DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

সাগর-রুনি হত্যাকান্ডঃ৪৮ ঘন্টা কেনো ৫ বছরেও হলো না বিচার??????

 runi copy

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  মেঘের আছে কান্না। বাবা-মায়ের কথা মনে উঠতেই কান্নায় ছলছল করে ওঠে মেঘের চোখ। আদর-স্নেহ থেকে সে যে বঞ্চিত তা বুঝতে কষ্ট হয় না তার। ঘাতকের হাতে নৃশংসভাবে খুন হওয়া সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির একমাত্র সন্তান মেঘ। সেই মেঘের এখন দিন কাটে চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে। স্বজনদের শত ভালোবাসা এবং স্নেহ মমতাও মেঘের সেই কষ্ট দূর করতে পারছে না।

তাইতো মাঝে মধ্যে স্বজনদের সাথে নিয়ে ছুটে যায় আজিমপুর কবরস্থানে। বাবা-মায়ের কবর চোখে পড়া মাত্র ছুটে দৌড় দেয়। আদরের পরশ পাওয়ার চেষ্টা করে কবরের মাটিতে হাত বুলিয়ে দেয় মেঘ। ওই মাটির সাথেই যেন মিশে আছে বাবা-মা, নয়তো তাদের ছবি নিয়ে কাটে অবসর ।

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও এই দীর্ঘ সময়েও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হয়নি।অবশ্য আগামী ২১ মার্চ এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। ওই দিন তদন্ত কর্মকর্তাকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে তদন্তের অগ্রগতি জানানোর জন্য বলা হয়েছে।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। পরের দিন ভোরে তাঁদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।এ ঘটনায় রুনির ভাই বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন।

সাগর রুনি হত্যার পরপরই ঘটনাস্হল পরিদর্শন করে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ‘স্রেফ ৪৮ ঘণ্টা, এই সময়ের মধ্যেই খুনিরা ধরা পড়বে। খুনের কারণও জানা যাবে।’

runi1 copyঅথচ ৪৮ ঘণ্টার সেই আলটিমেটাম শেষ হলো না ৬০ মাসেও।আর এই সময়ের মধ্যে সরকার বদল হয়েছে একবার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন তিনজন।

এই হত্যাকান্ডের সংগে হাসিনা সরকারে অত্যন্ত ঘনিষ্ট এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ও তার ছোটভাই এবং সাবেক মন্ত্রী কর্নেল(অবঃ)ফারুক খানের মালিকানাধীন সামিট গ্রুপের সংশ্লিষ্টতার কথা শোনা গেলেও আজ পর্যন্ত এদের কাউকেই আমলে নেয়া হয়নি।

এদিকে মামলার পর রুনির কথিত বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আটজনকে আটক করা হয়। বাকিরা হলেন রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর, আবু সাঈদ ও বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির।এর মধ্যে মধ্যে পলাশ রুদ্র পাল ও তানভীর রহমান জামিনে রয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত এ মামলায় তিনজন তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে সাতবার মামলার তদন্তের অগ্রগতির প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি।এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও হাত-পা বাঁধার রশিসহ বিভিন্ন আলামত আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে সন্দেহভাজন ২১ জন এবং গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের ডিএনএ নমুনাও পাঠায় র‍্যাব।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‍্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মহিউদ্দিন আহম্মেদ জানান, এ মামলার তদন্ত চলছে। আমরা এ মামলার প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করছি ও বিদেশ থেকে আসা বিভিন্ন আলামতের রিপোর্ট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে।

এএসপি আরো জানান, আগামী ২১ মার্চ আদালত থেকে আমার কাছে মামলার অগ্রগতি জানতে চাওয়া হয়েছে আমি সে মোতাবেক আদালতে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করব। তবে প্রতিবেদন দাখিলে আরো কিছু সময় লাগবে বলে জানান তিনি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!