ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আজ ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দুর্গাপূজা পরিদর্শন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দূর্গা পুজা শুধু হিন্দুদের নয়, এ আমাদের সবার উৎসব,তাই ধর্ম নির্বিশেষে আমাদের সকলের এই উৎসব আনন্দে অংশ নেয়া উচিৎ।তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ধর্মের নামে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলতে দেওয়া হবে না।
শারদীয় দুর্গোৎসবের সপ্তমীতে শনিবার বিকালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যান সরকার প্রধান। তিনি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানান এবং তাদের সার্বিক কল্যাণ কামনা করেন।
গত দুই বছরে বিভিন্ন স্থানে পুরোহিতদের উপর জঙ্গি হামলার পর এবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দুর্গাপূজা হচ্ছে; যদিও গুলশান হামলার পর আভিযানের কারণে কোনো হুমকি দেখছেন না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সরকার সব সময় কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে যাচ্ছে এবং নিয়ে যাবে। এ দেশে জঙ্গিবাদের কোনো উত্থান হবে না। ধর্মের নামে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বরদাশত করব না।
ধর্ম নিরপেক্ষতার নীতি নিয়ে বাংলাদেশের গড়ে ওঠার ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এক হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এদেশ স্বাধীন করেছিল। এখানে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের রক্ত মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।এখানে সবাই সবার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে, সেই পরিবেশ আমরা তৈরি করতে চাই। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আসুন, সকলে মিলে একসঙ্গে আমরা এই দেশকে গড়ে তুলি।
নিজের ধর্ম পালনের পাশাপাশি অন্যের ধর্মের প্রতি সম্মান দেখাতেও সবার প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। উন্নত, সমৃদ্ধ ও শান্তিময় বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে প্রার্থনা করার আহ্বানও জানান তিনি।
ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুক্রবার শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দেবী বন্দনায় এক ভক্ত। মন্দির পরিদর্শনের সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন তার উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজি মো. সেলিম। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত সেন, সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল, ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ডিএম চ্যাটার্জি, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার রায়ও উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে প্রধানমন্ত্রী রামকৃষ্ণ মিশনে পূজামণ্ডপে পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি বলেন, সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় তার সরকারের আমলে বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। প্রত্যেক ধর্মের মানুষ, প্রতিটি উৎসব যেনো শান্তিপূর্ণভাবে যেন পালন করতে পারে।
আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির কথা তুলে ধরে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সমগ্র বাংলাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে যার যার ধর্ম শান্তিপূর্ণভাবে পালন করবে, এটাই আমাদের নীতি। বাংলাদেশের সবার মধ্যে সম্পতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ ও বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যেক ধর্মের মানুষ সম্মানের সাথে যার যার উৎসব পালন করবে। সেই পরিবেশটাই গড়ে তুলতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। প্রতিটি ধর্মের উৎসব সবাই যেন মিলে পালন করতে পারে, সেটাই নিশ্চিত করতে হবে।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমসহ ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পুরোহিত ও হিন্দু ধর্মাবলম্বী নেতারা।