ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশ এখন আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়, একটি পুলিশী রাষ্ট্র হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, পুলিশ যাকে খুশী তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করছে। মহিলা-শিশুদের ওপর নির্যাতন করছে প্রতিবাদ করা যাচ্ছে না। আইনের শাসন নেই বলে দেশের এই অবস্থা।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইস্কাটনে লেডিস কাবে ডক্টর এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. একে এম আজিজুল হক।
এ সময়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং খোঁজ খবর নেন।
দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দেশকে অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মুল্যায়ন করে দেশের স্বার্বভৌমত্ব আছে কী না। অবৈধ, অনির্বাচিত সরকার আজকে দেশ পরিচালনার নামে দেশকে বোধ হয় অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত। সেই ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে পারে শুধু দেশের মানুষ।
তিনি বলেন,এই সরকার ক্ষমতার আসার পর থেকেই দেশকে অন্যের হাতে তুল দেওয়া জন্য কাজ করছে। সেইজন্য বিডিআর হত্যাকান্ড দিয়ে এর সূত্রপাত করেছে। এখন খুন-গুম করে অবস্থা নিয়ন্ত্রনে রাখবে। তৎকালীর বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) হত্যাকান্ডের পর এই বাহিনীর মনোবল দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারনে সীমান্তে মানুষকে রক্ষা করতে পারছেনা বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি নেত্রী।
বিজিপি সীমান্তে থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে পারছেনা। আজ সীমান্তের ভেতরে ঢুকে (বিএসএফ) মানুষ মেরে যাচ্ছে। তারা (সরকার) একটি কোনো প্রতিবাদ করতে পারেনা। বাংলাদেশ আজ কোনো অবস্থায় চলে গেছে যে, মিয়ানমার পর্যন্ত হেলিকপ্টার দিয়ে আকাশ সীমা লঙ্ঘন করে। বিজিবি আজ কিছু করতে পারছেনা। কারন নিজেদের দেশের মানুষ হত্যা করে তারা দুর্বল হয়ে গেছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ‘দুর্বল শক্তির সরকার’ আখ্যা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘এই সরকার দিয়ে মানুষের কল্যান হতে পারেনা।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বদলে, পুশিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘পুলিশের মনমতো সব কিছু চলছে। তারা যাকে ইচ্ছা ধরে নিয়ে যাচ্ছে, ক্রসফায়ার দিচ্ছে, মহিলাদেরও নির্যাতন করছে। এসবের প্রতিবাদ করার কেউ নেই। প্রতিবাদ করলে তাদেরকে জেল-জুলুম, অত্যাচার সহ্য করতে হয়।
তিনি বলেন, দেশের আইন-আদালত, বিচারালয় কোনটাই নিরাপদভাবে কাজ করছেনা। দেশের মানুষ আজ অত্যাচারিত নির্যাতিত। দেশের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান খালেদা জিয়া।
ইফতার মাহফিলে আরো ড্যাবে মহাসচিব অধ্যাপক ডা. জেড এম জাহিদ হোসেন, সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. রফিকুল কবির লাবু, অধ্যাপক ডা. শহিদুল আলম, অধ্যাপক ডা. ডা. আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক ডা. যুগ্ম মহাসচিব এসএম ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. এবি ভূইয়া, অধ্যাপক ডা. আশরাফ উদ্দিন, অধ্যাপক ডা. এম আফতাব উদ্দিন, অধ্যাপক ডা. মো. নুরুন্নবী, দপ্তর সম্পাদক ডা. প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাস বাবু , ডা. মো. মাগফুর রহমানসহ ড্যাবে কেন্দ্রীয় ও সারাদেশের ড্যাবের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইসচেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল মান্নান, যুগ্ম মহাসিচব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হোসেন জীবন, এমরান সালেহ প্রিন্স, নির্বাহী কমিটির সদস্য দেওয়ান ডা. সালাহ উদ্দিন, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, রফিক চৌধুরী, মহিলা দলের সভানেত্রী নূরী আরা সাফা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল বারী বাবু , ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আব্দুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নেছারুল হক প্রমুখ।
পেশাজীবীদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক উপা-উপচার্য অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর মাহবুবুল্লাহ, জাহাঙ্গির নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মোস্তাহিদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, সাংবাদিক মাহফুজুল্লাহ, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যাক্ষ সেলিম ভূইয়া, মহাসচিব জাকির হোসেন, প্রেসকাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।