ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ গুলশান ট্র্যাজেডিতে ২০বিদেশী কুটনীতিক ছাড়াও আরও তিনজন বোসামরিক ব্যাক্তির নিহতের খবর নিশ্চিত হয়েছে।
এরা হলেন , ট্রান্সকম গ্রুপের(প্রথম আলো-ডেইলী স্টার) চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের নাতি ফারাজ হোসেন , ঢাকার একটি আর্ট গ্যালারির সাবেক প্রধান ইশরাত আখন্দ ও ভারতীয় তরুণী তারুশি অস্ত্রধারীদের হামলায় নিহত হয়েছে।
শনিবার সকালে জিম্মিদের উদ্ধারে কমান্ডো অভিযানের পর দুপুরে আইএসপিআরের সংবাদ সম্মেলনে শুধু ২০ জন বিদেশির মৃত্যুর তথ্যই জানানো হয়।
তবে ফারাজ ও ইশরাতের পরিবার দুজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। লতিফুর রহমানের মেয়ে সিমিন হোসেনের দুই ছেলের মধ্যে ফারাজ সবার ছোট।
ট্রান্সকম কনজ্যুমার প্রডাক্টসের বিপণন কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ তাহনুন ইশতিয়াক রিয়াদ বলেন, “দুই ভাইয়ের মধ্যে ফারাজ ছিল ছোট। অত্যন্ত চঞ্চল ছিল ছেলেটি। ফারাজ ট্রান্সকম গ্রুপে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজও করেছিল।”
শুক্রবার রাতে নিজে গাড়ি চালিয়ে গুলশানের ওই ক্যাফেতে ফারাজ গিয়েছিলেন বলে জানান রিয়াদ।
ডেএক্সওয়াই ইন্টারন্যাশনালের মানব সম্পদ বিভাগের পরিচালক ইশরাত ইনস্টিটিউট অফ এশিয়ান ক্রিয়েটিভসে ছিলেন। তিনি গ্রামীণফোন ও ওয়েস্টিন হোটেলেও কাজ করেছিলেন।
ভারতীয় তরুণী নিহতঃ
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ জানিয়েছেন গুলশানের রেস্তোরাঁয় অস্ত্রধারী জঙ্গিদের হামলায় ভারতীয় তরুণী তারুশি নিহত হয়েছেন ।
এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, “আমি অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ঢাকায় সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি ভারতীয় তরুণী তারুশি অস্ত্রধারীদের হামলায় নিহত হয়েছে।”
এর আগে শনিবার সকালে কমান্ডো অভিযানে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারির ওই জিম্মি সঙ্কট অবসান হওয়ার আগে গুলশানে সাংবাদিকদের কাছে তার জিম্মি হওয়ার খবর জানান তার বন্ধুর বাবা দাবিদার ধানমণ্ডির বাসিন্দা রাশেদ হাসান খান।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার (বার্কলে) পড়ুয়া তারুশি নামে ভারতীয় ওই তরুণী তার ছেলে রইস হাসান খানের বন্ধু। মেয়েটির বাবার নাম জিয়ান সাঞ্জীব।
“তারুশি বারিধারার একটি বাসায় থাকতো। সে শুক্রবার রাতে এখানে আটকা পড়েছিল। আজ সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।”
শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে একদল অস্ত্রধারী গুলশান ২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কে হামলা চালালে সেখানে বিদেশিরাসহ অনেকে আটকা পড়েন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে রাতেই জঙ্গিদের হামলায় নিহত হন বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন ও গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম; আহত অনেকেকে রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সকালে সেনা কমান্ডো অভিযানে ওই রেস্তোরাঁ থেকে ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়, যাদের সবাই বিদেশি নাগরিক। আর ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।এদের মধ্যে শ্রীলঙ্কার দুজন ও জাপানের এক নাগরিক রয়েছে।
অভিযানের সময় ছয় অস্ত্রধারী নিহত হন এবং একজনকে আটক করা হয়।
এছাড়া মৃত উদ্ধার বিদেশিদের মধ্যে ইতালির সাত জন ও জাপানের সাত নাগরিক থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।