ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ জঙ্গিবাদ মোকাবিলার পাশাপাশি ধর্মনিরপেক্ষতা এবং বহুত্ববাদ বজায় রাখার লড়াইয়ে বাংলাদেশের হাসিনা সরকারের পাশে থাকার জন্য বিশ্বের সমর্থন চাইল ভারত।
নয়াদিল্লিতে ইস্ট ওয়েস্ট সেন্টারের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রারম্ভিক বক্তৃতায় ভারতের পররাষ্ট্র শসচিব এস জয়শঙ্কর শুক্রবার বলেন, কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছে বাংলাদেশের সরকার। এই মুহূর্তে সমালোচনার চেয়ে সমর্থন পাওয়াটা তাদের বেশি প্রয়োজন। ভারত বরাবর তাদের পাশে থেকেছে। আন্তর্জাতিক মহলেরও উচিত ঢাকার পাশে দাঁড়ানো।
শনিবার কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা এ খবর দিয়েছে।
পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার বিষয় উল্লেখ করে বলেন, খুবই উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদকে রক্ষা করা না গেলে সেখানে জঙ্গিপনা আরও বাড়বে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদক্ষেপগুলি অবশ্যই সমর্থনযোগ্য, বিরোধিতা করার কোনো প্রশ্নই নেই। সমগ্র বিশ্বেরও উচিত এই সময়ে তাঁর পাশে দাঁড়ানো।
জয়শঙ্কর আরও বলেন, সন্ত্রাসবাদ কোনও একটি দেশের একার সমস্যা নয়। যাঁরা হাত গুটিয়ে থাকবেন, তাঁদের জানা উচিত-সন্ত্রাস তাঁদের দেশেও পৌঁছতে সময় লাগবে না।
আনন্দবাজার লিখেছে, চীনকে খোঁচা দিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বেজিংয়ের সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক বহুমাত্রিক। বহু বিষয়ে দু’দেশ সহমত। কিন্তু অন্য দেশের সন্ত্রাসবাদীর মোকাবিলায় চীনের বাধা দেওয়া উচিত নয়। সম্প্রতি মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণার প্রশ্নে জাতিসংঘের উদ্যোগে চীন বাধা দিয়েছে। জয়শঙ্কর সেই প্রসঙ্গটিরই উল্লেখ করেছেন।
পত্রিকাটি লিখেছে, কাশ্মীরে সাম্প্রতিক অশান্তি ও পাঠানকোটের হামলায় পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়েও এ দিন বলেন জয়শঙ্কর। বলেন, এটা শুধু ভারতের সমস্যা নয়। বিশ্বের বড় শক্তিগুলো বিষয়টা না বুঝলে সন্ত্রাসের আগুনে তাদেরও পুড়তে হবে। ভাল সন্ত্রাস বা খারাপ সন্ত্রাস বলে কিছু হয় না।
আনন্দবাজার লিখেছে, ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের মন্তব্য নিয়ে আমেরিকার ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অব সাউথ এবং সেন্ট্রাল এশিয়া অ্যাঞ্জেলা অ্যাগিলার বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে আমরাও জয়শঙ্করের সঙ্গে একমত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি কয়েক দিন আগেই ঢাকা সফরে গিয়ে হাসিনা সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ঘোষণা করেছেন, সন্ত্রাসের একটিও ভাল দিক নেই। সেটা সব সময়েই খারাপ।
তবে হাসিনা প্রশাসন যে ভাবে জামাতে ইসলামি নেতা মির কাশিম আলির ফাঁসি দিয়েছে, সে বিষয়ে আমেরিকার প্রশ্ন রয়েছে বলে তিনি জানান। অ্যাঞ্জেলা বলেন, বিচার প্রক্রিয়া সব সময় স্বাধীন এবং স্বচ্ছ হওয়া দরকার বলে তাঁরা মনে করেন।