DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে অচিরেই জাতীয় ঐক্যের কনভেনশন করবে বিএনপি

BNP-Flag-2 copy

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবশেষে হাসিনা সরকারে এবং মহাজোটে থাকা দলগুলোকে বাদ দিয়ে দেশের অন্সযকল রাজনৈতিক দলকে এক প্লাটফরমে এনে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী জাতীয় কনভেনশন করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিএনপি।

বামদলসহ সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই কনভেনশনের আয়োজন করছে বিএনপি।

সূত্র জানিয়েছে, এ সম্মেলনে দেশি-বিদেশি কূটনৈতিক ও পর্যবেক্ষকদের দাওয়াত দেওয়া হবে। ঐক্য গড়তে বৃহত্তর স্বার্থে কৌশল হিসেবে এবারের উদ্যোগে জামায়াতকে রাখা হচ্ছে না। জামায়াত ইস্যুতে বামদলসহ কয়েকটি দলের আপত্তি থাকায় এই কৌশল নেয় বিএনপি।

দু’একদিনের মধ্যেই দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে কনভেনশনের তারিখ ঘোষণা করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

সূত্র জানিয়েছে, বাম দলগুলোর মধ্যে বাসদ, জেএসডি, সিপিবি, গণফোরামসহ কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে বিএনপির প্রতিনিধি। তাদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা করে কনভেনশনের বিষয়ে একমত হয়েছে।

দু’একদিনের মধ্যেই দলগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বসবেন খালেদা জিয়া। সেখানেই ঐক্য গড়ার কর্মসূচি সাজানো হবে। জামায়াতকে বাদ দেয়ার শর্তে ঐক্য গড়তে রাজি হয়েছে বামদলগুলো। এজন্য বিএনপিও মনে করছে, বৃহত্তর স্বার্থে জামায়াত একে মেনে নিবে।

বাংলাদেশে থাকা বিদেশি কূটনীতকরা অবশ্য বিএনপির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।

সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি মনে করছে দেশ এখন সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা নষ্ট হচ্ছে। বিরাজমান রাজনৈতিক সংকটের কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আর এজন্য দায়ী আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার। তাই দেশকে অনিশ্চিত ভয়াবহতা থেকে রক্ষার জন্য জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। জাতীয় ঐক্য গড়তে বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারকে প্রস্তাব দেয়া হলেও তা গ্রহণ করেনি। এজন্য বিএনপি সমমনা দলগুলোর বাইরেও সরাসরি সরকারে রয়েছে এমন দল বাদ দিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে চায় রাজনৈতিক অঙ্গনে। এই ঐক্য গড়ে তুলতে পারলে সন্ত্রাস বিরোধী জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে বলেই মনে করছেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিশ দলীয় ঐক্যজোটের নেতারা।

এ কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে নতুন করে তৎপরতা বৃদ্ধি পাবে দলটির। এই ফাঁকে বিএনপি সারা দেশে নিজেদের গুছিয়ে ফেলতে পারবে। নিজেদের রাজনৈতিক শক্তিকে সু-সংহত করে নতুন ইমেজে ফিরতে পারবে। কর্মসূচির মাধ্যমে তৃণমূলের নেতাকর্মীদেরও চাঙা করা যাবে। এজন্য কেন্দ্র থেকে সকল নেতা-কর্মীকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনাও ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে। কনভেনশনে বিএনপি চেষ্টা করবে সুশীল সমাজকে তাদের রাজনৈতিক ঐক্যে নিয়ে আসতে।

এজন্য সমাজের সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক, পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। তাদের উপস্থিত করতে নিচ্ছে বিভিন্ন উদ্যোগ। সন্ত্রাসবিরোধী এই কনভেনশনকে জাতীয় মাত্রার রূপ দিতে চাচ্ছে বিএনপি। কনভেনশন সফল করতে ইতিমধ্যে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দলটির সিনিয়র নেতাদের নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছেন। খোঁজ নিচ্ছেন তৃণমূলের।

দলের আগের এমপি ও ভবিষ্যতে যারা নির্বাচন করতে ইচ্ছুক তাদেরকে মাঠে নামতে বলেছেন। গণসংযোগের মাধ্যমে বিএনপির এ বার্তা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিতে নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এ ঐক্যর জন্য কাজ করতে বলা হয়েছে। দলীয় এ নির্দেশনা কে কতটুকু বাস্তবায়ন করছে তা মনিটরিং করা হবে কেন্দ্র থেকে বলে জানিয়েছেন বিএনপির এক সূত্র।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটর সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, জঙ্গিবাদ দমনে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও দায়বদ্ধহীন একটি সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার কায়েমের লড়াই চলছে। এই লড়াইকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য একটার পর একটা নতুন নতুন ইস্যু সৃষ্টি করা হচ্ছে। একটা ইস্যুর নিচে একটা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ইস্যু সামনে নিয়ে আসা হয়েছে।

সরকার এই জঙ্গি ইস্যু জিইয়ে রাখতেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্যের প্রস্তাবে রাজি হয়নি সরকার। আমরা বিশ্বাস করি, কোনো প্রশাসন বা পুলিশ দিয়ে এ ধরনের কার্যক্রম দমন করা যায় না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এটা করতে হয়। কিন্তু তাতে সরকার আগ্রহী নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এর মূল কারণ হলো এই ইস্যুটা জিইয়ে রাখতে হবে।

যাতে জনগণ শেয়ারবাজারে লুট, ব্যাংকে লুটের কথা ভুলে যায়, অত্যাচার-নিপীড়ন, খুন-অপহরণ, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির কথা ভুলে যায়। কিন্তু চাইলে কি সব ভোলা যায়? যারা ভিকটিম, তারা কখনো ভুলবে না বলেও উল্লেখ করেছেন বিএনপির এই নেতা।

অপরদিকে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান সরকার আর জঙ্গিদের আদর্শের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। জঙ্গিরা মনে করে, তাদের আদর্শে দেশ চলবে। আর সরকার মনে করে, তাদের ইচ্ছামতো দেশ চলবে। তারা একে অপরের আদর্শ ধারণ করেছে। ওদের থেকে মুক্ত হওয়া প্রয়োজন। আজ জঙ্গিবাদের ব্যর্থতা যখন তীব্রভাবে সরকারের ওপর পড়েছে, তখন তারা আরেকটা চাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!