ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, পদ্মা সেতুর দুর্নীতি পুরোপুরি সাজানো ছিল। বিশ্বব্যাংক এই ষড়যন্ত্র করেছিল আমার মায়ের বিরুদ্ধে। শনিবার বিকেলে ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি বিশ্বব্যাংক, সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কড়া সমালোচনা করেছেন। এই প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছিল বলে যেসব সমালোচনাকারী সরব হয়েছিলেন, তাঁদের ক্ষমা চাওয়ারও আহ্বান জানান জয়।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের মামলার রায়ে কোনো দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে রায় দেন কানাডার টরোন্টোর এক আদালত। তাই কানাডার মন্ট্রিলভিত্তিক প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের সাবেক তিন কর্মকর্তাকে অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়।
বিষয়টি খতিয়ে দেখে জানা যায়,পন্মা সেতু প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে কানাডার আদালতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনের ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করে কানাডার ফেডারেল পুলিশ আরসিএমপি।এই মামলায় বাংলাদেশ কিংবা বিশ্ব ব্যাংক কেউই বাদী – বিবাদী ছিলোনা।মামলায় শেখ হাসিনা আসামীও ছিলেন না।তাই এই মামলা খরিজের সংগে হাসিনার অভিযোগ থেকে অব্যাহতির প্রশ্নই আসে না।
অথচ এরই প্রেক্ষিতে জয় লিখেন, ‘কানাডার কোর্ট পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলায় প্রকল্পটিতে কোন দুর্নীতির প্রমাণ পায়নি এবং সকল অভিযোগ বাতিল করে দিয়েছে। বিচারক বলেছেন ‘গাল-গল্প ও গুজব’ এর উপর ভিত্তি করে সাক্ষ্য তথ্য সাজানো হয়েছে। অন্য কথায় বলতে গেলে, প্রসিকিউশন মামলা সাজিয়েছিল।
প্রমাণ ছিল বিশ্বব্যাংকের মনগড়া। আমি নিজে এই সাক্ষ্য তথ্যের পুরো উপাখ্যান প্রত্যক্ষ করেছি। এটা পুরোপুরি সাজানো ছিল কারণ এতে সুনির্দিষ্ট কোন বিবরণ ছিল না, শুধু একটি অজ্ঞাত সূত্রের কথা বলা হয়েছে যার পরিচয় প্রকাশিত হয়নি, এমনকি কানাডার আদালতেও নয়। আসলে, বিশ্বব্যাংক আদালতে লড়েছিল এবং আরও তথ্য প্রমাণ না দিয়েই সার্বভৌম অনাক্রম্যতা দাবি করে আসছিল। তাই তারা অভিযোগ দায়ের করেছিল ঠিকই কিন্তু তাদের দাবির স্বপক্ষে কোন প্রমাণ উপস্থাপন করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছিল!
বিশ্বব্যাংক এই ষড়যন্ত্র করেছিল আমার মায়ের বিরুদ্ধে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে, তাঁর সম্মানহানির উদ্দেশ্যে। এরপর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বিশ্বব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছিল পদ্মা সেতুর ফান্ড যেন বাতিল করার মাধ্যমে আমাদের সরকারকে শাস্তি দেয়া হয়। সে তা করেছিল কারণ মুহাম্মদ ইউনূস বারবার তাকে বলছিল আমার মায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।
আমি নিজে এই উপাখ্যানের সময় বেশ কয়েকবার মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে হিলারি ক্লিনটনের তরফ থেকে আমাদের সরকারের প্রতি হুমকি পেয়েছি, যেন ইউনূসকে মোকাবেলা না করা হয়। তার কারণ, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প বন্ধ করতে চেয়েছে যা কিনা কোটি কোটি লোকদের উপকারে আসবে এবং আমাদের দক্ষিণ পশ্চিম অংশের মানুষের জীবন বদলে দিবে। ইউনূস ইচ্ছাকৃতভাবে চেষ্টা করেছে বিদেশি শক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশের ক্ষতি করতে।
এটাও অনেক লজ্জাজনক যে, আমাদের সুশীল সমাজের তথাকথিত একটি অংশ সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বব্যাংকের স্বার্থে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। এরা কিছু অতি সম্মানিত, যোগ্য এবং কঠোর পরিশ্রমী লোকদের সুনাম ক্ষুন্ন করতে কাঁদা ছুড়েছে, সেই সম্মানিত লোকদের অন্যতম আমার মায়ের উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান। বাংলাদেশের বিপক্ষে গিয়ে যারা একটি পক্ষ নিয়েছে, এরা দেশদ্রোহী।
এদের সবার উচিৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর আওয়ামী লীগ সরকার এবং সকল সম্মানিত লোক যাদের তারা আঘাত করেছে তাদের কাছে ক্ষমা।