ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুলের (৪২) মৃত্যু পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরুর গুলিতেই হয়েছে বলে দাবি করেছেন সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও সাবেক শিল্প উপমন্ত্রী হাসিবুর রহমান স্বপন। তবে মেয়রের দাবি, গুলিতে নয়, ককটেলের আঘাতে শিমুল মারা গেছেন।শুক্রবার দুপুরে এ খবর পাওয়ার পর পুলিশের সহায়তায় পালিয়েছেন মেয়র মীরু।
শাহজাদপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সাংবাদিক শিমুলের জানাজা পূর্ব এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় এমপি স্বপন প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় নেতাকর্মীর বরাত দিয়ে বলেন, ‘পৌর মেয়র মিরু নিজে তার শর্টগান দিয়ে বাড়ি থেকে পর পর ৫টি গুলি করেন। যার একটি শিমুলের চোখে ও মাথায় বিদ্ধ হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘শাহজাদপুরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কোন দ্বন্দ্ব বা বিভেদ নেই। মেয়র নিজে ও তার দু’ভাই এবং তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে পৌর শহরে সন্ত্রাস করছিলেন। সাংবাদিক শিমুল পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় মেয়রের নিজের শর্টগানের গুলিতে নিহত হন। আমরা এ ঘটনার জন্য মেয়রের গ্রেফতার ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
এর আগে, শনিবার সকালে সাংবাদিক শিমুল ও তার নানীর জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। নাতির মৃত্যুর শোক সহ্য করতে না পেরে শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মারা যান শিমুলের ৯০ বছর বয়সী নানী রোকেয়া বেওয়া। ছোটবেলায় বাবাকে হারানোর পর নানীর কাছেই বেড়ে উঠেছিলেন শিমুল।
এদিকে, শিমুলের নিহত হওয়ার ঘটনায় শাহজাদপুরে শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) আধাবেলা হরতাল পালিত হয়। সাংবাদিক শিমুল হত্যা ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া গেছে বিভিন্ন সূত্রে। সাংবাদিক শিমুলের মৃত্যুর পর থেকেই মেয়র মীরু আত্মগোপনে চলে গেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তার বেশির ভাগ সমর্থক ও আত্মীয়স্বজন এলাকা ছাড়া।
উল্লেখ্য, ২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালীন ছবি তুলতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন দৈনিক সমকালের শাহজাদপুর প্রতিনিধি আব্দুল হাকিম শিমুল। এরপর শুক্রবার বগুড়া থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনার পথে দুপুরে তার মৃত্যু হয়। এদিন সন্ধ্যায় খবরটি জেনে মুর্ছা যান তার নানী। পরে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।