ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা না ওঠা পর্যন্ত দেশটির নাগরিকদেরও ইরানে ঢুকতে দেবে না ইরান। সাত মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার পাল্টা হিসেবে ইরান এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
শনিবার তেহরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র যতদিন না তাদের অপমানকর ও অপরাধমূলক নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেবে, ততদিন কোনো মার্কিন নাগরিক ইরানে প্রবেশ করতে পারবে না। খবর ইন্ডিপেন্ডেন্টের। ইরানিয়ান কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রের চরমপন্থার বিরুদ্ধে নিজেদের সিদ্ধান্তকে ‘বড় উপহার’ বলে মন্তব্য করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের সাত দিনের মধ্যেই সাত মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। তার আদেশ অনুযায়ী ইরান, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইয়ামেনের অধিবাসীরা আগামী ৩ মাস যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ভিসা পাবেন না।
পাশাপাশি ওই সাত দেশের অধিবাসী আগামী ৪ মাস দেশটির অভিবাসী আবেদনের বাইরে থাকবে। শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ সংক্রান্ত এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন।
ট্রাম্পের এই আদেশের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। অন্যদিকে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আদেশটি বাতিলের পাশাপাশি যুদ্ধপিড়ীত এবং অন্যান্য সমস্যায় থাকা মানুষকে দেশটিতে আশ্রয় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের অনৈতিক সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছেন, এখন সময় সামনে এগিয়ে যাবার। দুই জাতির মধ্যে সম্পর্কের দেয়াল তৈরির নয়। আর যারা এই দেয়াল বানাচ্ছে তারা হয়তো ভুলে গেছে, অনেক আগেই বার্লিনের পতন হয়েছে।
শক্তি প্রদর্শনে ইরানের নৌ-মহড়াঃ
ভারত মহাসাগরে বিশাল সামরিক মহড়া চালানোর পরিকল্পনা করেছে ইরানের নৌবাহিনী। এই মহড়া চালানির উদ্দেশ্য হলো দেশের সামরিক শক্তি বাড়ানো এবং তার প্রদর্শন করা। তবে এখন পর্যন্ত জানা যায়নি যে এই মহড়ায় নতুন কী কী অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম যোগ দেবে।
ফেব্রুয়ারি মাসেই ভারত মহাসাগরের এই সামরিক মহড়া হবে বলে জানিয়েছেন ইরানের নৌবাহিনীর কমান্ডার কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল হাবিবুল্লাহ সাইয়্যারি। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এই সামরিক মহড়া ইরানের ক্ষমতা বুঝিয়ে দেবে। খুব শিগগিরই নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র, সাবমেরিন, ডেস্ট্রয়ার সমেত যুদ্ধজাহাজও প্রকাশ্যে আনা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, বাণিজ্যিক জাহাজ ও তেল ট্যাংকারের নিরাপত্তার জন্য এডেন উপসাগর ও বাবুল মান্দাবসহ গভীর সাগরে নিজেদের উপস্থিতি এবং প্রতিরক্ষা মিশনের উপর ইরানের নৌবাহিনী বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
এ পর্যন্ত জলদস্যুদের বহু হামলা ও হামলার পরিকল্পনাকে নষ্ট করে দেওয়াতে ইরানের নৌবাহিনী আগেও সফল হয়েছে। এরা প্রায়ই জলদস্যুতার বিরোধী আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইরানের নৌবাহিনী এই মহড়া চালিয়ে আসছে।