ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ কাংখিত পদ না পেয়ে এবং দলে তার যথাযথ মুল্যায়ন না হওয়ায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগামের পরিশ্রমী নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান দু-এক দিনের মধ্যে পদ ছাড়ার ঘোষণা দিতে পারেন । শুধু পদ নয়, বিএনপির রাজনীতি থেকেও তিনি সরে দাঁড়াতে পারেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রের ভাষ্য, নোমান এবার বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হতে আগ্রহী ছিলেন। তিনি এই পদ পেতে পারেন বলে দলে জোরালো আলোচনাও ছিল। কিন্তু তাঁকে ফের ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে। এতে তিনি মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন।
জানতে চাইলে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, তিনি ভাইস চেয়ারম্যান পদে আর থাকতে চান না। দু-এক দিনের মধ্যে অবস্থান জানাবেন।
বিএনপির রাজনীতি ছাড়বেন কি না—এমন প্রশ্নে নোমান বলেন, ‘দল থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য আমার ওপর চাপ আছে। আমার নেতা-কর্মীরা এই চাপ দিচ্ছেন। তবে পদ আমি ছাড়ছি। আর দল ছাড়ছি কি না, তা দু-এক দিনের মধ্যে জানানো হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে নতুন মুখ হিসেবে জায়গা পেয়েছেন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ। তাঁরা দুজনই বৃহত্তর চট্টগ্রামের বাসিন্দা। নোমানও চট্টগ্রামের বাসিন্দা।
এর আগে ২০০৯ সালেও নোমান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হতে পারেন বলে দলে আলোচনা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, পরপর দুবার প্রত্যাশিত পদ না পেয়ে নোমান বেশ আশাহত হয়েছেন।
গত শনিবার বিএনপির নির্বাহী কমিটি ঘোষণার পরপরই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন মোসাদ্দেক আলী ফালু। একই দিন নিজের নাম প্রত্যাহার করার আবেদন জানিয়ে চিঠি দেন সহপ্রচার সম্পাদকের পদ পাওয়া শামীমুর রহমান।
কমিটিতে প্রত্যাশিত পদ না পেয়ে বিএনপির নেতাদের একটি বড় অংশ হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তাঁদের অনেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ার চিন্তা করছেন।
নোমানের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপির এই নেতা প্রত্যাশিত পদ না পাওয়ায় তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীরাও প্রচণ্ড হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাঁদের অনেকে মনে করেন, নোমানের উচিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে না থাকা। শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনেকে তাঁকে দল ছাড়ার জন্যও চাপ দিচ্ছেন।
চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘চট্টগ্রামের প্রায় বড় সব নেতা নোমান ভাইয়ের হাতে গড়া। আজ অনেকেই কেন্দ্রীয় বড় পদ পেয়েছেন। অথচ তাঁকে (নোমান) পরপর দুবার অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। তাই আমরা মনে করি, এই দলে থেকে সম্মান নষ্ট করার আর কোনো প্রয়োজন নেই।’