কর্মকর্তারা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, শনিবার সকালে মাদারীপুরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ফায়জুল্লাহ ফাহিমের দেয়া তথ্যেই পুলিশ ওই খালে অভিযান চালিয়েছে।