ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ কেন্দ্রীয় কারাগারের পুরনো ভবনের জমিতে আবাসিক হল নির্মাণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রায় পুলিশি হামলার প্রতিবাদে টানা আন্দোলনের ২৩তম দিনে ধর্মঘট পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
এর পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন তারা। এতে অচল হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি। আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় ভিসি ভবনে তালা দিয়ে ধর্মঘট শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সবক’টি ভবনের ফটকে তালা দেন তারা। কোনো বিভাগে কাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। ক্যাম্পাসে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের উপস্থিতিও তুলনামূলক কম ছিল। ধর্মঘটে ক্যাম্পাস কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
এদিকে সকাল সাড়ে ৯টায় পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারে সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন শিার্থীরা। এতে যাত্রাবাড়ী, বাবুবাজার সড়ক, গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসব সড়কের আশপাশের বেশির ভাগ দোকান বন্ধ হয়ে যায়।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের সাথে যোগ দেন। তবে আন্দোলনে সমর্থনের নামে তারা বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের।
আন্দোলনের কারণে পুরান ঢাকাবাসীর সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, আবাসিক হল আমাদের অধিকার। এ অধিকার থেকে ১১ বছর ধরে বঞ্চিত জবি শিার্থীরা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন মানেই পুরান ঢাকার উন্নয়ন। এ যৌক্তিক অধিকার আদায়ে তাদের রাজপথে নামতে বাধ্য করেছে প্রশাসন। এ দাবি আদায়ে শিার্থীদের পাশে থেকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তারা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকেও তাদের আন্দোলনে সংহতি জ্ঞাপন করার অনুরোধ জানান শিক্ষার্থীরা।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যারয়ের হল আন্দোলনের সাথে আমি এক মত পোষণ করে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, অনতিবিলম্বে সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দ দিয়ে আবাসিক সমস্যার সমাধান করতে হবে। আর এই জায়গাটুকু বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দ দিলে ছাত্র-শিক্ষকদের আবাসন সমস্যার সমাধান হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক, তাই সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে এক হয়ে আন্দোলন করে দাবি আদায় করার আহবান করছি।
এ দিকে হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক ও সাধারণ সম্পাদক আসিফুর রহমান বিপ্লব বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন এবং শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি অবিলম্বে মেনে নিন। অতীতের মতো এ আন্দোলনেও ছাত্রদল পাশে থাকবে বলে জানান তারা। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কেন্দ্রীয় কারাগারের পুরনো ভবনের জমিতে চার নেতার নামে আবাসিক হল নির্মাণের দাবিতে ২ আগস্ট থেকে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিার্থীরা। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রায় হামলা চালায় পুলিশ। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।