DMCA.com Protection Status
title="৭

বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় কানাডা

নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী:  মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনয়েট পিয়েরে ল্যারামি।

তার এই বৈঠক নিয়ে নানা মহলে কৌতুহল তৈরি হয়েছে। বৈঠকের বিষয়ে কানাডার হাইকমিশনারের পক্ষ থেকে কিংবা বিএনপির পক্ষ থেকেও কোনোকিছুই জানানো হয়নি। তাছাড়া বৈঠকটি দীর্ঘ দুই ঘণ্টা ধরে অনুষ্ঠিত হওয়ায় ও ওয়ান টু ওয়ান হওয়ার কারণে আগ্রহ আরও বেশি।

প্রথম বাংলাদেশ ডট নেট নামে একটি অনলাইনভিত্তিক নিউজ পোর্টাল লিখেছে, কানাডার হাইকমিশনারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও দেশের রাজনীতি, চলমান পরিস্থিতি ও কানাডার আদালতের পর্যবেক্ষণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার।

সাবেক একজন সেনা কর্মকর্তা ওই রিপোর্ট লিখেছেন ও পদ্মা সেতুর মামলা খারিজ হওয়ার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে বলা হচ্ছে। এই ব্যাপারে বিএনপির তরফ থেকে কিছু বলা হচ্ছে না।

এই বিষয়ের সত্যতা জানতে আমাদের কানাডা প্রতিনিধি মোহম্মদ আলী বুখারী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাকে জানান, তিনি এখন কুমিল্লাতে অবস্থান করছেন। তাই এই ব্যাপারে তিনি বলতে পারবেন না।

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন এর বিশেষ সহকারি শিমুল বিশ্বাসের সঙ্গে আমাদের অর্থনীতি থেকে কানাডার আদালতের পর্যবেক্ষণ ও পদ্মা সেতু প্রকল্পের দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের মামলার খারিজ করার বিষয়ে কথা হয়েছে কি না তা জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেছেন, এই বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। যারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তাদের কেউ বলতে পারেন বলে জানান এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রিয়াজ রহমান ও আসাদুজ্জামান রিপন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এরপর আলোচনা হয়েছে ওয়ান টু ওয়ান।

বৈঠকের ব্যাপারে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈঠকে অনেক বিষয় আলোচনা হয়েছে। যেহেতু কানাডার তরফ থেকে কিছু বলা হয়নি তাই আমরাও বলতে পারছি না।

তবে এইটুকু বলা যায়, কানাডা ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সম্পর্ক আরও কিভাবে জোরালো করা যায়, বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ বাড়ে সেই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

কানাডায় পদ্মা সেতুর দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণ হওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি বলতে পারব না। ওয়ান টু ওয়ান আলোচনা হয়েছে। সেখানে কি কি আলোচনা হয়েছে সেটা আমার পক্ষে বলা সম্ভব না।

মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। দুই ঘণ্টা ব্যাপী এই বৈঠক হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কানাডার হাইকমিশনারের বৈঠকটি একটি রুটিন বৈঠক। এর আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত, ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত, সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এই বৈঠকটি হয়েছে। আগামী দিনে এই ধরনের আরও বৈঠক হবে।

কানাডার হাইকমিশনারের বৈঠকের সময়ে কোন কোন বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়। এছাড়াও এই বৈঠকটি ভিউজ একচেঞ্জও বলা যায়। আমাদের তরফ থেকে আমরা সব বলেছি। তিনিও বলেছেন। এতে করে দুই পক্ষই অনেক বিষয়ে সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে।

আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়, বাণিজ্য বৃদ্ধি, দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব আরও বাড়ানো, দুই পক্ষের মধ্যে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও চলমান রাজনীতি, আগামী নির্বাচন এইসব বিষয়গুলো যেহেতু সাম্প্রতিক সময়ে একটি সমস্যা তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এইসব বিষয়ে সব দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররাই জানার আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

কানাডায় পদ্মা সেতুর দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।

পদ্মা সেতুর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমি বলতে পারব না।

বিএনপিকে কানাডার একটি আদালত সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে এই প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, বিএনপির তরফ থেকে কানাডাকে জানানো হয়েছে, বিএনপি কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন নয়। এটা রাজনৈতিক সংগঠন। বিএনপি ও বিএনপির নেতারা কেউ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে না। বরং দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য ও দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন কূটনীতিকদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করছেন। এরই অংশ হিসেবে আরও অনেক কূটনীতিকের সঙ্গে তার বৈঠক হবে।  সেখানে নির্বাচন-পূর্ববর্তী সহায়ক সরকার, আগামী নির্বাচন ও চলমান রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। এছাড়াও দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

পাশাপাশি বিএনপি ক্ষমতাসীন হলে কি কি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও বাড়বে, বাণিজ্য বাড়বে, একে অপরে সুবিধা পাবে সেই সব বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে। বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়েও অনুরোধ করছেন খালেদা জিয়া। 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!