ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ এবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী খুনি জিয়াউর রহমান ও খন্দকার মোশতাকের মরণোত্তর বিচার দাবি করেছেন।
তিনি সরকারের কাছে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করে জিয়াউর রহমানসহ অন্যান্য পরিকল্পনাকারীর মুখোশ উন্মোচনের দাবি জানান।
জাতীয় শোক দিবস স্মরণে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ দাবি জানান।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের হলরুমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম । অনুষ্ঠানে প্রথম পর্যায়ে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। পরে তার অনুপস্থিতিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও বাংলাদেশ বার-কাউন্সিলের সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল হক আলো, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহীনুর রহমান, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মেম্বার অধ্যাপক ড. আনোয়ারা বেগম প্রমুখ।
জাতির পিতাকে হত্যার পর খুনি জিয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে পাকিস্তানী আদর্শে দেশ পরিচালনা করেন উল্লেখ করে হানিফ বলেন, বিএনপি পাকিস্তানী আদর্শের দল। পাকিস্তানের এজেন্ডা বাস্তবায়নেই এ দলটি নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশে তাদের রাজনীতি করার সময় ফুরিয়ে এসেছে বলেও জানান।
পাকিস্তানী আদর্শের এ রাজনীতিবিদদের নির্মূল করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তা না হলে বাঙালী জাতির বিভক্তি রোধ করা যাবে না।
বিএনপি’র এক পলাতক কর্মী রাজধানীতে রিক্সা চালায় দেখে মির্জা ফখরুল ইসলাম আবেগ ধরে রাখতে পারেননি, তার কান্না পেয়েছে উল্লেখ করে হানিফ বলেন, এ কর্মীই যখন পেট্রোলবোমা মেরে, গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, তখন তার এ কান্না কোথায় ছিল?
তিনি বলেন, বিএনপি’র এসব পলাতক কর্মীরা বিভিন্ন পরিবারের কর্তা ব্যক্তিকে হত্যা করে তাদের পথে বসিয়েছে, কত শিশুর উপর পেট্রোলবোমা হামলা চালিয়ে পঙ্গু করেছে, সে খবর কি ফখরুল সাহেব রেখেছেন? রাখেননি। কিন্তু তার কর্মী রিক্সা চালায়, এতে তার কান্না পায় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি খুনির দল, হত্যাকারীর দল। আপনাদের চোখে তাই পানি মানায় না।
ফখরুলকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর বিএনপি কর্মীরা আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগে ভোট দেয়ার জন্য পূর্ণিমা, সেফালীদের ধর্ষণ করেছে। তখন কোথায় ছিল আপনার এ কান্না? তখনতো কর্মীদের এ অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখেননি। বরং বাহবা দিয়েছেন। আর আজ মায়া কান্না কাঁদছেন!
হানিফ বলেন, আজ জাতির কাছে প্রমাণ হয়ে গেছে, বিএনপি-জামায়াত পাকিস্তানের এজেন্ট, এরা এ বাংলায় থাকলে দেশের উন্নয়ন দুরুহ হয়ে যাবে। তাই বাংলাদেশকে ২০২১ সালে মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে এই অসমশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং এদের নির্মূল করতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে বর্তমানে যে ঐক্য গড়ে উঠেছে, তা ধরে রেখে শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। তাহলেই এ অপশক্তিকে প্রতিহত করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলা যাবে এবং তাঁর আত্মা শান্তি পাবে।
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাক্ষীদের জবানীতে উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধু হত্যার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন জিয়াউর রহমান। আর তার কুপুত্র তারেক রহমান ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড।
তিনি বলেন, বিএনপির এখন মূল টার্গেট হলো শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। তাঁকে হত্যা করতে পারলেই দেশের উন্নয়নকে রুখে দিয়ে তারা এ দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারবে । তাই পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর প্রেসক্রিপশনে তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
কামরুল বলেন, শেখ হাসিনাকে রক্ষা ও দেশের অগ্রগতির চাকা সচল রাখতে ওই অপশক্তিকে নির্মূল করে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে।