ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ পাকিস্তানের বেলুচিস্তান ইস্যুতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অবস্থানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে বাংলাদেশ। ভারত সফররত বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এও বলেছেন যে, ঢাকা দ্রুতই বেলুচিস্তানে পাকিস্তানের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে নীতির ঘোষণা দেবে।
দ্য হিন্দুর সঙ্গে আলাপচারিতায় ইনু বলেন, বেলুচিস্তান পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর রোষাণল প্রত্যক্ষ করছে যেই বাহিনী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সৃষ্টির আগে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের টার্গেট করেছিল।
মি. ইনু বলেন, ‘জাতীয়তার আকাঙ্ক্ষা মোকাবিলা প্রশ্নে পাকিস্তানের ট্র্যাক রেকর্ড অত্যন্ত বাজে। ১৯৭১ সালের পরাজয় থেকে তারা কিছুই শেখেনি। তারা দমন-পীড়নের একই নীতি চর্চা করে চলেছে। আর এখন টার্গেট করছে বেলোচ জাতীয়তাবাদীদের।’
তিনি আরো বলেন, ‘স্বাধীনতার সংগ্রামগুলোর প্রতি সমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবে বাধ্য। আর দ্রুতই আমরা বেলুচিস্তান নিয়ে আনুষ্ঠানিক নীতির ঘোষণা দেবো।’
দ্য হিন্দুর রিপোর্টে বলা হয়, বেলুচিস্তানের পরিস্থিতির সঙ্গে ১৯৭১ এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের তুলনা করে ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর মন্তব্য করার একদিন পরই মি. ইনুর কাছ থেকে একই ধরনের মন্তব্য আসলো।
মি. ইনু তার ভারত সফরে ৩ দিন দিল্লিতে থাকবেন। সফরে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তান তাদের রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদিতে সামরিক বাহিনীর আধিপত্যের কারণে কার্যকর গণতন্ত্রে পরিণত হতে ব্যর্থ হয়েছে। এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে দেয় কেন তারা নিজেদের ‘ঐতিহাসিক ভুল’ থেকে শিক্ষা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, জাসদের এই নেতা আরো বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী কৌশলের অংশ হিসেবে ভারত ও বাংলাদেশে ‘তথ্য আদান প্রদান বিষয়ে একটি সমোঝতা স্মারকে’ সম্মত হয়েছে। এটা সন্ত্রাসীদের টার্গেট করে আগাম হস্তক্ষেপ করার বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
ইনু আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ চায় ইসলাম ও ইতিহাসের বিবৃতি নিয়ন্ত্রণের যৌথ উদ্যোগে অংশীদার হবে ভারত যা ১৯৭১ এর স্মৃতিকে রক্ষা করবে।’
দ্য হিন্দুর রিপোর্টে আরও বলা হয়, বিগত কয়েক বছরে ঢাকা কয়েকটি ঘটনা শনাক্ত করেছে যেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানি কূটনীতিকরা সন্ত্রাসী পরিকল্পনায় জড়িত বলে জানা যায়।
ইনু বলেন, ‘পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ ছড়ায়। আর পাকিস্তানের নীতিগুলোর নিষ্ফলতা নিয়ে তাদের মুখোমুখি হওয়া প্রয়োজন। এসব নীতি এখন পর্যন্ত পাল্টাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা।’
পাকিস্তানের কৌশল দক্ষিণ এশিয়া ও সার্কের আঞ্চলিক সহযোগিতার উদ্যমের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে সতর্কতা প্রকাশ করেন ইনু।
তিনি বলেন, জাতীয়তা ইস্যু এবং আন্তঃ সীমান্ত সহিংসতা ছড়ানোর বিষয়গুলোতে পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক নীতির পরিণতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ।
ইনু বলেন, ‘ইসলামাবাদকে ব্যাখ্যা করতে হবে দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তঃ সীমান্ত সন্ত্রাসনবাদ ছড়িয়ে দিয়ে এবং নিজেদের ভূখণ্ডে বেলোচদের মতো গণতান্ত্রিক জাতীয়তা দমন করে তারা কি অর্জন করতে চায়।’